পিয়াজ খাওয়ার উপকারিতা - পিয়াজ কাটলে চোখে পানি আসে কেন
বাংলাদেশের যেকোনো ঘরোয়া রান্নার কাজে প্রয়োজন হয় এই পেঁয়াজের। পেঁয়াজ ছাড়া যেন কোন খাবারেই ভালো স্বাদ আসে না। পেঁয়াজ মূলত সবজি হলেও রান্নার কাজে এটিকে মসলা হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। আর বর্তমানে এটি একটি মসলা হিসেবেই বেশি পরিচিত।
বাংলাদেশের খাদ্য পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পেঁয়াজ মূলত মসলা হিসেবে ব্যবহার, বাংলাদেশ প্রায় সকল খাবারে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে এমন খুব কম খাবারে আছে যেগুলো পেঁয়া ছাড়া রান্না করা যায়।
ভূমিকা
বর্তমানে পেঁয়াজের এতটাই চাহিদা বেড়ে গেছে যে দিন দিন এর দাম বেড়েই চলেছে। পেঁয়াজ উৎপাদনে গোটা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে রয়েছে। তবুও বাংলাদেশের পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশের পেঁয়াজের চাহিদা এতটাই বেশি যে, ঘাটতি পূরণ করার জন্য বাহিরের দেশ থেকে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
সবথেকে মজার বিষয় হলো বাংলাদেশ যেমন পেঁয়াজ উৎপাদনের সপ্তম স্থান অধিকার করেছে তেমনি বাংলাদেশ পেয়াজ আমদানিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে। ভারত, চীন, মিয়ানমার সহ আরও বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ভারত প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় এবং খরচ একটু কম হয়।
ভারত থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। আজকে আমরা জানবো আপনি আজ খাওয়ার উপকারিতা এবং পেঁয়াজ কাটলে চোখের পানি আসে কেন এই সমস্ত বিষয়। আশা করছি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে তাই পুরো পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
পেঁয়াজের পুষ্টিগুণঃ
পেঁয়াজ মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বিভিন্ন জায়গায় এটিকে একটি ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। তবে সেটি খুব কম ক্ষেত্রে। পেঁয়াজ রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো লাগতো সাহায্য করে। পেঁয়াজের রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, এছাড়া এতে আরো রয়েছে আইরন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান।
যেগুলো আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এলিসেন
নামক একটি উপাদানের কারণেই মূলত পেঁয়াজ ঝাঁঝালো হয়ে থাকে। এই উপাদানটির রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পিয়াজ খাওয়ার উপকারিতা
অন্যান্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে পেঁয়াজ উৎপাদনের দিক দিয়ে। তবে বাংলাদেশ উৎপাদন বেশি হলেও চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। এর ফলে বাইরের থেকে অনেক পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে বাংলাদেশে মূলত তিন ধরনের পেঁয়াজ চাষ করা হয়। বর্তমানে পিয়াজ একটি মসলা ব্যবহৃত হলেও এর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।
যেগুলো আমাদের বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আর পেঁয়াজের এই
উপকারিতা সম্পর্কে অনেকে এখনো জানেন না। কারন সকলে এটিকে সাধারণ একটি মসলা হিসেবে
ব্যবহার করে আসছেন। তবে পিঁয়াজেরও উপকারিতা রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে পেঁয়াজের
কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
চুল ঘন এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে
আপনারা হয়তো অনেকে শুনে থাকবেন যে, পিয়াজ আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। কারণ এটা থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী। আপনারা অনেকে দেখে থাকবেন যে, চুল ঘন করতে কিংবা চুল পরা বন্ধ করতে অনেকেই এই পেঁয়াজের ব্যবহার করে থাকেন। কারণ এই পেঁয়াজ ব্যবহার করে অনেকেই ভালো রেজাল্ট পেয়েছেন।
আপনারা চাইলে চুলের যত্নে এই পেঁয়াজের ব্যবহার করতে পারেন। পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে
এর থেকে রস বের করে চুল দিতে পারেন কিংবা অন্যান্য কোন উপাদানের সঙ্গে মিক্স করে
ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে যদি আপনি একমাস পর্যন্ত ব্যবহার করেন তাহলে, আপনার
চুলের সমস্যা একদম দূর হয়ে যাবে। এটি শুধু গবেষণায় নয় সাধারণ মানুষেরাও এর
উপকার পেয়েছে। তাই আপনারা নিঃসন্দেহে পেঁয়াজের ব্যবহার করতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে
পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। এছাড়াও রয়েছে শক্তিশালী এন্ডঅক্সিডেন্ট উপাদান। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে ভিটামিন সি এবং আমাদের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। পিয়াজে ভিটামিন উপাদান থাকার পাশাপাশি আন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানও রয়েছে পাশাপাশি যেটা সরাসরি আমাদের শরীর সুস্থ রাখার কাজে লেগে পড়ে।
এই এন্ড্রক্সিডেন্ট উপাদান গুলো আমাদের শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সিন উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। এই দুইটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। এছাড়াও এই এন্ড্রোক্সিমেন্ট উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
আপনারাও চাইলে পেঁয়াজ খাওয়ার মাধ্যমে আপনাদের রূপ প্রতীক ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারেন। আপনারা এর জন্য রান্না করে খেতে পারেন কিংবা কাঁচা ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। দুটি আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে। তবে আপনি যদি কাঁচা খেতে পারেন তাহলে এটি আরো বেশি উপকার হবে।
হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে পিয়াজ
পেঁয়াজের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। আর এ ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আমরা হয়তো সকলেই জানি যে ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। কারণ আমাদের শরীরের প্রতিটা অংশের রয়েছে হাড়। তাই আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে হলে অবশ্যই হাড় কেউ সুস্থ রাখতে হবে।
এছাড়া হারের এই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে মূলত ক্যালসিয়ামের অভাবে।
আপনারা খেয়াল করে দেখবেন যে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা দুর্বল হয়ে যেতে
থাকে। এর মূল কারণ হলো শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেওড়া। বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। এ কারণে মূলত বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে হারের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। আপনারা চাইলে পেঁয়াজ খাওয়ার
মাধ্যমে আপনাদের হারকেও সুস্থ রাখতে পারবেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
পেঁয়াজের রয়েছে অ্যান্ডটিঅক্সিডেন্ট উপাদান,বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনস এছাড়াও আরো
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান। এগুলো আমাদের শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো
দূর করে দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তেমনি ক্যান্সার কোষ
তৈরি হতো বাধা দেয় এই পেঁয়াজের পুষ্টিগুণ উপাদান গুলো। তাই আপনারা পেঁয়াজ
খাওয়ার মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে মুক্ত পাবেন। তাই ক্যান্সারসহ বিভিন্ন
ধরনের প্রতিরোধ করতে হলে পেঁয়াজ খেতে পারেন এটি আপনাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো
বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজের দাম আগের তুলনায় এত বেড়ে যাচ্ছে কেন?
বাংলাদেশ অধিক পরিমাণে পেঁয়াজ উৎপাদন করা হলেও এই পেঁয়াজ দিয়ে বাংলাদেশের চাহিদা পূরণ করা যায় না। ফলে বাংলাদেশের মানুষদের বাহির থেকে আমদানি করতে হয়। পরে পেঁয়াজের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশ যেমন পেঁয়াজ উৎপাদনের দিক দিয়ে এগিয়ে আছে তেমনি আমদানির দিক দিয়ে অন্য দেশের থেকে এগিয়ে রয়েছে।
আগের তুলনায় বাংলাদেশ উৎপাদনের হার বেড়ে গেলেও এর দাম এখনো কমেনি বরং আরো বেড়ে যাচ্ছে। কারণ অনেক পরিমাণে পিয়া চাষ করা হলেও বেশিরভাগ পেয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ প্রয়োজন হয় ৮০ অথবা ৮৭ । আর অন্যদিকে পেঁয়াজ উৎপাদন করা হয় ৩০ থেকে ৩৪ টন মত। কিন্তু এই সব থেকে নষ্ট হওয়ার পর থাকে ২২টন এ কারণে মূলত বাংলাদেশকে বাহির থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
আর এই আমদানি করা পেঁয়াজের জন্য মূলত বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। পিঁয়াজ
তিন ধাপে বিক্রি করা হয়। বাহিরের আমদানি করা পিয়াজ আমাদের দেশের বড় বড় পেজ
ফ্যাক্টরিগুলো কিনে নেয়। ফ্যাক্টরি থেকে পাইকারি দামে বিক্রি করা হয় এবং
পাইকারি দোকান থেকে সাধারণ বাজারে বিক্রি করা হয়। আর সেখান থেকে মূলত আমরা এই
পেঁয়াজগুলো খাওয়ার জন্য কিনে থাকি। এভাবে তিনটি ধাপে যাওয়ার সময় এর দাম
বৃদ্ধি পেতে থাকে।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করতে হলে, পেঁয়াজ নিয়ে আরো নতুন নতুন গবেষণা
করতে হবে। সে গবেষণায় জানতে হবে কিভাবে পিয়াজ উৎপাদন করলে বাংলাদেশে মানুষের
চাহিদা পূরণ করা যাবে। এছাড়াও পিয়াজ কিভাবে দীর্ঘ সময় যেন সংরক্ষণ করা যাবে
এগুলো জানতে হবে। পেঁয়াজের প্রতি যদি ভালোভাবে নজর দেওয়া হয় তাহলে হয়তো
বাংলাদেশের পেঁয়াজের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করা যাবে। কিন্তু পেঁয়াজ নিয়ে
এখনো চিন্তাভাবনা না করলে ভবিষ্যতে এর দাম আরো বেড়ে যেতে পারে।
পিয়াজ কাটলে চোখে পানি আসে কেন
পেঁয়াজের কাটার সময় অসংখ্য প্রকার গ্যাস উত্থান হয়, যেগুলো আমাদের চোখে পানি এনে যায়। এই গ্যাসের কারণে চোখে পানি এসে যায়। তবে, এটি সাধারণভাবে অস্থির এবং অসুস্থতার কারণ নয়।
পিয়াজ মাথায় দিলে কি হয়
পিয়াজ মাথায় দিলে সাধারণত চোখে পানি এসে যায় না, কারণ পিয়াজের সামান্য স্পেশাল আরোমা চোখ উজ্জ্বল করতে পারে এবং মাথার চারপাশে আবির্ভাব হতে পারে। তবে, এটি সাধারণভাবে অস্থির এবং অসুস্থতার কারণ নয়। যদিও এর পাশাপাশি, কেউই পিয়াজ মাথায় দেওয়ার সাময় প্রস্তুতি নেয় না।
পিয়াজ কত টাকা কেজি ২০২৪
তাই আমি ২০২৪ সালে পেঁয়াজের বর্তমান মূল্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারব না। আপনি আপনার স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের বর্তমান মূল্য নিয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারেন বা অনলাইনে তথ্য অনুসন্ধান করতে পারেন। বর্তমানে পেঁয়াজের মূল্য প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url