মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ ১৫ টি উপায়

সুপ্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আমরা সকলে মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে চাই কিন্তু সঠিক গাইডলাইন না থাকার কারণে আমরা ইনকাম করতে পারিনা। বর্তমানে প্রত্যেকের হাতে একটি করে স্মার্টফোন আছে যেটির সঠিক ব্যবহার করতে জানলে আমরা প্রত্যেকে এই মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে পারব।


আজকে আমরা আলোচনা করব মোবাইল দিয়ে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সে সম্পর্কে। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকার লাগবে। তাই পুরো পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই মোবাইলে ইনকাম করার উপায়।

ইউটিউব চ্যানেলঃ 

অনলাইনে ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ একটি মাধ্যম হলো এই ইউটিউব । ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করে, আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বিভিন্ন বিষয়ের ওপরে ইউটিউবের ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায়। ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম শুরু করার আগেই কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। 

এই শর্তগুলো পূরণ করার পর গুগল এডসেন্স এপ্লাই করা যাবে এবং এরপর থেকে আপনার টাকা ইনকাম শুরু হয়ে যাবে। এরপরে যত মানুষ আপনার ভিডিও দেখতে থাকবে আপনার ইনকাম তত বাড়তে থাকবে। ইউটিউব এ একেক জন একেক রকম ভিডিও তৈরি করে থাকে। কেউ ফানি ভিডিও, বিজনেস আইডিয়াস, রান্নার রেসিপি, গিফট মেক আইডিয়াস ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করা হয়।

ফেসবুক চ্যানেলঃ

ইউটিউব এর মতনই ইনকাম করার অন্যতম একটি ভালো মাধ্যম হলো ফেসবুক। ইউটিউব থেকে মূলত ফেসবুকের ভিডিওগুলো মানুষ বেশি দেখে। চাইলে আপনিও ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও এডিট করা আপলোড করতে পারেন। ইউটিউবের মতো ফেসবুকে টাকা ইনকাম শুরু হওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয় । 

এরপরে গুগল এডসেন্সে এপ্লাই করতে হবে। শর্তগুলো পূরণ হয়ে যাওয়ার পর আপনার ভিডিওর ভিউয়ার্স বাড়তে থাকলে আপনার ইনকামও বাড়তে থাকবে। ফেসবুকেও  বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করা যাবে। ফেসবুকে বড় ভিডিওর চেয়ে মানুষ রিলস ভিডিও বেশি দেখে।

প্রমোশনাল ভিডিওঃ

আপনার ইউটিউব কিংবা ফেসবুক চ্যানেলে যদি ভালো ভিউয়ার্স থাকে। তাহলে আপনি যেকোন প্রোডাক্ট এর প্রমোশনাল ভিডিও বানিয়েও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এতে করে আপনি দুই দিক থেকেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেসব প্রোডাক্ট এর প্রমোশনাল ভিডিও তৈরি করবেন, সে প্রোডাক্টস এর কোম্পানির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পাশাপাশি। 

আপনার ভিডিও গুলো যত মানুষ দেখবে তাতেও আপনার ইনকাম হবে। আপনি ইউটিউব এবং ফেসবুক চ্যানেল একসাথে এই প্রমোশনাল ভিডিও গুলো করতে পারবেন। এছাড়াও ইনস্টাগ্রাম এ যদি ভালো ফলোয়ার্স থাকে তাহলেও প্রমোশনাল ভিডিও করা যাবে।

ইনস্টাগ্রামঃ

ইউটিউব এবং ফেইসবুক এর মত একটি ইনকাম করার অন্যতম মাধ্যম হলো ইনস্টাগ্রাম। ইনস্টাগ্রামে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করেও আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ইউটিউব এবং ফেসবুকের মতো বিভিন্ন ধরনের প্রমোশনাল ভিডিও বানাতে পারবেন। 

আপনার যদি ইনস্টাগ্রাম এ ভালো ফলোয়ার থেকে থাকে তাহলে, বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর প্রমোশনাল ভিডিও করে আপনি খুব সহজেই অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমানে ইউটিউব এবং ফেসবুক এর মতো এটিও একটি জনপ্রিয় অ্যাপ।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ

সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং। এটিএম মার্কেটিং করার এটি ভালো মাধ্যম। ধরণ আপনি যেকোনো মার্কেটিংয়ের কাজ করেন। এখন আপনার কাজ হলো সেই প্রোডাক্টগুলোকে বিক্রি করা। মার্কেটিং করতে গেল কিছু টেকনিক শিখে রাখতে হয়। যে কিভাবে সে প্রোডাক্টগুলোকে খুব তাড়াতাড়ি বিক্রি করা যাবে। 

বর্তমানে মানুষ রাস্তা দিয়ে হাঁটার টাইমে হাতে ফোন নিয়ে থাকে। অর্থাৎ তারা বাইরের দুনিয়ার থেকে বেশি ইন্টারনেটের সাথে জড়িত। এখন আপনি যদি এই ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে আপনার মার্কেটিং টা আরো বড় করতে পারেন। তাহলে আপনার ইনকাম আরো বেড়ে যাবে। আর সেই সঙ্গে আপনার ভিডিও যত মানুষ দেখবে তাতেও আপনার ইনকাম বাড়বে। তাই সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং করে খুব সহজেই টাকা ইনকাম করা যায়।

লোগো ডিজাইনঃ

লোগো ডিজাইন গ্রাফিক ডিজাইনের একটি অংশ। গ্রাফিক ডিজাইন হল ফ্রিল্যান্সিং এর একটি অংশ। এই গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনেকে টাকা ইনকাম করে। বিভিন্ন ভাগ রয়েছে এর মধ্যে লোগো ডিজাইন একটি। বিভিন্ন চ্যানেলের কিংবা কোম্পানির লোগো ডিজাইন করে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

লোগো ডিজাইন এর কাজ শিখার পর আপনি আপনার একটি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে, আপনার ডিজাইন করা স্যাম্পল গুলো রাখতে পারেন। এতে করে মানুষ আপনার ডিজাইনগুলো দেখে আপনাকে অর্ডার দিতে পারে। আর তারা কিছু টাকার বিনিময়ে আপনাকে লোগো ডিজাইন করতে দিবে। আর এর থেকে আপনার ইনকাম শুরু হতে থাকবে। এভাবে আপনার অর্ডার যত বেশি আসতে থাকবে তত বেশি বাড়বে ইনকাম হবে।

টি -শার্ট ডিজাইনঃ

লোগো ডিজাইন এর মতো এটিও গ্রাফিক ডিজাইনের একটা অংশ। বিভিন্ন টি-শার্টে ডিজাইন করে এগুলোকে সেল করে ইনকাম করা যাবে। আপনি চাইলে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে টি-শার্ট ডিজাইন করে বিক্রি করতে পারেন। 

আবার অন্যান্য কোম্পানি থেকে আপনাকে ডিজাইন করার জন্য বলতে পারে, সেই ডিজাইনগুলো করে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। প্রফেশনার পর্যায়ে যদি কাজ করতে চান তাহলে, আপনাকে সেই কাজ অবশ্যই অনেক দক্ষ হতে হবে।

থাম্বেল ডিজাইনঃ

ইউটিউবে কোন ভিডিওতে ক্লিক করার আগে, সেখানে সেই ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু দেওয়া থাকে। অর্থাৎ টাইটেল দেওয়া থাকে। সেটিকে বলে থাম্মেল এটি দেখে অনেকে আকর্ষিত হয়ে সে ভিডিওটি দেখে। অনেকে এই থাম্বেল ডিজাইন করতে পারেন না। 

আপনারা চাইলে যে কোন অনলাইন ইনকামের অ্যাপ যেমনঃ ফিবার, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি আর বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ রয়েছে। কাজ করতে পারেন। যারা ডিজাইন করতে পারেনা তারা ডিজাইন করার জন্য অন্যদেরকে কাজ দিয়ে থাকে। এড বিনিময়ে তাদের টাকাও দেওয়া হয়। আপনিও এই কাজটি করে রাখা ইনকাম করতে পারেন।

হোয়াইট বোট এনিমেশনঃ

বর্তমানে হোয়াইটবোর্ড এনিমেশনের ভিডিও অনেক বেশি পপুলার হচ্ছে। যে কোন বিজনেস কিংবা কোম্পানিকে আর ডেভলপ করার জন্য এই হোয়াইট বোর্ড এনিমেশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ হোয়াইট বোর্ড এনিমেশনের তারা একটি বিজনেস কিংবা একটি কোম্পানির প্রমোশন করানো যাবে। 

কারণ সেখানে সে কোম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে ওয়াইডবোর্ড এনিমেশন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এতে করে সে কোম্পানির অনেক লাভ হবে। আর এই ভিডিওর জন্য আপনাকে আপনার পারিশ্রমিকও দেওয়া হবে। এই হোয়াইট বোর্ড এনিমেশন করা আপনি ইনকাম করতে পারবেন।

ব্লগিং করেঃ

আমরা যখন গুগলে কোন কিছু উত্তর জিজ্ঞেস করি তখন, আমাদের সামনে বিভিন্ন উত্তরের লিস্ট দিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো কিন্তু google নিজে নিজে করে না। কিছু মানুষের দ্বারা এগুলো করানো হয়। আপনিও চাইলে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি চাইলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাথে কাজ করতে পারবেন কিংবা আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে। সেখানে ব্লগিং এরকাজ শুরু করতে পারবেন।

ডাটা এন্ট্রি করেঃ

ডাটা এন্ট্রি এমন একটি কাজ যেখানে কম্পিউটারের মাধ্যমে একটি প্রোগ্রামে তৈরি করা হয়। যে কোন ধরনের লেখা হতে পারে যেগুলো কম্পিউটারের টাইপ করে সেগুলো কোন একটি প্রোগ্রাম হিসেবে তৈরি করে ফাইলে সংরক্ষণ করে রাখা। এই কাজকে মূলত ডাটা এন্ট্রির কাজ বলা হয় । ডাটা এন্ট্রি করতে হলে যে কোন ফ্রিল্যান্সারে অ্যাপ ওয়েবসাইটের সাথে কাজ করতে পারেন।

অ্যাপ তৈরি করেঃ

বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ তৈরি করা। যেমন ধরনের ইউটিউব, ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম। এই অ্যাপগুলোকে প্রথমে তৈরি করা হয়েছিল। এরপর এগুলো যখন জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে তখন, যারা এই অ্যাপগুলো তৈরি করেছিল তাদের ইনকাম অনেক বাড়তে থাকে। তেমনি আপনি এক ধরনের অ্যাপ তৈরি করে তার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন। 

আপনি যেকোন বিষয়ের উপরে অ্যাপ তৈরি করতে পারেন। যেমন বাচ্চারা গেম খেতে পছন্দ করে, আপনি গেমের কোন একটি অ্যাপ তৈরি করতে পারেন। এরকম আরও বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা যায়। এটি করতে হলে আপনাকে এ বিষয়ে দক্ষ হতে হয়। এরপর আপনার এত জনপ্রিয় হবে আপনার ইনকাম অন্তত বাড়তে থাকবে।

আর্টিকেল রাইটিংঃ

বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল লিখে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। এটি করতে হলে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে কাজ করতে পারেন। কিংবা নিজের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করেও কাজ করতে পারেন। বাংলা কিংবা ইংলিশ যেকোনো ধরনের আর্টিকেল আপনি লিখতে পারেন। 

কিন্তু কোন একটি ওয়েবসাইডে গিয়ে কাজ করতে হলে আপনাকে এসব বিষয়ে অবশ্যই অবশ্যই দক্ষ থাকতে হবে। এগুলো লিখার বিনিময়ে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণে কিছু টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এভাবে লেখার মাধ্যমে আপনার ইনকাম আরো বাড়াতে পারবেন। আপনার রাইটিং স্কিল যত ভালো হবে আপনার ইনকাম তত ভালো হবে।

ফ্রিল্যান্স ট্রান্সলেটরঃ

ফ্রিল্যান্সিং বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হল ফ্রিল্যান্স ট্রান্সলেটর। মানে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন গুলো ট্রান্সলেট ক... বিভিন্ন কোম্পানিগুলো তাদের বিজ্ঞাপন গুলো ট্রান্সলেট করার জন্য ফিগার ট্রান্সলেটরদের খোঁজেন। আপনি যদি একাধিক ভাষায় পারদর্শ হয়ে থাকেন তাহলে এই ফ্রিল্যান্স ট্রান্সলেটরের কাজ করতে পারবেন। এ ফ্রিল্যান্স ট্রান্সলেশন অন্যান্য কাজের থেকে একটু সহজ। ফ্রিল্যান্সারদের কাছে অনেক জনপ্রিয় একটি কজ।

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টঃ

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে এমন একটি কাজ তার মাধ্যমে মোবাইলের বিভিন্ন ডিভাইস কিংবা ফোনে অ্যাপ গুলোকে আরো ডেভলপ করা হয়। এগুলো এমন ভাবে তৈরি করা হয় যেন বিভিন্ন ফোন কিংবা কম্পিউটারের ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারে। আপনারা চাইলে এই মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করে ইনকাম করতে পারেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক উপরে আমরা যে ১৫ টি সাইটের কথা বলেছি এগুলো সবগুলো কাজে মোবাইলের মাধ্যমে করা সম্ভব। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করতে চান এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনি অবশ্যই ইনকাম করতে সক্ষম হবেন। আজকের এই পর্বটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url