বয়লার মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ

প্রিয় পাঠক আপনি কি জানেন বয়লার মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই পর্ব আপনার জন্য আজকের এই পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন বয়লার মুরগির ডিমের পুষ্টিগণ সম্পর্কে।


তাহলে দেরি কিসের জন্য এখনই জেনে নেই ব্রয়লার মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। বয়লার মুরগির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে ও আলোচনা করা হবে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

বয়লার মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণঃ

ডিম এমন একটি খাবার যেটি আমাদের প্রতিদিনের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে অনেক সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশ রয়েছে উচ্চমানের জৈব আমিষ, এছাড়াও রয়েছে ক্যালসিয়াম, কুসুমে রয়েছে স্নেহ পদার্থ, ভিটামিন, প্রোটিন, মেলাটোনিন, ট্রিপটাফেন ইত্যাদি আরো পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এগুলো সব বয়সের মানুষদের জন্য প্রয়োজনীয়। 

এমনকি এটি শিশুর শারীরিক বিকাশ, হার গঠনে ও ব্রেনশক্তি বাড়াতে অনেক কার্যকরি। এছাড়াও ডিমের রয়েছে ভিটামিন এ যা  দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। এজন্য শিশুর প্রতিদিনের খাবার একটি করে হলেও ডিম রাখা উচিত। কারণ এটি আমাদের প্রতিদিনের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুনের চাহিদা পূরণ করতে পারে। নিয়মিত ডিম খাওয়াতে হবে তা কিন্তু নয়। এটি বয়স্কদের জন্যও অনেক প্রয়োজনীয়। তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিনের খাদ ও তালিকায় ডিম রাখার।

বয়লার মুরগির ডিমের উপকারিতাঃ

অন্যান্য খাবারে তুলনায় ডিমে অনেক পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের দেহের শারীরিক বিকাশের  জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। এছাড়াও ডিম খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের শক্তি আরো বৃদ্ধি পায়। তাই ডিম থেকে আমরা কাজ করার সত্ত্বেও পেয়ে থাকে। এইরকমই আরো উপকারিতা রয়েছে ডিমের। তাহলে চলুন জেনে নেই ডিমের আরো কিছু উপকারিতা।

ব্রেনের স্বাভাবিক বিকাশে সাহায্য করে

ডিমে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ভিটামিন। এগুলো একটি শিশুর ব্রেনের স্বাভাবিক বিকাশে অনেক সাহায্য করে। তার শিশুদের নিয়মিত ডিম খাওয়াতে হবে। এই প্রোটিন ভিটামিন ছাড়া আরো কিছু পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যেগুলো ব্রেনের কাজ করার শক্তি আরো বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাদ ও তালিকায় ডিম রাখা প্রয়োজন। এটি তাদের ব্রেনের স্বাভাবিক বিকাশে সাহায্য করে। এর ফলে তাদের মেধা শক্তিও অনেক বৃদ্ধি পায়।

হাড় ক্ষয় রোধ ও হাড় গঠনে সাহায্য করে

ডিমে রয়েছে ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। ক্যালসিয়াম শরীরের হাড়ের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও শিশু স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য হাড়ের গঠনের খুব প্রয়োজন। ডিমে থাকায় কেয়ার শ্যাম শিশুর হাড় গঠনে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও বয়স হলে হারে বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ের চিহ্ন দেখা যায়। যার ফলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের বিভিন্ন ধরনের ব্যথার সমস্যা হয়। 

বেশি মেয়েদের সমস্যা হয়। তাই মেয়ে ও বয়স্কদেরও নিয়মিত ভাবে ডিম খেতে হবে। ডিম খাওয়ার ফলে তাদের হারের যে কোন সমস্যা খুব সহজে দূর হয়ে যাবে। আর এছাড়াও এটি শিশুদের হাড় মজবুত করতে অনেক সাহায্য করে।

দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে

ডিম দৃষ্টিশক্তি ও বৃদ্ধি করে। কারণ ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাদের চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, এটি তাদের চোখের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করবে। এছাড়াও এটি শিশুদের দৃষ্টিশক্তি আরো বৃদ্ধি করতেও অনেক সাহায্য করে।

দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে

শরীর দুর্বলতা সমস্যা প্রায় অনেকেরই রয়েছে। তারা যখন চিকিৎসকের কাছে যান তখন চিকিৎসকেরা তাদের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এছাড়াও হরমোনের কার্যকারিতার ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। 

এছাড়া এটি দেহের শক্তি বৃদ্ধি করত অনেক সাহায্য করে। তাই তাদের শরীর দুর্বলতার মত সমস্যা রয়েছে তারা ডিম খেতে পারেন।

মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে

ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপটোফেন। এগুলো মাথা ঠাণ্ডা রাখতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মন ভালো রাখতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ডিম অন্যান্য সমস্যা দূর করার পাশাপাশি মন শান্ত করতেও অবদান রাখে। এ থেকে বুঝা যায় ডিম আমাদের জন্য ঠিক কতটা উপকারী।

হার্টের সমস্যার ঝুঁকি কমায়

ডিম শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলর আর মাত্র কমাতে সাহায্য করে। শরীরে খারাপ কমে গেলে টো কিংবা হার্ট অ্যাটাকের মত অনেক সমস্যা রে ঝুঁকি কমে যায়। ফলে হার্টের সমস্যার ঝুঁকিও কমে যায়। আর ডিম শুধু শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় না বরং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে। তাই এটি হাট ভালো রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পাকস্থলের সমস্যা দূর করে

ডিম পাকস্থলের যে কোন সমস্যা খুব সহজে দূর করতে পারে। ডিম শরীরের পেশিগুলোকে আর ওর শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে। এছাড়া এটি পাকস্থলী সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অনেক সাহায্য করে।

ভালো ঘুমের জন্য উপকারী

ডিমের রয়েছে মেলাটোনিনের একটি ভালো উৎস। এই মেলাটোনিন ঘুমের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্নায়ু কোষের কার্যকারিতা আর উন্নত করতে সাহায্য করে। ফলে নায়ক ঘুমাতে যাওয়ার জন্য সংকেত দিতে থাকে। এ কারণে ঘুমের যদি কারো সমস্যা থেকে থাকে, তাদের ডিম খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন। এটি তাদের ঘুমের যে কোন সমস্যা দূর করতে অনেক সাহায্য করবে।

বয়লার মুরগী সাদা ডিম বেশি উপকারী নাকি বাদামে ডিমের উপকারিঃ

বাজারে দুই ধরনের ব্রয়লারের ডিম পাওয়া যায়। একটি হল সাদা এবং একটি বাদামি। তাই অনেকেই ডিম কেনার সময় বিভ্রান্ত হন যে কোন ডিমটি কেনা উচিত। দুটো ডিমের আকাশ সমান হল বাজারে এই ডিমের দামের পার্থক্য রয়েছে। তাই অনেকে মনে করে হয়তো বাদামী ডিমে পুষ্টিগুণ বেশি রয়েছে। তাই হয়তো এই ডিমের দাম বেশি। আসলে এই ডিমের দামের পার্থক্যেরও কিছু কারণ রয়েছে।

ডিমের রং বাদামী হয় মূলত মুরগিরে জরায়ুর মধ্যে থেকে। এটিকে বলে সেল গ্লান্ড। অনেকটা ঘরে যেমন যে কোন জিনিসের উপর রং করা হয় তেমনি এই ডিমের ওপর কিছু রংযুক্ত হয়। আসলে বাদামে ডিমের দামের পেছনে একটি রহস্য রয়েছে। সেটি হলঃ সাদা ডিমের থেকে বাদামী রঙের ডিম দিতে বেশি পরিমাণে পুষ্টি ও শক্তি খরচ হয়। এ কারণে বাণিজ্যিকভাবে পালন করা বাদামে ডিমটা মুরগির চাহিদা অনেক বেশি।

তবে সাদা এবং বাদামি ডিমের পুষ্টির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এমনকি গবেষণা এর কোন অমিল পাওয়া যায়নি। তাই সাদা কিংবা বাদামি ডিম নিয়ে কোন বিভ্রান্তিতে পড়তে হবে না।

বয়লার মুরগির ডিমের অপকারিতাঃ

ডিম একটি সুস্বাদু খাবার এবং ভালো পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার। তবুও এর কিছু খারাপ দিক রয়েছে। এছাড়া বয়লার মুরগিকে অধিক পরিমাণে পুষ্টিগুণ সমগ্র খাবার খাওয়ানো হয়। যেন তারা খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় এবং ওজন বেশি হয়। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভালো কিন্তু এর বেশি প্রভাব ও স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। তারমানে যখন বয়লার মুরগিকে অধিক পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হয় তখনও এটি ভালো কোন দিক নয়। এর ফলে বয়লার মুরগির কিছু কিছু খারাপ দিক রয়েছে।

  • বয়লার মুরগিকে অধিকচর্বি যুক্ত খাবার খাওয়ানো হয়। এর ফলে এই ডিমের অধিক পরিমাণে চর্বি থাকে। আর এ চর্বিগুলো যদি আমাদের শরীরে অতদিন পরিমাণে যায় তাহলে এটা আমাদের শরীরের জন্য খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
  • যাদের ডিমে এলার্জি সমস্যা রয়েছে, তাদের বয়লার মুরগির ডিম থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ বয়লার মুরগির ডিম খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জি সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
  • যেহেতু বয়লার মুরগী ফার্মে অবস্থান করে। আর এ ফার্মে অনেক পরিমাণে জীবাণু থাকে। এগুলো ডিমেও যেতে পারে। তাই বয়লার মুরগির ডিম থেকে যেকোনো ধরনের আমাদের শরীরেও যেতে পারে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা এই পর্ব শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে লাগবে। আজকের এই আর্টিকেল থেকে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url