স্মার্ট হওয়ার ৭টি টিপস জেনে রাখুন
বর্তমান সময়ে নিজের জীবনকে আরো ভালো করে তুলতে হলে স্মার্ট হওয়া প্রয়োজন। কারণ এই স্মার্ট হওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনকে অনেক সহজ এবং সুন্দর করে তুলতে পারবো। আর অন্যান্য মানুষের স্মার্ট মানুষদের অনেক বেশি পছন্দ করে এবং সম্মান দিয়ে থাকে।
তাই জীবনটাকে সম্মানের সঙ্গে সঙ্গে সফল করতে হলে স্মার্ট হওয়া খুবই প্রয়োজন। স্মার্ট হওয়ার মাধ্যমে নিজের সম্মান বাড়ে, আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং যেকোন সমস্যার সমাধান সহজে করা যায়।
ভূমিকা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা নিজেকে স্মার্ট মনে করে না। অন্যদের তুলনায় দুর্বল মনে করে। বিশেষ করে তাদেরই স্মার্ট হওয়ার উপায় গুলো জানা প্রয়োজন। যেন তারা অন্যদের কাছে আর সম্মানীয় হয়ে উঠতে পারে। আপনিও যেন গলা উঁচু করে তাদের সামনে কথা বলতে পারেন।
আর এ স্মার্ট হওয়া আমাদের জীবনের লক্ষ্য অর্জন করতে এবং ক্যারিয়ার তৈরি করতেও
অনেক সাহায্য করে। স্মার্ট হওয়া মানে বুদ্ধির সাথে প্রতিটা পদক্ষেপ ফেলা। আপনি
নিশ্চয়ই স্মার্ট হতে চান বলেই এই পোস্টটি পড়তে এসেছেন। তাই চলুন দেখে
নিস্মার্ট হওয়ার দশটি স্টেপ। এগুলো আপনার জীবনে অনেক কাজে দিবে।
স্মার্ট হওয়ার ৭টি টিপসঃ
এই স্মার্ট হওয়া টিপস গুলো আপনার জীবনে শুধু আপনাকে স্মার্ট ব্যক্তি বানাতে
সাহায্য করবে না বরং আপনার জীবনের সফলতা অর্জন করতে অনেক সাহায্য করবে। নিজেকে
বিপদের সময় আত্মবিশ্বাসী রাখার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেপগুলো। তাই জীবনে
আরও সামনে হতে হলে, এগুলো জানা প্রয়োজন।
১।প্রয়োজনের অধিক কথা না বলা
প্রয়োজনের অধিক কথা না বলা। কারন আপনি যখন, অন্য কারো সাথে অনেক কথা বলছেন। আপনার বিষয়ে সকল কিছু তাকে জানাচ্ছেন। এমনটি করলে মানুষ আপনাকে বেশি প্রায়োরিটি দিবেনা। কারন যখন আপনি আপনার জীবন সম্পর্কে সবকিছু নিজে থেকে বলে দিচ্ছেন তাহলে তার জিজ্ঞেস করার কোন প্রয়োজনই হয় না।
যারা বেশি কথা বলে তাদের সব মানুষ পছন্দ করেনা। তাই নিজের ব্যক্তিগত জিনিস না কখনো কাউকে বলা উচিত নয়। যেমন ধরেন আপনি আপনার স্বপ্ন নিয়ে তোমার সাথে কথা বললেন। পরবর্তীতে যদি সে কাজটি না করতে পারেন তাহলে, তারা আপনাকে অপমান করবে। এছাড়া আপনাকে আপনার কাজের থেকে ডিমওটিভেট করতে পারে।
যে আপনি নিজে কিছু করতে পারেন না। তাই প্রয়োজনের অধিক কথা বলা উচিত নয়। যখন
আপনি খুব কম কথা বলবেন, তখন দেখবেন আপনার সাথে কথা বলার জন্য অন্যান্য মানুষেরা
আগ্রহ দেখাবে। তাই স্মার্ট হতে গেলে অবশ্যই কম কথা বলতে হবে।
২।নিজের কেয়ার করা
আপনি নিজেই নিজেকে ভালো ভাবে ট্রিট করা শুরু করুন যে, এটি আপনার একটি দায়িত্ব। যেমন ধরুন আপনার কোন ফ্যামিলি মেম্বার কিংবা প্রতিবেশী আপনার কাছে একটি ছোট্ট বাচ্চা দিয়ে গেল দেখা শোনার জন্য। তখন আপনি যেভাবে প্যাকেট ট্রিট করেন, আপনার পরিবারের অন্য মানুষদের যেভাবে ট্রিট করেন।
ঠিক সেভাবে নিজেকে সারাজীবন টেক কেয়ার করে যেতে হবে। এ কথাটি শুনতে একটু অন্যরকম মনে হলেও, এ বিষয়টা অনেক বেশি ইম্পোর্টেন্ট। আপনি একটু রিসার্চ করলে জানতে পারবেন যে আমেরিকার মানুষেরা এভাবে নিজেদের টেক কেয়ার করে। তার প্রতিদিন সকালে এক্সারসাইজ করে, স্বাস্থ্যকর খাবার খায়, কোন ধরনের সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে চলে যায় চেকআপের জন্য।
যেগুলো আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষেরা করি না বললেই চলে। আপনার প্রায়
দেখবেন যে বিদেশি 60 বছরের উপরে মানুষের অনেক ফিট থাকে। নিজের কাজ নিজে করে খেতে
পারে আর আমাদেরে বাংলাদেশের মানুষেরা ৩০ বছর পেরোলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা
দেয়। আর ষাট বছর আগে তো বিছানা থেকে উঠতে পারে না। এরকমটা মৃত্যুর আগ
পর্যন্ত চলতে থাকে। তাই নিজের কেয়ার করার প্রয়োজন।
৩।নিজের সাথে নিজেই কম্পেয়ার করা
আমার নিজের উন্নতি কতটুকু হলো সেইটা কম্পেয়ার করতে হবে, গতকাল আমি কত পরিমাণে উন্নতি করতে পেরেছি। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ এই ভুলটি করে থাকে যে অন্যদের সাথে নিজেদের কম্পেয়ার করি। আর এটি একটি বড় রিজন সারাজীবন কষ্টে থাকার। আপনার আশেপাশে এমন কেউ না কেউ হয়তো থাকবে যা আপনার থেকে অনেক বেশি সাকসেসফুল।
অন্যদের সাথে কম্পেয়ার করতে যে নিজের জীবনটা নষ্ট করার কোন মানে নেই। কোড নিজের সাথে নিজের কম্পেয়ার করতে হবে। আপনি যদি অন্য দিনের তুলনায় আজকে বেশি পরিমাণে উন্নতি লাভ করতে পারেন তাহলে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া জানান।
আর যদি না করতে পারেন তাহলে আবার প্ল্যান করে লেগে পড়ুন আপনার কাজের উন্নতি করার জন্য। আর এভাবে যদি কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার জীবনে অবশ্যই আপনি সফল হবেন।
৪।বডি ল্যাংগুয়েজ ঠিক রাখ
অর্থাৎ আপনার চলাফেরা ওঠাবসা যে কোন কাজে আপনার বডিকে স্ট্রেট রাখুন। কারণ যখন আপনি আপনার বডিকে সবসময় সোজা রাখবেন। আপনার মধ্যে একটা অন্য ধরনের আত্মবিশ্বাস কাজ করবে। তাই যে কোন কাজ করার আগে নিজের বডিকে সবসময় স্টেট রাখতে শিখুন। এছাড়াও আপনার ঝুঁকে চলার কারণে, আপনাকে অনেকেই দুর্বল মনে পড়বে।
আপনাকে বেশি সম্মান দিবে না। আপনার মজা নেবে। তাই অন্যদের সামনে নিজেকে স্মার্ট দেখাতে হলে অবশ্যই বডি সোজা রাখতে হবে। তাই যখন অন্যদের সাথে কথা বলবেন কিংবা কাজ করবেন নিজের বডি স্ট্রেট রেখে সব করার চেষ্টা কর্বেন। আর এমনটি যদি না করেন, তাহলে অন্যরা আপনাকে লুজার মনে করবে এবং আপনাকে বিভিন্ন ধরনের কথা শুনিয়ে দিবে।
এটা কি আপনি বিশ্বাস না করলেও আপনার সাব কনসিয়াস মাইন্ড। ধীরে ধীরে এটাকে
বিশ্বাস করতে শুরু করবে। ফলে আপনি আপনার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন।
৫।মিনিংফুল লাইফ তৈরি করা
আমরা বেশিরভাগ মানুষ আমাদের জীবনটা মিনিং লেস করে ফেলি। আমরা ভেবে থাকি যে বড় হয়ে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হব। কিন্তু পড়ার বেলায় আমরা ভালো করে পড়ি না কিংবা ফাঁকিবাজি করি। অনেকেই কোন কিছু করার আগে খাতায় লিখে বসে থাকেন যা আপনি কি কি করবেন আর কি কি পাবেন। নিজেরা তো ভেবে থাকেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করতে পারেন না।
অবশ্যই আপনার লাইফকে একটি মিনিংফুল লাইফ তৈরি করতে হবে। যেখানে যা আপনি
করছেন তার বাস্তবের সাথে মিল থাকা উচিত। জীবনের যদি সফল হতে চান। তাহলে
নিজের জীবনকে মিনিংফুল লাইভ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
৬।কথা বেশি বলার চেয়ে অন্যের কথা শোনা
নিজে কথা বলার থেকে অন্যের কথা শোনা খুব প্রয়োজন। কারণ যখন আপনি অন্যের কথা শুনবেন, তখন সে ব্যক্তিটি আপনার সাথে কথা বলতে কমফোর্টেবল ফিল করবে। ফলে সে ব্যক্তি আপনাকে অনেক স্মার্ট মনে করবে। তাই নিজে কথা বলার থেকে অন্যের কথা বেশি শোনা ভালো।
এটি আপনার জীবনে অন্যান্য কাজে লাগতে পারে যেমনঃ কারো জীবনের এক্সপেরিয়েন্স সম্পর্কে যদি আপনি জানতে পারেন তাহলে, তাদের সে পদক্ষেপগুলো আপনি আপনার বিপদের সময়ে কাজে লাগাতে পারবেন।
কিংবা যখন আপনি ডিপ্রেসড ড থাকবেন তখন আপনি সেই ব্যক্তি গুলোর কথা মনে
করবেন, তারা তাদের জীবনে অনেক কষ্ট ভোগ করেছে। তাহলে আমি কেন পারব না। এভাবে এই
টেকনিকটি আপনার জীবনে কাজে লাগাতে পারবেন।
৭।সত্যিকারের বন্ধু বানানো
বন্ধু ছাড়া জীবন তো অচল। বন্ধু সবারই থাকে। কিন্তু সত্যিকারের বন্ধু সকলের থাকে না। আমাদের এমন বন্ধু বানানো প্রয়োজন, যারা আমাদের বিপদে নিজের বিপদ মনে করে এগিয়ে আসে। সব সময় আমাদের সাফল্য আশা করে।
যেকোনো কাজ করার আগে আমাদের মোটিভেট করে। কিন্তু অনেক সময় আমরা এমন ধরনের বন্ধু বানিয়ে ফেলি যে, তারা আমাদের সাকসেসের জেলাস ফিল করে। অলওয়েজ আমাদের টেক্কা দিতে চাই। আর আমার নতুন কোন কাজ শুরু করলে আমাদের উৎসাহ না করে আমাদের ডিমটিভেট করে। সত্যিকারের বন্ধু বানানো প্রয়োজন কারণ, আপনার হয়তো অনেকেই এই কথাটি শুনেছেন যে লোহা ভাসে।
আমাদের যদি ভালো সংগ্রহ হয় তাহলে আমরা ভালো দিকে এগিয়ে যাব। আর যদি খারাপ সংগ্রহ হয় তাহলে খারাপ দিহকে। আরেকটা উদাহরণ রয়েছে যে, সুন্দর জিনিসের সাথে মিশলে, সেই জিনিসটি আর আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। আর খারাপ জিনিসের সাথে মিশলে, সে খারাপ জিনিসটি তার সকল গুণ নিজের মধ্যে নিয়ে নেয়। তাই জীবনে একজন ভালো সঙ্গেই নির্বাচন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন স্মার্ট হওয়ার উপায় কি। আমরা উপরে যে
বিষয়গুলো আলোচনা করেছি এই বিষয়গুলো যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে অবশ্যই আপনি
স্মার্ট হতে পারবেন। আজকের আর্টিকেল থেকে যদি আপনি কোন ভাবে উপকৃত হন তাহলে
অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url