এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার
এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেল থেকে জেনে
নিতে পারেন এছাড়া আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব এডিস মশা কোথায় জন্মায়-
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে
পড়েন এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার শুধুমাত্র একটি
পোস্ট থেকে জেনে নিতে পারবেন ।
এই আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু
জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার আর কোন প্রশ্ন থাকবে না।
ভুমিকা
ডেঙ্গু জ্বরে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত, এটি একটি
জটিল এবং গতিশীল স্বাস্থ্য সমস্যা যা গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে
সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
এডিস মশা কোথায় জন্মায়
এডিস মশার কিভাবে জন্ম হয় ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, সাধারণত "ডেঙ্গু" নামে
পরিচিত, মশা দ্বারা ছড়ানো একটি ভাইরাল রোগ যা বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের
জন্য একটি প্রধান উদ্বেগ। ডেঙ্গু ভাইরাস, যা এই সংক্রামক রোগের কারণ হয়,
মূলত এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবোপিকটাস নামে সংক্রামিত এডিস মশার কামড়ে
মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
এডিস মশার কিভাবে জন্ম হয়,এডিস মশার সাধারণত ভেজা এবং শুকনো ছায়াযুক্ত
জায়গায় নিরাপদে বিশ্রাম নেয়। এডিস মশা ছড়ানোর সবথেকে বেশি এবং গুরুত্বপূর্ণ
কারণ হচ্ছে বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি। কারণ এডিস মশা জমে থাকা পানিতে ডিম
পাড়ে। জমে থাকা পানিতে এই ডিম গুলো আস্তে আস্তে ফুটে ধাপে ধাপে পূর্ণাঙ্গ
ডেঙ্গু মশাই পরিণত হয়।এখানে কিছু ডেঙ্গু মশার জন্ম গ্রহণের জায়গা এবং বসবাসের
স্থান বর্ণনা করা হলো। যেমনঃ
- কোন নির্দিষ্ট স্থানে জমে থাকা পানি।
- পুরনো টায়ার।
- ঢাকনা বিহীন পানির ড্রাম বা ব্যারেল।
- ব্যবহার না করা পানির বোতল।
- ফেলে রাখা টিনের কৌটা।
- ফুলের টব।
- ভাঙ্গা ফেলে দাও খেলনা।
- নতুন ভবন তৈরির কাজ চলছে এমন জায়গা।
- বাড়ির ছাদ।
- গাছের ফোকর ও বাঁশ ইত্যাদি।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ:
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ কোনো লক্ষণ দেখা নাও
যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসায় বাড়িতে থেকেই এই রোগ ভালো করা সম্ভব হয়।
শুধুমাত্র বিশেষ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেলে আক্রান্ত রোগীকে হসপিটালে ভর্তি করা
প্রয়োজন হয়। সেই লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে হসপিটালে ভর্তির দুই থেকে এক সপ্তাহের
মধ্যে রোগী ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিচে আমরা উক্ত লক্ষণ গুলো প্রকাশ
করলামঃ
- ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে জ্বর।
- উচ্চ জ্বর ৯৯ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত এই জ্বর হতে পারে।
- ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা করবে।
- তাছাড়া চোখের পেছনে ব্যথা ব্যথা অনুভব হতে পারে।
- মাঝে মাঝে মাংসপেশী এবং অস্থিসন্ধে যন্ত্রণা করবে।
- সব সময় বমি বমি ভাব হবে।
- মাথা ঘুরবে।
- গলা ফুলে যাবে।
- ত্বকের বিভিন্ন স্থানে ফুসকুড়ি দেখা যাবে।
ডেঙ্গু জ্বরে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলঃ
- ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রচন্ড পেট ব্যাথা হবে।
- ক্রমাগত বমি হতে থাকবে।
- প্রসাদ বা পায়খানার সাথে রক্তপাত হবে।
- ত্বকের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের মত দেখা দিবে।
- স্বাভাবিকের চাইতে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করবে।
- শরীরের সব সময় ক্লান্তি অনুভব করবে।
- সব সময় বিরক্তি এবং অস্থিরতা দেখা দিবে।
ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণু মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ এর সাথে অনেক
জীবাণু থাকে এই জীবাণুগুলো মানুষের রক্তনালিতে ছিদ্র তৈরি করে। ফলে মানুষের
রক্তনালীর মধ্যে বরাহের ক্লট তৈরি হয় এবং কোষের সংখ্যা কমে যেতে থাকে। যার ফলে
বিভিন্ন রকমের প্রতিকার দেখা যায় যেমন শরীরে শখ লাগা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে খতর
তৈরি এবং রক্তপাত, শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি এবং শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
কাজেই আলোচিত লক্ষণ গুলোর কোন একটি রোগীর মধ্যে দেখা গেলে যত দ্রুত সম্ভব
ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
শহরে ডেঙ্গু জ্বরের কারণ:
শহরাঞ্চলে ডেঙ্গু জ্বরের কারণ প্রাথমিকভাবে এডিস ইজিপ্টি মশার উপস্থিতির
সাথে যুক্ত, যা ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের জন্য দায়ী ভেক্টর হিসেবে কাজ করে।
শহরগুলিতে ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারে বেশ কয়েকটি কারণ অবদান রাখে:
মশার প্রজনন স্থান: এডিস মশা, বিশেষ করে এডিস ইজিপ্টি, শহুরে পরিবেশে
বৃদ্ধি পায় যেখানে তারা সহজেই প্রজনন স্থান খুঁজে পায়। শহরগুলিতে
দাঁড়িয়ে থাকা জলের সাধারণ উত্স, যেমন আটকে থাকা ড্রেন, ফেলে দেওয়া পাত্র
এবং ভুলভাবে সঞ্চিত জল সংরক্ষণের পাত্রগুলি এই মশার জন্য আদর্শ প্রজনন
আবাসস্থল সরবরাহ করে।
নগরায়ন: দ্রুত নগরায়ন প্রায়ই জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃদ্ধি, নির্মাণ কার্যক্রম
এবং অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে পরিচালিত করে। এই কারণগুলি জল
ভর্তি পাত্রে এবং ধ্বংসাবশেষ জমা করার জন্য আরও সুযোগ তৈরি করে, যা মশার
প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
জলবায়ু এবং তাপমাত্রা: শহুরে তাপ দ্বীপের প্রভাবের কারণে শহরগুলির
তাপমাত্রা বেশি থাকে। এডিস মশা উষ্ণ জলবায়ু পছন্দ করে এবং এই তাপমাত্রা
বৃদ্ধি তাদের সক্রিয় ঋতু প্রসারিত করতে পারে, শহরগুলিতে তাদের আরও বেশি
করে তোলে।
ভ্রমণ এবং স্থানান্তর: লোকেরা প্রায়শই শহরের মধ্যে এবং বাইরে ভ্রমণ করে,
সম্ভাব্যভাবে ডেঙ্গু ভাইরাসকে নতুন এলাকায় প্রবর্তন করে। ভাইরাস বহনকারী
সংক্রামিত ব্যক্তিদের শহরে এডিস মশা কামড়াতে পারে, যা স্থানীয় সংক্রমণের
দিকে পরিচালিত করে।
কার্যকর মশা নিয়ন্ত্রণের অভাব: ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলিতে, মশার জনসংখ্যা
নিয়ন্ত্রণ করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। অপর্যাপ্ত সম্পদ, অবকাঠামো এবং
জনসচেতনতা কার্যকর মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
শহুরে এলাকায় ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বহুমুখী
পদ্ধতির প্রয়োজন যার মধ্যে রয়েছে প্রজনন স্থান নির্মূল করা, বর্জ্য
ব্যবস্থাপনার উন্নতি করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, এবং কীটনাশক স্প্রে করা
এবং মশারি ব্যবহার করার মতো ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।
নগর সরকার এবং জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলি শহুরে জনসংখ্যার উপর এর প্রভাব কমাতে
ডেঙ্গু জ্বরের কারণগুলি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডেঙ্গু জ্বর গ্রামীণ গ্রামগুলিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, এবং এই ধরনের রোগের
কারণগুলি শহরাঞ্চল থেকে কিছু উপায়ে আলাদা:
জল সঞ্চয়ের পদ্ধতি: অনেক গ্রামে, জল সঞ্চয় একটি সাধারণ অভ্যাস, প্রায়ই
খোলা পাত্র বা মাটির পাত্র ব্যবহার করে। এই পাত্রগুলি এডিস মশার প্রজননস্থল
হয়ে উঠতে পারে, কারণ তারা স্থির জল সরবরাহ করে যেখানে এই পোকামাকড় তাদের
ডিম দিতে পারে।
সীমিত অবকাঠামো: গ্রামীণ এলাকায় যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
ব্যবস্থার অভাব থাকতে পারে। এর ফলে পরিত্যক্ত পাত্র, টায়ার এবং বৃষ্টির
পানি সংগ্রহকারী অন্যান্য আইটেম জমা হতে পারে, যা এডিস মশার জন্য অতিরিক্ত
প্রজনন স্থান তৈরি করে।
কৃষি পদ্ধতি: গ্রামীণ পরিবেশে, কৃষি অনেক মানুষের জন্য একটি প্রধান জীবিকা।
ধানের ক্ষেত, আবাদ এবং অন্যান্য কৃষি কর্মকাণ্ডে প্রায়ই জলের জলাধার এবং
সেচ ব্যবস্থার ব্যবহার জড়িত থাকে যা সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে মশার
লার্ভাকে আশ্রয় দিতে পারে।
আউটডোর এক্সপোজার: গ্রামের লোকেরা বাইরে বেশি সময় কাটাতে পারে, মশার
কামড়ে তাদের এক্সপোজার বাড়িয়ে দেয়। খোলা জানালা এবং দরজা আছে বা মশার
পর্দা ছাড়া বাড়িতে এডিস মশা প্রবেশ করতে দেয়, সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্বাস্থ্যসেবার সীমিত অ্যাক্সেস: গ্রামগুলিতে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার সীমিত
অ্যাক্সেস থাকতে পারে, যা ডেঙ্গু রোগের প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং
চিকিত্সাকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তোলে। এর ফলে আরও গুরুতর ক্ষেত্রে এবং
জটিলতা দেখা দিতে পারে।
গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সঠিক জল সঞ্চয়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং
মশারি ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে সম্প্রদায় শিক্ষা জড়িত। উপরন্তু,
কীটনাশক স্প্রে এবং লার্ভা উৎস হ্রাসের মতো ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা
অপরিহার্য। গ্রামীণ গ্রামে ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব কমাতেও উন্নত
স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস এবং প্রাথমিক রোগ নির্ণয় একটি গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে।
ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার
ডেঙ্গু জ্বরের বিশেষ কোনো চিকিৎসা বা বিশেষ কোনো ঔষধ এখন অবদি আবিষ্কার হয়নি।
গবেষকরা ডেঙ্গু জ্বরের ঔষধ আবিষ্কার করার কাজ করে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা
প্যারাসিটামল এবং জ্বরের ভালো ওষুধ দিয়ে জল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।
আক্রান্ত রোগীর যদি রক্ত ক্ষরণ মাত্রা বেশি হয় তাহলে রবিতে হাসপাতালে ডাক্তারের
নজরদারিতে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির
শিরার মধ্যে ইলেকট্রোলাইট লবণ তরল দেওয়া হয়। যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে
প্রয়োজনীয় জল এবং লবণের তীব্রতা বজায় থাকে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কিছু বিশেষ পুষ্টি উপাদানের তালিকা এখানে দেওয়া হলঃ
- আক্রান্ত রোগীকে ভিটামিন সি জাতীয় ফল শাকসবজি দিতে হবে।
- জিংক যুক্ত উপাদান রয়েছে এমন খাবার যেমন সামুদ্রিক খাবার, মটরশুঁটি এবং বাদাম দিতে হবে।
- মাংস মটরশুঁটি এগুলোতে আয়রন থাকে এই আয়রন যুক্ত খাবারও দিতে হবে।
- ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পেঁপে খাওয়াতে হবে।
- আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পরিমাণে নারিকেলের পানি খাওয়াতে হবে।
- এসব কিছুর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হবে যার ফলে শরীরে হাইড্রেট বজায় থাকবে।
ডেঙ্গু জ্বর হলে যে সকল খাবার খাওয়া যাবেনাঃ
- ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আমিষ জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হব।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
- তেল যুক্ত খাবার গ্রহণ করা যাবে না।
- ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের ঘরোয়া প্রতিকার
ডেঙ্গু জ্বরের ঘরোয়া প্রতিকার ডেঙ্গুজ্বর থেকে বাঁচার জন্য আমরা ঘরোয়াভাবে কিছু
প্রতিকার বা প্রতিরোধ গ্রহণ করতে পারি সেগুলো হল।
- ডেঙ্গু রোগটি যেহেতু মশার মাধ্যমে ছড়ায়। তাই আমাদের পরিবারকে অবশ্যই এই মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে।
- বাড়ির আশেপাশে জল জমতে পারে এমন জায়গা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যেমনঃ অব্যবহারিত টায়ার, গাছের টব, নারিকেলের ছোবড়া, ফুলদানি, প্লাস্টিকের বোত্ টিনের কৌটা ইত্যাদি।
- পরিবারের সকলকে অবশ্যই লম্বা হাতওয়ালা জামা প্যান্ট মোজা এবং জুতা পরিধান করতে হবে।
- রাতে শোবার আগে মশা মারার কয়েল জ্বালাতে হবে।
- রাতে শোবার সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে।
- সন্ধ্যার সময় যেহেতু মশার আক্রমণ বৃদ্ধি পায় কাজেই সন্ধ্যার সময় বাইরে থাকা যাবে না।
- মশা নিরোধক বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হবে যার ফলে ডেঙ্গু মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
এডিস মশার জীবন চক্র
এডিস মশা, ডেঙ্গু, জিকা এবং চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের সংক্রমণে তাদের ভূমিকার
জন্য পরিচিত, তাদের একটি আকর্ষণীয় জীবনচক্র রয়েছে যা বিকাশের চারটি স্বতন্ত্র
পর্যায় জড়িত। এই পর্যায়গুলি হল: ডিম, লার্ভা, পিউপা এবং প্রাপ্তবয়স্ক। এডিস
মশা কিভাবে জন্মায় তা বোঝার জন্য এই জীবনচক্রের অন্বেষণ জড়িত।
ডিমের পর্যায়:
এডিস মশা ডিম হিসেবে তাদের জীবনচক্র শুরু করে। স্ত্রী এডিস মশা সাধারণত ছোট
পাত্রে বা প্রাকৃতিক জলের উৎস যেমন ফুলের পাত্র, ফেলে দেওয়া টায়ার বা এমনকি
গাছের গর্তে ডিম পাড়ে। এই ডিমগুলি জলরেখার উপরে রাখা হয়, পাত্রের পৃষ্ঠের
সাথে সংযুক্ত থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শুকিয়ে যাওয়া সহ্য করতে
পারে।
লার্ভা পর্যায়:
যখন পরিবেশ অনুকূলে থাকে, তখন ডিম থেকে লার্ভা হয়। পানিতে তাদের স্বতন্ত্র
নড়বড়ে চলাচলের কারণে এই লার্ভাগুলিকে সাধারণত "রিগলার" বলা হয়। এডিস মশার
লার্ভা একটি টিউব-সদৃশ কাঠামোর মাধ্যমে শ্বাস নেয় যা একটি সাইফন নামে পরিচিত,
যা তারা জলের পৃষ্ঠে বাতাসে প্রবেশ করতে ব্যবহার করে।
পিউপা স্টেজ:
লার্ভা স্টেজের পর এডিস মশা পিউপাতে রূপান্তরিত হয়। এই পর্যায়ে, তাদের
প্রায়শই "টাম্বলার" বলা হয় কারণ তারা যখন বিরক্ত হয় তখন তারা গড়াগড়ি করে।
পিউপা খাবার দেয় না এবং তাদের বেশিরভাগ সময় জলের পৃষ্ঠে ব্যয় করে। তাদের
শ্বাসযন্ত্রের ট্রাম্পেট রয়েছে যা তারা বায়ু শ্বাস নিতে ব্যবহার করে।
পপ্রাপ্তবয়স্ক পর্যায়:
পিউপাল পর্যায় সম্পূর্ণ হলে, প্রাপ্তবয়স্ক এডিস মশা উদ্ভূত হয়। তারা পিউপাল
এক্সোস্কেলটন থেকে মুক্ত হয় এবং তাদের ডানা প্রসারিত হয়, যা তাদের বাতাসে
নিয়ে যেতে দেয়। প্রাপ্তবয়স্ক মহিলারা হোস্টের রক্তে খাদ্য গ্রহণ করে, যা
তাদের ডিমের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। অন্যদিকে পুরুষ এডিস মশা প্রাথমিকভাবে
অমৃত খায়।
এডিস মশা সর্বোত্তম পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহের কম সময়ে তাদের সমগ্র জীবনচক্র
সম্পূর্ণ করতে পারে, যা তাদের প্রজননকারী করে তোলে। কার্যকরী মশা নিয়ন্ত্রণ
কৌশলগুলি প্রায়শই প্রজনন স্থানগুলিকে নির্মূল করাকে লক্ষ্য করে, যেমন তারা
যেখানে ডিম দেয় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা জল অপসারণ করা। এটি এডিস মশার জনসংখ্যা
কমাতে সাহায্য করে এবং তারা মানুষের মধ্যে সংক্রমণ করতে পারে এমন রোগের ঝুঁকি
কমায়। সফল মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন এবং এই রোগ ভেক্টরের প্রভাব
কমানোর জন্য তাদের জীবনচক্র বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ কথা:এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার
পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার
জানতে পারলেন । মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি আপনার কোন সমস্যা হওয়ার
কথা না এডিস মশা কোথায় জন্মায়- ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে
পারলেন । আপনাদের যদি এই পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে
শেয়ার করবেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url