ত্বকের জন্য কোনটা বেশি উপকারী - তেল নাকি লোশন
আগে যখন বর্তমানের মত এত আধুনিক ব্যবস্থা ছিল না তখন ত্বকের শুষ্কতার সমস্যা দূর
করার জন্য তেলই ব্যবহার করা হতো। আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বক কোমল
করে তা কিন্তু নয়। বরং এটি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য
করে।
এবং অনেক রোগের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। কিন্তু বর্তমানে তেলের ব্যবহার খুব
কমে গেছে। কিন্তু লোশনও আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তাই এ নিয়ে অনেকের
মধ্যে বিভ্রান্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ভূমিকা
অনেকে বলেন ত্বকের জন্য তেল ব্যবহার করা অনেক বেশি উপকারি। আবার অনেকে বলেন
ত্বকের জন্য তেলের তুলনায় লোশন ব্যবহার করাই ভালো। একেকজনের একেক রকম কথা।
তাহলে কোন কথা বিশ্বাস করব। তাই অবশ্যই জানতে হবে আমাদের ত্বকের যত্নে তেল
ও লোশন এর উপকারিতা। আগে যখন সব জিনিস আধুনিক ছিল না তখনকার মানুষ তেল
ব্যবহার করতেন।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা
কারণ এই তেলই ছিল একমাত্র তাদের শুষ্ক কাজের সমস্যার সমাধান করার জন্য। তাহলে
চলুন জেনে নেই আমাদের ত্বকের জন্য তেল বেশি ভালো নাকি লোশন।
ত্বকের যত্নে তেলের উপকারিতাঃ
এই আধুনিক সময়ে তেল খুব কম মানুষই ব্যবহার করেন। কারণ এখন শুষ্কতম সমস্যা দূর
করার জন্য আছে লোশন। কিন্তু এখনো অনেকে তেলের ব্যবহার করেন। বিভিন্ন তেলের
বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। একেক তেল একেক ধরনের উপকারে আসে। তাই আমাদের জানা উচিত
কোন তেলের কোন কোন উপকারিতা।তাহলে চলুন জেনে কোন তেলের কোন কোন উপকারিতা রয়েছে।
ত্বকের যত্নে নারিকেল তেলঃ
নারিকেল তেল তোকে এক ধরনের প্রাকৃতিক ময়শ্চেরাইজার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বকের
শুষ্ক চামড়া দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে। এমনকি এটি বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, রোদে ত্বক পুড়ে যাওয়া ও অ্যাজমা
সমস্যার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেক আগে নারকেল তেল আয়ুর্বেদিক
চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আরো পড়ুনঃ কালো ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
তাই এর উপকারিতা রয়েছে। এছাড়াও এ তেল আমাদের মাথার ত্বক ভালো রাখত সাহায্য
করে। ফলে চুল পড়া ও চুল দ্রুত বৃদ্ধি না হওয়ার সমস্যা ও দূর করতে সাহায্য করে।
মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে পেছনে ধরণের চুলকানোর সমস্যা দেখা দেয়। এ ধরনের
সমস্যার সমাধানে নারকেল তেল অনেক উপকারী। এসব কারণে নারকেল তেল আমাদের ত্বকের
জন্য অনেক উপকারী।
ত্বকের যত্নে সরিষার তেলঃ
সরিষার তেল ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়া তোকে যে
সব বলিরেখা থাকে সেগুলোও কমাতে সাহায্য করে। গরমের সময় অনেকেই ঘামাচি
সমস্যা হয়ে থাকে। এই ঘামাচির সমস্যার সমাধানের সরিষার তেল অনেক ভাল কাজ করে।
এছাড়াও চুলকানির সমস্যা দূর করতে অনেক উপকারি।
সরিষার তেলে রয়েছে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ফাঙ্গাল উপাদান। তাই এগুলো
আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। তাই ত্বকের
যত্নে সরিষার তেলের ও অবদান রয়েছে। এছাড়া শীতকালে শরীর গরম রাখতে এই তেল অনেক
সাহায্য করে। এই তেল ত্বকে মাখার পর কিছুক্ষণ মালিশ করলে, শরীর খুব
তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায়।
তাই ঠান্ডা জড়িত কোন সমস্যার জন্যও গলায় সরিষার তেল গরম করে মালিশ করা
হয়। এমনকি বাচ্চাদের বুকেও মালিশ করা হয়। এতে করে ঠান্ডা জনিত রোগ খুব সহজে কমে
যায়।
ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলঃ
অলিভ অয়েল ত্বকের সুরক্ষায় অনেক কার্য করে অবদানে রাখে। এছাড়াও এতে অ্যান্টি
ইনফ্লামেটররি রয়েছে এগুলো ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমরা হয়তো সকলে জানি
উপাদান আমাদের ত্বকের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ফলে
আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। এছাড়াও এটি চর্ম রোগের
সমস্যা দূর করে।
তাই অলিভ অয়েল ত্বকের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা ধরে রাখার পাশাপাশি ত্বকের আরও বিভিন্ন
সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও অলিভ অয়েলের অন্যান্য তেলে
তুলনায় অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে। কারণ অলিভ অয়েল অনেকগুলো জিনিসের
মিশ্রণে বানানো হয়। যেগুলো আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।
ত্বকের যত্নে কালিজিরার তেলঃ
ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে কালোজিরা তেল অনেক উপকারী। এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে
সাহায্য করে। এমনকি এটি গবেষণা জানা গেছে। আবার আরেকটি গবেষণায় ও জানা গেছে যে,
দিনে দুইবার করে কালিজিরার তেল যদি তোকে মাখা যায় তাহলে, একজিমা কমে যায়।
এছাড়াও এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে। তাকে বিভিন্ন ধরনের
দাগ কিংবা বোলিরেখা দূর করতেও অবদান কালিজিরার তেলের রয়েছে। আবার ফক্স
কিংবা বসন্ত রোগের সমস্যার জন্য কালিজিরা তেল অনেক ভালো।
ত্বকের যত্নে লোশনের ব্যবহারঃ
ত্বকে যখন শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়। তখন ত্বকের প্রয়োজন বাড়তি যত্নের।
ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে প্রয়োজন মোশচারাইজারের। কোমল ও মলায়ম ত্বক
চাইলে লোশন ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু লোশন কেন ব্যবহার করব এবং লোশনের উপকারিতা
কি কি। আর দিনে কয়বার লোশন ব্যবহার করতে হবে।
ত্বকের যত্নে লোশন উপকারিতাঃ
নিয়মিত লোশন ব্যবহারে লোশন আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। রুক্ষ
তার হাত থেকে সুরক্ষা পেতে সাহায্য করবে। ত্বকের আদ্রতা কমে গেলে অনেকেরই হাত, পা
কিংবা শরীরে তা খসখসে হয়ে যায়। তাই নিয়মিত লোশন ব্যবহারে এই সমস্যাটা দূর
হয়ে যায়। এ ছাড়া রসুন ব্যবহারে আমাদের ত্বকে বাইরের যে সব ময়লা এসে পড়ে।
এগুলো খারাপ প্রভাব থেকে সাহায্য করার লোশন।
\
লোশনে বিভিন্ন হায়লুরনিক এসিড ব্যবহার করা হয়। এগুলো ত্বকের আদ্রতা ধরে
রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও লোশন ত্বকের ফ্রি রেডিকেলগুলো দূর করতে সাহায্য
করে।তাই ত্বকের সুরক্ষায় লোশন আমাদের জন্য অনেক উপকারী।
দিনে কয়বার লোশন ব্যবহার করা উচিতঃ
তোকে আদ্রতা ধরে রাখতে হলে, দিনে দুই থেকে তিনবার লোশন ব্যবহার করা যেতে
পারে। রাতের তুলনায় দিনে ত্বকের রসুনের প্রয়োজনীয়তা বেশি হবে। কারণ কে
আপনি দিনের বেলা বাহিরে থাকেন। এতে করে আপনার ত্বকের ওপর শুষ্কতার সমস্যা বেড়ে
যায়। চার দিনের বেলা অবশ্যই লোশন ব্যবহার করতে হবে।
অনেকে মনে করেন শুধু শীতকালে লোশন এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু না, শীতকালের
পাশাপাশি গরমকালে হলেও লোশন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারন কি গরমের সময় অতিরিক্ত
সূর্যের আলো থেকে বাঁচার জন্য লোশন আমাদের অনেক সাহায্য করে। তাই শীতের পাশাপাশি
গরমের সময়ও লোশন আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়।
তেল ও লোশনের ব্যবহারঃ
তেল ও লোশন কেউ কারো কোন অংশে কম নাই। দুটি আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। তাই
তেল ও লোশন দুটি একই সাথে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি আমাদের ত্বকের জন্য না
খারাপ প্রভাব ফেলবে না। বরং এটি আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তাই আপনারা
ত্বকের যত্নে তেল ও লোশন দুটোই ব্যবহার করতে পারেন।
তীর ও লোশন এর ব্যবহার করার সঠিক সময় হল গোসলের পর। কারণ আদ্রত ত্বকে এগুলো ভালো
কাজ করে। আপনারা চাইলে দিনে দুইবার লোশন আর বাকি দুইবার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
তেল ও লোশন একই সাথেব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে লোশন এরপর তেল ব্যবহার
করতে হবে।
রসুন যেমন আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তেমনে তেলও আমাদের ত্বকের জন্য অনেক
উপকারী। তেল আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই তেল ও লোশন
দুটিই ব্যবহার করা উচিত। দুটি এ ব্যবহার করার ফলে, আমাদের ত্বকের বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
গরমের তুলনায় তেল শীতে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই চাইলে
গরমের সময়ে তেল নাও ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এমনিতে চারপাশে অনেক
গরম। আর এতে আমাদের শরীর আরো গরম করে। তাই গরমের সময় তেল না ব্যবহার করতে পারেন,
শুধু লোশন ব্যবহার করলেও হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url