প্রতিদিন কতো পরিমাণে ঘি খাওয়া উচিত
ঘি এর নাম শুনলে অনেকেই মনে করেন যে, ঘি খেলে চর্বি বাড়ে। বিভিন্ন
ধরনের গ্যাসের সমস্যা হয়। ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেও ভালো নই। এ ধারণাটি
কিন্তু সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ঘি খাওায়ার যেমন অপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু
উপকারিতাও রয়েছে।
সবদিক না জেনেই ঘি খাওয়ার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো না এটি বলা উচিত নয়।
কারণ অনেক ক্ষেত্রে ঘি খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী। আমাদের শরীরের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ভালো করতে সাহায্য করে এই ঘি।
ঘি এর উপকারিতা অপকারিতা ও ব্যবহার
ঘি এর যদি ভালো উপকারিতা পেতেই হয় তাহলে এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
সচেতন থাকতে হবে। তাহলে ঘি এর অপকারিতা থেকে বেঁচে থাকা যাবে। সেই সঙ্গে এর
উপকারিতা গুলো পাওয়া যাবে। ঘি তে বিভিন্ন পুষ্টি গুন রয়েছে তা স্বাস্থ্যের
পক্ষে সত্যি অনেক উপকারী।
ঘি এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি এসিড রয়েছে। তাই অনেকেই মনে করে ঘি
খেলে ওজন ও চর্বি বেড়ে যায়। কিন্তু এ ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীরের জন্য অনেক
উপকারী। এছাড়াও গিয়ে এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই,
ভিটামিন কে । এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম , ফসফরাস, সোডিয়াম, প্রোটিন।
আরো বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে ঘি এর মধ্যে। এসব কারণে গিয়ে
আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক উপকারি।
ঘরেই ২ উপকরণে তৈরি করুন খাঁটি ঘি
বাহিরের বিভিন্ন ঘিতে অনেক কিছু দেওয়া থাকে। আবার অনেক ভেজাল দেওয়া থাকে।
যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য মোটেও উপকারী নয়। তাই আপনারা চেষ্টা
করবেন বাড়িতে ঘি তৈরি করার। কিন্তু যারা বাড়িতে ঘি তৈরি করতে চান না
কিংবা পারেন না। তারা বাজার থেকে ঘি আনতে পারেন, কিন্তু সেই ঘি টা ভালো
কিনা সেটা জানার পর। সেটাকে কিনতে হবে। তাই আপনি যে ঘি কিনবেন সেখানে A2
dessi ঘি লেখা থাকে। কারন বাড়িতে তৈরি যেসব ঘি রয়েছে সেগুলোতে A2
প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে।
ঘি খেলে যাদের হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি
অনেকে মনে করেন যে, সকলের পক্ষে ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়।
কিন্তু এ ধারণাটি ভুল। এমন কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের জন্য ঘি
খাওয়া মোটা উচিত নয়। তারা যদি নিয়মিত ঘি খায় তাহলে যে কোন ধরনের
সমস্যা হতে পারে। তাই বলে সবার জন্য কিন্তু এক নয়। তাই ঘি খাওয়া থেকে
বন্ধ করার আগে জেনে নেওয়া উচিত কাদের ঘি খাওয়া উচিত নয় এবং ঘি খেলে এর
অপকারিতা গুলো কি কি।
তাহলে যাদের ঘি খাওয়ার ফলে, কোন ধরনের সমস্যা হবে না। তারা ঘি খাওয়া বন্ধ করবে
না। তাদের ফলে যেসব উপকারিতা গুলো পাওয়ার ছিল। সেগুলো তারা পাবে। তাই অবশ্যই
জেনে নেওয়া উচিত যে, কাদের ঘি খাওয়া যাবেনা।
পেটের সমস্যা রয়েছে যাদেরঃ
যাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। তাদেরঘি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
কারণ ঘি যেহেতু দুধ থেকে তৈরি হয় আবার রাতে দুধ খাওয়ার ফলেও বিভিন্ন ধরার
গ্যাসের সমস্যা হয়। সে দূর থেকে যদি আরো জাল দিয়ে ঘি তৈরি করা হয় । তাহলে এর
ফ্যাটের পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে। তাই তাদের আগে থেকেই পেটের সমস্যা রয়েছে। তারা
ঘি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
আরো পড়ুনঃ পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
আবার এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, ঘি খেলে তো হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাহলে পেটের
সমস্যা থাকলে ঘি খাওয়াতো তার জন্য ভালো। যাদের আগে থেকে কোন পেটের সমস্যা
নেই, তাদের জন্য ঘি খাওয়া উপকারী। কিন্তু যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তারা যদি
খায় তাদের জন্য কিন্তু ঘি খাওয়া ভালো নয়। এমন কিছু উপাদান রয়েছে যার পেটের
সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলেঃ
এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, ঘি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য
করে। একই সঙ্গে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। ঘেটে প্রচুর
পরিমাণে কোলেস্টেরল রয়েছে। কোন কিছুর বেশি মাত্রা শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো
নয়। সেটা ভালো হোক কিংবা খারাপ হোক। তাই ঘি খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।
যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছেঃ
যাদের আগে থেকেই লিভারের সমস্যা রয়েছে । তাদেরও ঘি খাওয়া উচিত নয়। ঘি
খাওয়ার ফলে সুস্থ লিভারের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ থেকে বড় কোন ধরনের
সমস্যা হতে পারে। আবার যাদের লিভার সিরোসিসের সমস্যা রয়েছে। তাদের কেউ এই ঘি
খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ওজনের সমস্যা রয়েছে তাদেরঃ
যাদের আগে থেকে বাড়তি ওজনের সমস্যা রয়েছে। তাদেরকেও ঘি পরিমান মত খেতে হবে।
কারণ ঘেটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড. যেটির চর্বির সংখ্যা আরো
বাড়িয়ে দেয়. তাই তাদের আগে থেকে বেশি ওজনের সমস্যা রয়েছে। তাদের ঘি পরিমাণ
মত খেতে হবে। যেন এর উপকারিতা গুলোও পাওয়া যায় এবং অপকারি যেন না হয়।
ঘি খাওয়ার উপকারিতাঃ
বাড়িতে যখন ঘি রান্না করা হয়। তখন চারিপাশে শুধু ঘি এর গন্ধই পাওয়া যায়।
মনে হয় সব যেন গিলে খেয়ে নিই। যে এতটা সুন্দর গন্ধ বের হয় ঘিয়ের। তাই
খেতে অনেকেই পছন্দ করে। গরম ভাতে ঘি মাখিয়ে খেলে ভাতের স্বাদটা যেন আরো
বেড়ে যায়। এছাড়াও অনেক রান্নায় ঘি ব্যবহার করা হয়। ভি রান্নার স্বাদ আরো
বাড়িয়ে তোলে। তাই বিভিন্ন রান্নায় তেলের বদলে ঘিও ব্যবহার করা
হয়।
এটি রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি রান্নাটা কে আরো সুগন্ধময়ি করে তোলে।
তাই সেই খাবারের স্বাদটা অন্যরকম হয়।কিন্তু আবার অনেকেই মনে করেন। ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। এটি
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। এই ধারণাটি কিন্তু ভুল। সবার জন্যই ঘির খাওয়া
ক্ষতিকারক নয়। এমন কিছু কিছু নির্দিষ্ট মানুষ রয়েছে যাদের ঘি খাওয়া
যাবেনা। তারা বাদে সকলেই ঘি খেতে পারে।
ঘি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক ভালো। তাই
খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ঘি
ঘিতে রয়েছে এক বিশেষ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আমাদের শরীরের বিভিন্ন
ধরনের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বেড়ে যায়। এছাড়া এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ
প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ঘিতে থাকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বিভিন্ন
ধরনের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো নির্মূল করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকও
সুস্থ থাকে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
আমরা সকলেই জানি যে, ভিটামিন এ আমাদের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
এছাড়াও বয়স বাড়ার জন্য যাদের চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। তাদের সমস্যা
দূর করতেও ভিটামিন এ অনেক সাহায্য করে। চোখের বিভিন্ন সমস্যার জন্যও অনেক
বিশেষজ্ঞরা ভিটামিন এ যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।ঘিতেও রয়েছে ভিটামিন এ
এর একটি ভালো উৎস। তাই এটিও দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
চুলের সমস্যা দূর করে
আমরা হয়তো অনেকেই দেখেছি যে, চুলের বিভিন্ন সমস্যায় অনেকেই ভিটামিন ই
ক্যাপসুল ব্যবহার করেন। তার ভিটামিন-ই আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারে। ভিটামিন
এ আমাদের শরীরে এক ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যেটি আমাদের চুল
সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।ঘিতেও
রয়েছে ভিটামিন ই। তাই এটিও চুলের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন কতো পরিমাণে ঘি খাওয়া উচিতঃ
যে কোন জিনিসেরই একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। তাই প্রতিদিন সে নির্দিষ্ট
মাত্রা অনুযায়ী ঘি খাওয়া উচিত। তাহলে এর উপকারিতা গুলো পাওয়া যাবে এবং কোন
ধরনের ক্ষতি হবে না। তাই অবশ্যই জানা উচিত আমাদের প্রতিনিয়ত ঠিক কত পরিমানে ঘি
খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন ২-৩ চামচ ঘি খাওয়া ভালো। আবার অনেকে আছেন যারা নিয়মিত ঘি খান না।
অনেকদিন পর পর ঘি খান। তা্রাও কিন্তু বেশি পরিমাণে ঘি খেতে পারবেনা। একবারে
বেশি পরিমাণে ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেও ভালো নয়। তাই আপনি যেই দিনই
খান না কেন ২-৩ চামচের মধ্যে খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে ঘি খাওয়ার ফলে কোন
ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url