সুস্থ জীবন যাপন করার সাতটি অভ্যাস

আমরা প্রত্যেকেই চাই একটি সুস্থ জীবন। সুস্থ জীবন যাপনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের জীবনে সফলতা আনতে পারব। কারণ কাজ করতে হলে, অবশ্যই আমাদের সুস্থ থাকতে হবে। আর আমাদের সুস্থ না থাকি তাহলে, কাজ করবো কিভাবে। আর যদি কাজই না করতে পারি তাহলে জীবনে সফল হবো কিভাবে। তাই সফল হওয়ার জন্য, গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো সুস্থ জীবন যাপন।

সুস্থ জীবন যাপন করার সাতটি অভ্যাস


সুস্থ জীবন যাপন মানে যে শুধু শরীরকে পিঠ রাখা তা কিন্তু নয়। কারণ আমাদের মাঝে এমন অনেক মানুষ আছে যারা অনেক হার্ড ওয়ার্কিং। তারা এতটাই হার্ড ওয়ার্ক করে যে, কাজের ফাঁকে তাদের নিজেকে দেওয়ার কোন টাইম থাকে না। এটাকে কি সুস্থ জীবন যাপন করা বলে, কখনোই না। কাজের ফাঁকে আমাদের নিজেরও কিছু সময় দেওয়া প্রয়োজন। যে সময়গুলোতে, আমরা পরিবারের সাথে থাকতে পারি কিংবা নিজেকে খুশি করার জন্য কিছু কাজ করতে পারে।

ভূমিকা

কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজেকে সময় দেওয়া প্রয়োজন কারণ, একটা সময় আসবে যখন আপনি সফল ব্যক্তি হয়ে যাবেন। কিন্তু নিজেকে খুশি কিংবা মজা করার জন্য সে বয়স আপনার আর থাকবে না। আমাদের জীবনটা খুব ছোট। তাই জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের জীবনকে সফল করার পাশাপাশি, সুস্থ জীবন যাপনও করতে হবে। 

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা, সময় ব্যয় করে। আবার অনেকেই আছে যারা অতিরিক্ত খাবার খায়, অতিরিক্ত ঘুমায় বিভিন্ন ধরনের কাজ। তারাও কিন্তু সুস্থ জীবন যাপন করছে না। সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে অবশ্যই সময়ের মূল্য দিতে হবে। এখন কথা হল, সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে কি কি করতে হবে। তাহলে চলুন দেখে নেই সুস্থ জীবন যাপন করার ৭ টি অভ্যাস।

সুস্থ জীবন যাপন করার সাতটি অভ্যাসঃ

আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা ঠিকমতো ঘুমায় না, ঠিকমতো খায় না কিংবা অতিরিক্ত খায়। নিজেকে একটু রেস্ট না দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করে। এমন অনেক ধরনের মানুষ রয়েছে যারা ঠিকমতো তাদের কাজগুলোকে করে না। হ্যাঁ অবশ্যই এগুলো আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় কাজ। কিন্তু কাজগুলোকে আমরা সঠিক নিয়মে না করি তাহলে, এগুলো আমাদের জন্য কখনো ভালো হবে না। তাই সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে কিছু অভ্যাস ফলো করতে হবে। নিচে সেই সাতটি অভ্যাস পুরো দেয়া হলোঃ

১।পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো

ঘুমানো আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ঘুমানোর মাধ্যমে আমরা আমাদের ক্লান্তি গুলোকে দূর করি। ঘুমালে যেমন আমাদের শরীরের রেস্ট হয় তেমনি আমাদের ব্রেনের ও এক ধরনের রেস্ট হয়। আমরা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায় তাহলে আমাদের ব্রেন অনেক সক্রিয় থাকবে। এছাড়াও সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। 

তাই বলে আপনি অনেক সময় পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকবেন তা কিনতে হবে না। কারণ অতিরিক্ত ঘুমালেও সেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। অতিরিক্ত ঘুমানোর পর আমাদের শরীর অনেক ক্লান্ত থাকে, কোন কাজে মন বসে না। তাই অন্তত আট ঘণ্টা একজন মানুষের ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমানোর পাশাপাশি সকাল সকাল ওঠা টাও খুব প্রয়োজনীয় একটি কাজ।

২।পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া

ঘুমানো যেমন আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় একটি কাজ তেমনি, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া আমাদের জন্য একটা প্রয়োজনীয় কাজ। পানির অপর নাম জীবন এটা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু সঠিকভাবে কাজ করত এ পানি অনেক সাহায্য করবে। পানি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাস্তার সাহায্য করে। তেমনি আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্লান্তি দূর করতে পানির অবদান রয়েছে। 

আমরা যদি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খায় তাহলে, আমরা আমাদের কাজে মনোযোগ দিতে পারব এবং আমাদের ক্লান্তি গুলো খুব সহজে কমে যাবে। আমাদের মস্তিষ্ক সবসময় সক্রিয় থাকবে এবং ঠান্ডা থাকবে। ফলে যে কোন কাজে খুব সহজেই মন বসাতে পারবো। ঘুম থেকে উঠে কোন কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই পানি খেতে হবে। এটা আমাদের ব্রেনের জন্য অনেক উপকারী ।

৩।রোদে থাকা

আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা কাজ করতে করতে। এতটাই ব্যস্ত হয়ে যান যে, কাজের ফাঁকে আমাদের যে একটু রোদ পোহানো উচিত সেটি ভুলে যায়। রোদ থেকে আমরা ভিটামিন ডি পাই। ভিটামিন ডি যেমন আমাদের জন্য অনেক উপকারী। তেমনি এর অভাবে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

আমরা যদি সুস্থ জীবন যাপন করতে চাই অবশ্যই দিনে একবারের জন্য হলেও রোদে যাওয়া প্রয়োজন। তাই বলে বেশি সময়ের জন্য রোদে থাকা যাবে না। বেশি সময় রোদে থাকলে এটি আমাদের ক্ষতি করতে পারে। রোদ আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ রোদে থাকতে হবে। তাই সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে অবশ্যই দিনের ফাঁকে একবারের জন্য হলেও রোদে যাওয়া প্রয়োজন। আর যদি সেটা সকালে রোদ হয় তাহলে অনেক ভালো হবে।

৪।ব্যায়াম করা

ব্যায়াম করা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের শরীর ফিট থাকে। শুধু শরীর ফিট নয় আমাদের মন ও ভালো থাকে এবং কাজও মন বসে। তাই ব্যায়াম করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি কাজ। আপনারা যদি জিমে না যেয়ে থাকেন তাহলে বাড়িতেই ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম করার পাশাপাশি মেডিটেশন করাটা অনেক প্রয়োজনীয় একটি কাজ। 

কারণ মেডিটেশন করার মাধ্যমে আপনার ব্রেন পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছায়। সেই সঙ্গে আপনার মনটিকেও অনেক হালকা করে। আপনি যদি নিয়মিত মেডিটেশন করতে পারেন তাহলে, আপনার সফলতার চূড়ায় এগোনোর কাজ অনেক সহজে যাবে। আর আর যদি বাড়িতে ব্যায়াম করেন তাহলে, সপ্তাহে তিন দিন ব্যায়াম করতে পারেন।

৫। বই পড়া

প্রতিদিন কাজের ফাঁকে বই পড়ার অভ্যাসটি অনেক ভালো একটি অভ্যাস। কারণ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট টাইমের জন্য বই পড়াটা আমাদের ব্রেনের জন্য অনেক ভালো। তাই কাজের ফাঁকে আপনারা যে কোন উপন্যাস, খবরের কাগজ কিংবা গল্প পড়তে পারেন। এটি আপনাদের ব্রেন কে ভালো রাখতে অনেক সাহায্য করবে। সব সময় এক কাজ করার পর আমাদের ব্রেন সেই কাজে আগ্রহ দেখায় না।

 তাই একই কাজ করার পাশাপাশি অন্যান্য কাজও করা প্রয়োজন। এর মধ্যে অন্যতম কাজ হলো এই বই পড়া। বই পড়ার মাধ্যমে আপনি কিছু জানতেও পারবেন এবং আপনার শরীরও সুস্থ  থাকবে। তাই এক কাজ করার পাশাপাশি অন্যান্য কাজ করতে হবে। শুধু বই পড়ায় নাই আপনি আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন যেমন ঘরবাড়ি গোছানো করা। নতুন কিছু তৈরি করা যেমনঃ গল্প লেখা, নতুন রেসিপি, নতুন কোন ঘর সাজানোর আসবাবপত্র ইত্যাদি কাজ করতে পারেন। এগুলো আপনার ব্রেন কে ভালো রাখতে সাহায্য করবে।

৬। সঠিক খাবার খাওয়া

উপরোক্ত কাজগুলো করার পাশাপাশি সঠিক খাবার খাওয়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছে যারা প্রয়োজনীয় তুলনায় কম খায়, আবার প্রয়োজনে তুলনায় অতিরিক্ত খাবার খায় কিংবা বাহিরের ভাজা পড়া জাতীয় খাবার গুলো বেশি খায়। সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে অবশ্যই সঠিক খাবার খাওয়া প্রয়োজন। 

আমরা যদি পুষ্টিকর খাবার খায় সেগুলো যেমন আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অনেক সাহায্য করে তেমনি আমাদের শরীর ভালো রাখতেও অনেক সাহায্য করে। তাই ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাবার থেকে পুষ্টিকর খাবার বেশি খেতে হবে। যেগুলো আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করবে। বাইরের খাবার খাবেন না অর্থাৎ একদম বন্ধ করে দেবেন তা কিন্তু নয়। অবশ্যই বাইরের খাবার খাবেন কিন্তু সেটিকে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। আবার বাহিরের খাবার খেতে গিয়ে পুষ্টিকর খাবারগুলোকে বাদ রাখা যাবে না। তাই সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে সঠিক খাদ্য অভ্যাসেরও প্রয়োজন রয়েছে।

৭। নিজেকে সময় দেওয়া

কাজে ফাঁকে ফাঁকে নিজেকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ নিজের খুশির জন্য কিছু কাজ করতে হবে। সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে খুশি থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই কঠোর পরিচয়ের পাশাপাশি নিজেকেও কিছু পর্যাপ্ত পরিমাণে সময় দিতে হবে। 

সে সময় গুলোতে আপনি নিজেকে খুশি রাখার জন্য সব ধরনের কাজ করতে পারেন যেমনঃ পরিবারের সাথে সময় কাটানো, কোথাও ঘুরতে যাওয়া, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া, আপনি যদি খেতে ভালোবাসেন তাহলে, ভালো ভালো খাবার খাওয়া। ইত্যাদি আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকতে পারে। যেগুলো করার মাধ্যমে আপনি খুশি থাকবেন। 

জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই অবশ্যই সময় থাকতেই সব কাজ করতে হবে। আর জীবনের সফল হতে হলে সুস্থ জীবন যাপন করতে হবে।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url