বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রচনা ১৫ পয়েন্ট
ভূমিকাঃ
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ।এই বাংলার মাটি,বন-বনানী, নদী নালা, খাল বিল, মাঠ ঘাট দেশটিকে এনে দিয়েছে এক বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য এবং অতুলনীয় গৌরব। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতুই যেন প্রত্যেকবার বাংলাদেশকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলে। আবহমান বাংলার এই বিচিত্রর রূপ নিয়ে আর গীতিকাররা রচনা করেছেন অসংখ্য গান, কবিতা, প্রবন্ধ। বাংলার অপরূপ প্রকৃতির রূপ দেখে কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন,
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যায় না আর।
ভৌগলিক সৌন্দর্যঃ
একসময় বাংলাদেশকে বলা হতো সোনার বাংলা। কারণ আমাদের এ বাংলাদেশের মাঠে মাঠে সোনার ফসল ফলে। এদেশের সোনালী আঁশ অর্থাৎ পাট দেশের জন্য এনে দিত সোনালী সম্ভাবনা। শুধু তাই নয় রয়েছে বাংলার মাঠ ভরা সোনালী ধান। এইসব কারণে আমাদের বাংলাকে বলা হতো সোনার বাংলা। বাংলাদেশের এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় বাংলার বাউল, কবি , লেখক ও চিত্রশিল্পীরা। তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথার্থ উচ্চারণ করেছেন যে,
ও আমার দেশের মাটি
তোমার "পরে ঠেকাই মাথা"
বাংলাদেশের প্রকৃতিঃ
সুন্দরবনঃ
সুন্দরবন বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত একটি অভূতপূর্ব প্রাকৃতিক আস্থেতিক অঞ্চল। এটি বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্যজীবন্ত আস্থান হিসাবে পরিচিত। সুন্দরবনের নামের অর্থ 'সুন্দর' এবং 'বন' যুগল শব্দ। এটি একটি বৃহত্তম মঙ্গ্রোভ বন্য এলাকা যেখানে মুখ্যতঃ গহন জলপ্রপাত ও বন্য প্রাণী পাওয়া যায়। আর এই সুন্দরবনে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের জাতীয় পশু।
পাহাড় পর্বতঃ
বাংলাদেশের নদ- নদীঃ
এদেশে প্রকৃতিতে নদ নদী যুক্ত করেছে সৌন্দর্যের নতুন এক মাত্রা। সবুজ প্রকৃতির কোলে জল তরঙ্গে সুর তুলে রূপালী নদী। যা বাংলার মাঝেই বয়ে চলেছে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, সুরমা, মধুমতি, ধলেশ্বরী, ইচ্ছামতি, কর্ণফুলী, বুড়িগঙ্গা, আরো কত মধুর নামের নদীর ধারা বহমান রয়েছে এই বাংলাদেশ।
সমুদ্রঃ
পৃথিবীর সব থেকে বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত হলো কক্সবাজার। আর এ কক্সবাজার কথা বলে মনে পড়ে যায় বিশাল সমুদ্রের কথা। সেই সমুদ্রের বিশাল ঢেউ মুহূর্তের মধ্যেই সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়।শুধু কক্সবাজারে নয় আরো রয়েছে সোনা দিয়া দ্বীপ, সাগরকন্যা, নিঝুম দ্বীপ সহ আরো বিভিন্ন ধরনের দিপ। এছাড়াও বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ হলো সেন্ট মার্টিন। সেই এলাকার মানুষগুলো সাগরের ঢেউয়ের সাথেই বন্ধুত্ব করে বেঁচে থাকে।
ঋতু বৈচিত্র্যঃ
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরা পড়ে ছয়টি ঋতুর বৈচিত্র্যময় স্তম্ভারে। বাংলাদেশ ছয়টি ঋতুতে ছয় বার নতুন রূপে সেজে ওঠে। প্রকৃতি যেন মুগ্ধ হয় বাংলার এই ছয়টি রূপে। প্রতিটি ঋতুই স্বতন্ত্র সৌন্দর্যে অনন্য রূপময়। বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর নাম হলঃ গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ,হেমন্ত, শীত, বসন্ত। বাংলার প্রকৃতির এই যে ছয়টি রূপ রয়েছে প্রত্যেকটিকেই তুলে ধরা হলোঃ
গ্রীষ্মঃ
সুন্দর্যে প্রচন্ড দাবদাহ নিয়ে হানা দেয় গ্রীষ্মকাল। প্রকৃতি তখন প্রচন্ড রৌদ্র। রোদের তাপে ছাতি ফাটা সূর্য উঠে। একটু প্রশান্তির জন্য ছুড়তে হয় ছায়াময় প্রাকৃতির কাছে। এই গ্রীষ্মকালে যেমন রয়েছে প্রচন্ড তাপ তেমনি রয়েছে সুস্বাদু ফল। এই সময় গাছে গাছে শোভা পায় আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি আর বিভিন্ন ধরনের সুমিষ্টি ফল।
বর্ষাঃ
গ্রীষ্ম বিদায় নিতারা নিতে চলে আসে বর্ষা কালো মেঘের ছায়ায় ভাসতে ভাসতে। প্রচন্ড তাপের পর এই বর্ষা প্রকৃতিকে যেন এনে দেয় সতেজ ও সবুজ অনুভূতি। খাল বিল, নদী নালা সবকিছুই পানিতে থৈ থৈ করে। বৃষ্টির অধর ধারা প্লাবিত হয় শ্যামল ভূমিতে।। আর এই সময়ে কৃষ্ণ মেঘে আকাশ ছেয়ে যায়। প্রকৃতিতে ফুটে উঠে, কদম, কেয়া, যুথি ইত্যাদি আর ও বিভিন্ন সৌন্দর ফুল।
শরৎঃ
হেমন্তঃ
শরৎকে বিদায় অভিবাদন জানাতে আসে হেমন্ত। পাকা ধানের গন্ধে মন মাতাল হয়ে ওঠে। প্রতিটি ঘরে ঘরে ওঠে নতুন ধান। নতুন ধরনের খুশিতে সকলে মেতে ওঠে নবান্ন উৎসব। ঠিক এই সময়ে দক্ষিণা বাতাসে ভেসে আসে শীতের আমেজ।রাতের শিশির কণা ভিজে যায় সতেজ ঘাসের ডগা। ভোরের ভেজা ঘাসের ওপর পড়ে থাকে শিউলি ফুল। এ যেন এক অপূর্ব দৃশ্য যা দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় বাংলার প্রকৃতি।
শীতঃ
বসন্তঃ
বসন্ত বাংলা ভাষায় 'বসন্ত' নামে পরিচিত ঋতুটি হলো যা ফাল্গুন ও চৈত্র মাসের মধ্যে পড়ে। এটি বছরের চারটি ঋতুর মধ্যে একটি, যা পূর্বাঞ্চলে উষ্ণ এবং মাত্র উষ্ণাক্ত হয়ে থাকে। বসন্তে পৃথিবী সুন্দর ফুলের সজ্জা পেতে থাকে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চর্চায় আগ্রহ জন্মায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url