ইস্তেগফার কিভাবে করতে হয় - ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
ইস্তেগফার কিঃ
ইস্তেগফার মানে হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। এটি ইসলামের একটি ইবাদত হিসেবে বিবেচিত হয়। ইস্তেগফার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কোরআনেও বিভিন্ন ইস্তেগফারের কথা উল্লেখ করা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের বেশি বেশি তওবা করতে বলেছেন। কারণ মানুষের স্বভাবেই ভুল রয়েছে। আর এই ভুল শুধরানোর জন্য মূলত আমরা তওবা করে থাকি।
কিন্তু ও তো আবার এমন ভাবে করতে হবে যে পরবর্তীতে সে কাজ আর কখনো করবো না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম অনেক বেশি ইস্তেগফার পড়তেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম কোন ধরনের গুনাহ না করে ৭০ বারের বেশি ইস্তেগফার করতেন ইস্তেগফার করতেন।
কিন্তু আমরা তো আল্লাহর গুনাগার বান্দা আমাদের তো অবশ্যই সত্যবারের বেশি করে ইস্তেগফার করা দরকার। কিন্তু আমরা দিনে একবারও হয়তো করি না। কিন্তু সেই জাগে আমাদের ৭০ বারেরও বেশি ইস্তেগফার করা প্রয়োজন। ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া যায়।
প্রতিনিয়ত আমরা বিভিন্ন ধরনের পাপ কাজ করে থাকে। সেটা ইচ্ছাকৃত হউক বা ভুল করে।
তাই অবশ্যই আমাদের প্রতিদিন ইস্তেগফার করতে হবে এবং সেটা বেশি বেশি করতে হবে। আর
সেই ইস্তেগফার অবশ্যই আমাদের অনুতপ্ত হয়ে এবং মন থেকে করতে হবে। আর আমরা যদি
এভাবে ইস্তেগফার করতে পারি তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা আমাদের মাফ করে দেবেন।
ইস্তেগফার কিভাবে করেঃ
ইস্তেগফার আমরা বিভিন্নভাবে করতে পারি। অর্থই হলো তওবা করা অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। ইস্তেগফারের বিভিন্ন দোয়া রয়েছে সেগুলো পড়া যেতে পারে । ইস্তেগফার এমন অনেক তৈরি হয়েছে যেগুলো আমরা জানি। যেমনঃ
- আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি। অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই। তিনি চিরঞ্জীবী ও চিরন্তন। এবং আমি তার কাছে ফিরে আসি। হাদিসে এই দোয়াটি নিয়ে বর্ণিত আছে যে, দোয়াটি যদি ইখলাসের সাথে পাঠ করা যায় তাহলে, আপনার যদি সমুদ্রের ফেনা সমান পাপ থেকে থাকে তাও মাফ করে দিবেন আল্লাহ তায়ালা।
- আবার আরো একটি রয়েছে, এটিও হয়তো অনেকেই জানে। আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিউ ওয়া আতুবু ইলাইহি, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম। অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে আমার সব পাপের জন্য ক্ষমা চাই। আমি আবারও তার কাছে ফিরে আসি।
আপনারা চাইলে এই দোয়াগুলো বারবার পড়ে ইস্তেগফার করতে পারেন। আর সবচেয়ে ছোট দোয়াটি হলো আস্তাগফিরুল্লাহ। এটি আমরা সকলেই জানি। আপনি নামাজের পর এটিকে পড়তে পারেন কিংবা অন্যান্য যে কোন সময়ও করতে পারেন।
এর পাশাপাশি উপরোক্ত যে দোয়াগুলো দেওয়া রয়েছে সেগুলো কেউ আপনার ইচ্ছামত সময়
অনুযায়ী পড়তে পারবেন। মনে রাখবেন আল্লাহ তো অবাক কারীকে পছন্দ করে। তওবা করার
আগে অবশ্যই আপনার মনে সে ভুলের জন্য অনুতপ্ত বোধ থাকা দরকার। কারণ যখন আপনি যে
কাজের প্রতি অনুতপ্ত হবেন তখনই আল্লাহতালা আপনার তওবা কবুল করে নেবেন।
সায়েদুল ইস্তেগফার কিঃ
যত ধরনের ইস্তেগফার রয়েছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে সাইয়েদুল ইস্তেগফার। বুখারিতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সাইদুল ইস্তেগফার যে দিনের বেলা পড়বে এবং বিশ্বাসের সঙ্গে। তাহলে সে ব্যক্তি যদি সে দিনের মধ্যে মারা যায় সে জান্নাতি হয়ে যাবে। আর এ সাইয়েদুল ইস্তেগফার যে রাতের বেলা পড়বে সে রাতের মধ্যে যদি সে ব্যক্তি মারা যায় তাহলে, তিনি জান্নাতী হয়ে যাবেন।
তাই আপনারা যদি দিনে এবং রাতে এ সাইদুল ইস্তেগফার পড়েন তাহলে, আপনি যদি সেই দিন কিংবা রাতের মধ্যে মারা যান তাহলে আপনি নিঃসন্দেহে জান্নাতি হয়ে যাবেন। ইস্তেগফারের মানে হলো তওবা করা।আপনারা হয়তো সকলেই জানেন যে আল্লাহ তা'আলা তওবা কারীকে পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি তওবা করে সেই একমাত্র প্রকৃত মুমিন।
তাই আমাদের সবসময় তওবা করতে হবে এবং সেটা আপনার ভুলের উপরে অনুতপ্ত হয়ে। আপনি যদি মন থেকে ভুলের প্রতি অনুতপ্ত হন এরপর আপনি যদি আল্লাহর কাছে তওবা করেন আল্লাহর নিশ্চয়ই আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন(নিশ্চয় আল্লাহতালা ক্ষমাশীল)। তাই ইসলামের অন্যান্য ইবাদতের পাশাপাশি ইস্তেগফার করাও এক ধরনের ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়।
তাই আমাদেরও উচিত প্রতিনিয়ত ইস্তেগফার করা অথবা তওবা করা। আর সেটা যদি সাইয়েদুল ইস্তেগফার হয় তাহলে অনেক উত্তম হবে। কারণ এটি একমাত্র শ্রেষ্ঠ ইস্তেগফার।
সায়েদুল ইস্তেগফারের ফজিলতঃ
সাইয়েদুল ইস্তেগফারেরই শুধু ফজিলত নিয়ে বরং সাধারণ ইস্তেগফারেরও ফজিলত
রয়েছে। কুরআনে বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখিত করা আছে, আমি (আল্লাহ তায়ালা) অবশ্যই
ক্ষমাশীল তার প্রতি, যে মন থেকে তওবা করে, ঈমান আনে সৎকর্ম করে এবং সৎ পথে অবিচল
থাকে( সূরা ত্বহা, আয়াত ৮২)। এছাড়াও আরো বিভিন্ন জায়গায় বলা রয়েছে যে,
ব্যক্তি মন্দ কাজ করার পর আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব।
একটি হাদিসের রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি কেউ বেশি বেশি
ইস্তেগফার করে তাহলে আলাদা তারা তাকে সকল ধরনের দুর্দশা থেকে মুক্তি দেন হতাশা
কিংবা দুশ্চিন্তাও দূর করে দেন, আপনাকে এমন একটি উৎস থেকে রিজিক দান করা হয় তা
সে কখনো কল্পনাও করেনি। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, ইস্তেগফারের কত ফজিলত রয়েছে।
এছাড়া আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন যে, তিনি তার দরিদ্রতা দূর করে দিবেন, তার
পাশাপাশি তাকে নিরাপত্তা দান করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন ধরনের গুনাহ ছিল না তবুও তিনি দিনে ৭০ বারের বেশি ইস্তেগফার করতেন। তাহলে অবশ্যই আমাদের প্রতিদিন অনেক বেশি পরিমাণে ইস্তেগফার করতে হবে। কারন আমরা আল্লাহর গুনাহগার বান্দা। তাই আমরা যদি মন থেকে আল্লাহর কাছে তওবা করি, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাফ করে দিবেন।
এমনকি কুরআনেও বিভিন্ন ধরনের ইস্তেগফার করার কথা বলা হয়েছে। তাই অবশ্যই আমাদের
ইস্তেগফার করতে হবে। যেন আমরা আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে ক্ষমা চাইতে পারি এবং যেন
আল্লাহ তা'আলা আমাদের মাফ করে দেন। তাই ক্ষমা চাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এই
ইস্তেগফার করা। বিশেষ করে সাইয়েদুল ইস্তেগফার। কারণ এটি শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত
হয়।
সায়েদুল ইস্তেগফার কিভাবে করতে হয়ঃ
সাইদুল ইস্তেগফারের একটি দোয়া রয়েছে, যেটিকে পড়ার মাধ্যমে আমরা সাইয়েদুল ইস্তেগফার করতে পারবো। আমরা স্পেকফার কখন করব। ক্ষমা চাওয়ার কোন সময় হয় না। যখনই আপনার কৃতকর্মের ওপর অনুতপ্ত বোধ করবেন। তখনই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারবেন।
কিন্তু স্যার ইস্তেগফার আপনি ফজরের সময় এবং মাগরিবের সময় পড়তে পারেন। সাইদুল
ইস্তেগফার পর এই দুইটি উত্তম সময়। আপনি যদি এভাবে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাইতে
পারেন তাহলে, দোতালা আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url