ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রয়েছে হজ। যাদের হজ করার সামর্থ্য রয়েছে তাদের জন্য হজ করা ফরজ। হজ করা যেমন ফরজ এর তেমন বিভিন্ন ফজিলত রয়েছে। এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি বায়াতুল্লাহ জিয়ারতে এসে কোন অশ্লীল কাজ করলো না, আল্লাহর অপছন্দনীয় কোন কাজে লিপ্ত হলো না, সে গুনাহ বা পাপ থেকে এমনভাবে পবিত্র হয়েছিল যেমন সে পবিত্র ছিল সেদিন, যেদিন সে জন্মগ্রহণ করেছে ছিল(বুখারী ও মুসলিম)"
তাহলে চলুন এই পর্বে আমরা জেনে নেই ওমরা হজের ফরজ কয়টি এবং ওমরা হজের দোয়া সম্পর্কে। হজে মাবরুরের(মাকবুল) প্রতিদান হচ্ছে একমাত্র জান্নাত" যে মুসলমানদের ওপর হজ্ব ফরজ তাদের উচিত খুশি মনে হজ পালন করা।
ওমরা হজের ফরজ কয়টি
সুপ্রিয় পাঠাক আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন ওমরা হজের ফরজ কয়টি। আপনি যদি না জেনে থাকেন ওমরা হজের খরচ কয়টি তাহলে আজকের এই পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ওমরা হজর ফরজ কয়টি। ওমরা হজের ফরজ দুইটি এক নম্বর এহরাম পরিধান করা এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে কাবা ঘর তাওয়াফ করা।
হজ কিঃ
হজ হল আরবি শব্দ। আর এর অভিধানের অর্থ সংকল্প করা, ইচ্ছা করা ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় নির্দিষ্ট দীনেশ সমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আল্লাহর নৈকট ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে পবিত্র কাবা ঘরে সেই স্থানগুলো বিশেষ কার্যাদেশ সম্পাদন করাকে মূলত হজ বলে। হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক শারীরিক ইবাদত। থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত হজের কার্যাবলী হয়ে থাকে।
প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধিমান সেই সঙ্গে সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ আদায় করা ফরজ। এরপরে যতবার হজ করা হবে সেগুলো নফল হিসেবে গণ্য করা হবে। এই নফল হজেরও কিন্তু অনেক সওয়াব রয়েছে। হদ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছ্ আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই জায়গায় হজ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য।(সূরা আলে-ইমরান, আয়াত ৯৭)
যেসব লোক কাবা ঘর পর্যন্ত যাতায়াতের দৈহিক ক্ষমতা রাখে এবং হজ থেকে ফিরে আসা অব্দি পরিবারের ব্যয় বাদে যাতায়াতের খরচ বহন করতে সক্ষম তার জন্য হজ ফরজ। তাই একমাত্র যাদের এই খরচ বহন করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের জন্যই ফরজ। অন্যান্য কোন ব্যক্তিদের জন্য হজ করা ফরজ হবেনা।
তিনি যদি মহিলা একজন সঙ্গী নিয়ে যেতে হবে। তার যদি বিয়ে হয়ে যায় তাহলে স্বামীর সঙ্গে যেতে হবে, আর না হলে এমন কোন একটা মানুষের সাথে যেতে হবে যার সাথে বিবাহ সম্পর্ক হারাম। যেমনঃ বাবা, চাচা, মামা, ভাই ইত্যাদি। আর সেই আর সেই স্বাক্ষর সঙ্গে ব্যয়ভার সে মহিলাকেই নিতে হবে।
হজের ঐতিহাসিক পটভূমিঃ
ইসলামের মধ্যে সালাত অন্যতম। সালাত আদায় করা হয় আল্লাহ তাআলার অনুগত প্রকাশ করার জন্য। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম ইবাদতের ঘর তৈরি করা হয়। যার নামকরণ করা হয় বায়াতুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর। কিন্তু কোন এক কারক্রমে এই পবিত্র ইবাদতের ঘর জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে।
এটি প্রায় ৪ হাজার বছর আগের কথা। ইরাকে জন্ম নেওয়া আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল্লাহর আদেশে বিবি হাজেরা ও শিশু পুত্র ইসমাইল পবিত্র কাবাঘরের নিকটবর্তী শূন্যস্থানে রেখে চলে যান চলে যান। তিনি বিবি হাজেরা স্বামীকে লক্ষ্য করে বললেন, আমাদের এমন মোর প্রান্তরে ফেলে রেখে কেন চলে যাচ্ছেন? উত্তরে ইব্রাহিম আলী ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা এমনটি করতে আমিনীর দেশ দিয়েছেন।
তখন বিবি হাজেরা বলেন, তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় পূর্ণ হোক। তিনি অবশ্যই আমাদের বাঁচিয়ে রাখবেন। হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম যাওয়ার সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করে বললেন, হে প্রতিপালক! আমি আমার বংশের কতককে কত বসবাস করলাম অনুবর উপত্যকায় তোমার পবিত্র ঘরের নিকটে।
হে প্রতিপালক, এই জন্য তারা যেন সালাত কায়েম করে। অথএব তুমি কিছু লোকের অন্তর তাদের অনুরাগী করে দাও এবং ফল ফলাদি তারা তাদের রিজিকের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেন তারা তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করে।(সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ৩৭)।নবী ইব্রাহীম আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রার্থনা আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন।
হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর রেখে যাওয়া সামান্য খাদ্য ও পানি ও কয়েকদিনের মধ্যে ফুরিয়ে গেল। মা ও শিশু পুত্র খুদা ও পিপাসায় কাতর হয়ে যায়। পাহাড়ের উঠে চারিদিকে তাকিয়ে আবার মারওয়া পাহাড়ের চূড়ায় চারিদিকে তাকান, কিন্তু কোথাও কোন কাফেলা দেখা যায় না। কাফেলা দের দেখা গেলে তাদের কাছ থেকে সামান্য পানি নিয়ে নিজে এবং পুত্রের পিপাসা দূর করতো।
এভাবে শাখা ও মারওয়া পাহাড়ে তিনি সাতবার দৌড়াদৌড়ি করেন। এ কারণেই মূলত সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করতে হয় হাজীগণদের । তিনি কোথাও কোন পানির হদিশ পেলেন না। তিনি যখন সন্তানের কাছে ফিরে আসেন তখন বিস্মিত হয়ে দেখলেন, নিকটে মাটি খুঁড়ে স্বচ্ছ পানি বের হয়ে আসছে। আর এই পানি ছিল বিখ্যাত জমজম কূপের উৎস।
এরপর তিনি এবং তার পুত্র পিপাসা দূর করলেন। এরপর তিনি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন। মরুভূমিতে যেখানে পানি থাকে তার চারিপাশে পাখি ওড়ে। এই জিনিসটি দূর থেকে কাফেলারা খেয়াল করেন এবং সেখানে চলে আসেন। বংশের এক বাণিজ্য কাফেলা এসে মা হাজেরার অনুমতি নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করল। এভাবেই সেখানে ধীরে ধীরে লোক জমা হতে থাকে। এরপর থেকে মক্কা ধীরে ধীরে জনপদে পরিণত হয়।
এ রকমের অনেক কঠিন পরীক্ষা দিয়েছিলেন ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম। তেমনই একদিন অগ্নি পরীক্ষার সম্মুখীন হলেন ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম। আল্লাহ তা'আলা নির্দেশে তিনি তার পুত্রকে কুরবানী করতে প্রস্তুত হলেন। আল্লাহ তাআলা তার এই কাজে অনেক খুশি হন এবং তার পুত্রের জায়গায় দুম্বা রেখে দেন। আর এরপর থেকে মূলত কুরবানী প্রথা শুরু হয়েছিল ইসলামে।
এরপর আল্লাহ তাআলা ইব্রাহিম আলাইহি সাল্লামকে কাবাঘরের স্থানটি দেখিয়ে তা পুনর্নির্মাণ করার আদেশ দিলেন। হযরত ইব্রাহিম আলাই সালাম তার পুত্র ইসমাইলকে সাথে নিয়ে পবিত্র কাবা ঘর নির্মাণ করলেন। এরপর হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর আহবানে কাবা শরীফ পরিপূর্ণ হয়ে গেলো। আর এরপর থেকে হজ চালু হয়।
হজ কত ধরনের হয়ঃ
হজেরও বিভিন্ন ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে। হজকে মোট তিন ভাবে আদায় করা যায়। তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ।
১। তামাত্তু হজ
হজের মাস গুলোতে হজের সফরে বের হওয়ার পর প্রথমে শুধু ওমরা এর ইহরাম বাধা হয় এবং ওমরা করে সম্পূর্ণ হালাল হয়ে যাওয়া। এরপর আটই জিলহজ তারিখে হজের ইহরাম বেদে হজের যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করাকেই মূলত তামাত্তু হজ বলে।
তামাত্তু হজের নিয়মঃ
হজ পালনকারী হজের মাসগুলোতে প্রথমে শুধু ওমরাহ এর জন্য তালবিয়া পাঠের মাধ্যমে ইহারাম বাঁধতে হবে। এরপর তাওয়াফ ও সাই সম্পূর্ণ করতে হবে। তাই সম্পূর্ণ করা হলে মাথা মুন্ডন অথবা চুল ছোট করার মাধ্যমে ওমরা পালন সম্পূর্ণ করে ইমরান থেকে হালাল হয়ে যাবেন এবং স্বাভাবিক কাপড় পড়ে নেবেন। অবস্থায় হারাম কাজগুলো তার জন্য হালাল হয়ে যাবে। তারপর জিলহজ মাসের আট তারিখ মিনায় যাবার আগে নিজ অবস্থানস্থল থেকে হজের ইহরাম বাঁধবেন।
কিরান হজঃ
এক সফর ও এক ইহরামে ওমরাহ ও হজ আদায় করাকে কিরান হজ বলে। অর্থাৎ হজের সফরে ইহরাম বেদে প্রথমে ওমরা আদায় করা এবং ওই ইহরাম থেকে হজে নির্ধারিত দিনে হজের কার্যাবলী সম্পূর্ণ করাকে কিরান হজ বলে।
কিরান হজ করার নিয়ম
মেকাত থেকে ইহরাম বাধার সময় একই সঙ্গে হজ ও ওমরার জন্য(লাব্বাইকা ওমরা তান ওয়স হাজ্জান) বলে তালবিয়া পাঠ করা শুরু করুন। তারপর মক্কায় পৌঁছে প্রথমে ওমরা আদায় করা এবং ইহরাম অবস্থায় মক্কায় অবস্থান করা। অতএব পর হজের সময় ৮ই জিলহজ ইহরামসহ মিনা-আরাফা-আলী ভাই গমন এবং হজের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করা। কিরান হজকারির জন্য এক সফরের দুইটি ইবাদতের সুযোগ লাভের শুকরিয়া স্বরূপ হাদি বা পশু জবেহ করা ওয়াজিব।
ইফরাদ হজঃ
হজের মাসগুলোতে শুধু হজের ইহরাম বেদে হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করা কেই ইফরাদ হজ বলে।
ইফরাদ হজের নিয়ম
হজের মাসগুলোতে শুধু হজের ইউরাম বাধার জন্য(লাব্বাইকা হাজ্জান)বলে তালবিয়া পাঠ করতে হয়। এরপর মক্কায় প্রবেশ করে তাওয়াফে কুদুম অর্থাৎ আগমনী তাপ এবং হজের জন্য সাই করতে হয়। অতএব পর দশই জিলহজ কোরবানির দিন হালাল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকা। এরপর হজের অবশিষ্ট কাজগুলো সম্পাদন করা।
হজ পালনের নিয়ম
ইসলামের প্রতিটি কাজ নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আদায় করতে হয়। তেমনি হজেরও একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। আর সে পদ্ধতিতে হজ পালন করতে হয়। তাহলে চলুন জেনে নিই হজ পালন করার নিয়মাবলী গুলো।
ইহরাম
নামাজের উদ্দেশ্যে যেমন তাহরিমা বাঁধতে হয় তেমনি হজের উদ্দেশ্যে ও ইহরাম বাঁধতে হয়। আর এটি একটি হজের আনুষ্ঠানিক নিয়ত। শাওয়াল মাসে প্রথম তারিখ থেকে জিলহজ মাসে ৯ তারিখ পর্যন্ত যে কোন দিনে ইমরাম বাধা যায়। এই সময় ছাড়া অন্য কোন সময় কিন্তু ইহ নাম বাধা যাবে না। ইমরানের পোশাক পড়ে কিবলামুখী হয়ে সরবে তাহলিমা পাঠ করতে হয়। হজ মৌসুম ছাড়া অন্য কোন সময় যদি কেউ কাবা ঘরের জিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসে তাকেও ই হরি মা বাধার স্থানে পৌঁছে ওরা বাঁধতে হবে। ইহরাম মিকাতে বাধা হয়।
তাওয়াফে কুদুম
ইহরাম বাধার পর মক্কাতে এসে কাবা শরীফ কে তাওয়াফ করতে হয়। আর এই তাওয়াফ কে আগমনী তাবাব বলে। কারণ এটি কাবা শরীফে আসার পর প্রথম তাওয়াফ। তাওয়াফ করা কে বোঝায় মূলত সাতবার কাবা শরীফের চারপাশে ঘোরা।
সাই
আগমনী তাওয়াফ শেষ করে কাবা ঘরের অনতিদুরে অবস্থিত সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানের পথটি সাতবার অতিক্রম করতে হয়। আর একে মূলত সাই বলা হয়। এরপর ইহরাম অবস্থায় জিলহজ মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এর মধ্যে যতবার ইচ্ছা ততবার তাওয়াফ করা যায় তবে এগুলোকে নফল তা হিসেবে গণ্য করা হয়। আর এই নফল তাওফদের অনেক সওয়াব রয়েছে।
৭ই জিলহজ
এই তারিখে জোহরের নামাজ পড়ে ইমাম খুতবা দেন। আর এই খুতবায় জানা যায় যে পরবর্তী হজে কি কি নিয়মাবলী পালন করতে হবে।
৮ই জিলহজ
এই তারিখে হাজিগঞ্জ সূর্যোদয়ের পর মিনায় আসেন। আর মিনায় আসার পূর্বে তারা সুন্নত গোসল করে ইহরামের চাদর পড়ে বায়তুল শরীফে আসেন। করতে করতে মিনায় যেতে হয়। মিনাতে পরের দিন পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা সুন্নত।
৯ই জিলহজ
নবম তারিখ হল আরাফার দিবস। এদিন সকালে আরাফায় অবস্থানের জন্য মিনায় ফজরের নামাজ পড়ে আরাফার ময়দানের দিকে রওনা করতে হয়। এখানে ইমামের পিছনে জোহরের ওয়াক্তে একসঙ্গে জোহর ও আসর নামাজ পড়ে নিতে হয়। নামাজের পূর্বে ইমাম খুতবা দেন এবং সেখানে সব নিয়মাবলী গুলো বর্ণনা করে দেন। আরাফার ময়দানে অবস্থান করা হজের অন্যতম একটি ফরজ কাজ। করলে হজ হবে না। এরপর সূর্যাস্তের পরম মুহূর্তে আরাফার ময়দান থেকে মুজদালিফার দিকে রওনা দিতে হবে। মুজদালিফা পৌঁছছে এশার নামাজের সময় পয়সা একসঙ্গে আদায় করে নিতে হয়।
১০ই জিলহজ
দশম দিন হচ্ছে কোরবানির দিন। হাজিগঞ্জ মিনার পথে রওনা দেন। মিনায় এসে শয়তানের পথিকৃত্তির তিনটি স্তম্ভের ওপর পাথর নিক্ষেপ করেন। আর সে পাথরগুলো হয় ছোলা পরিমান। হযরত ইব্রাহিম আলাই সালাম যখন আল্লাহর নির্দেশে তার পুত্র ইসমাইলকে কুরবানী করতে যাচ্ছিলেন তখন শয়তানেরা তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। আর সে মুহূর্তে তারা রাগান্বিত হয়ে শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর নিক্ষেপ করেন।
আর তাই আল্লাহর প্রতি তাদের ভালোবাসার প্রতি সম্মান দেখিয়ে হাজীগণ ও পাথর নিক্ষেপ করেন। আর এরপরে কুরবানী করতে হয়। কুরবানী করার পর হাজীগণ মাথা কামিয়ে ইউরান থেকে মুক্ত হন। চুল ছোট করলেও হবে তবে সমস্ত চোর একই সমান হতে হয়। আর মহিলাদের চুলের অগ্রভাগের কিছুটা অংশ কাটলেই হয়। এরপরে মক্কায় ফিরে এসে তাওয়াফ করতে হয়। আর এটিকে তাওয়াফ জিয়ারত বলে। এটি হজের একটি ফরজ কাজ।
হজের ত্রুটি কিভাবে সংশোধন করেঃ
হজ পালন করে অনিচ্ছায় অনেক ত্রুটি হয়ে থাকে। যার ফলে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটতে পারে। এই ত্রুটি কোনোটি গুরুত্ব আবার কোনটির সাধারণ পর্যায় হয়ে থাকে। হজের ওয়াজিব পালনে ধারাবাহিকতায় ব্যতিক্রম ঘটলে দম ওয়াজিব হয়। যেমনঃ মাথামন্ডলের পূর্বে শয়তানকে কখন নিক্ষেপ করা। আর দম হচ্ছে একটি ছাগল ,ভেড়া অথবা দুম্বা হতে পারে। আবার উট, মহিষ কিংবা গরু হয়ে থাকলে সাত জন মিলে কোরবানি দেওয়া যায়। আর সাধারণভাবে ইহরামের অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজগুলো করলে কুরবানী অর্থাৎ দম দিতে হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে সাদাকা দিতে হয়।
হজের তাৎপর্যঃ
ইসলামের পাঁচটি দম্ভের মধ্যে হজ হলো পঞ্চম স্তম্ভ। সারাবিশ্বের মুসলিম জাতির মহা সম্মেলনের জায়গা এটি। বিশ্বের সকল মানুষ যে এক নবীর উম্মত, হজমসনের মক্কায় এর বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়। পৃথিবীর সকল দেশের মুসলমানগন আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে আসেন নির্দিষ্ট দিনগুলোতে মক্কায় একত্র হয়। সম্মিলিতভাবে এই অনুষ্ঠানগুলো পালন করা হয়।
সকলের ধর্ম এক, উদ্দেশ্য এক, কর্মসূচিও একই। সকলের পরিধানে একই ইহরামের সাদা কাপড়। ভাষা, বর্ণ, জীবন পদ্ধতির ভিন্নতা শর্ত তারা সকলে একই ধরনের উচ্চারণে একাকার হয়ে যায়। সকলের হৃদয়ে এক আল্লাহর নাম। পৃথিবীর সব জায়গার লোক পরস্পরের সাথে মিলনের সুযোগ পায়। এভাবে হাত সারা বিশ্বের মুসলমানকে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব বাধনে আবদ্ধ করে ।
প্রতিবছর হাজীদের হজে গমন ও প্রত্যাবর্তনের ফলে মুসলিম জাহানের প্রত্যেক অঞ্চলে মুসলমানের প্রাণে এক অভিনব আলোড়ন সৃষ্টি করে। ইসলামে প্রাণচঞ্চল্য পরিবেশ বজায় রাখার জন্য হজের যে এক বিরাট অবদান আছে এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url