পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
পাঙ্গাস মাছ হলো এমন এক ধরনের মাছ যা অতি সহজে রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়াও এটি রান্নার স্বাদ আরো বাড়িয়ে তোলে। পাঙ্গাস মাছে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
এছাড়া এ মাছে কাটা কম থাকায় খুব সহজে খাওয়া যায়, বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য তো আরও সহজ। এছাড়াও এটি শিশুদের শারীরিক বিকাশে অনেক সাহায্য করে সে সঙ্গে এটি বৃদ্ধদের জন্য অনেক উপকারী।
ভূমিকা
কিন্তু এ মাছের কিছু গন্ধের জন্য অনেকে খেতে পছন্দ করেন না। তবে এর গন্ধ দূর করার জন্য কিছু রান্নার পদ্ধতি রয়েছে। সে পদ্ধতি অবলম্বন করে এ মাছের গন্ধ দূর করা যায়। বিশেষ করে যারা বৃদ্ধ তাদের জন্য এই মাছ খাওয়া অনেক সহজ। তাই আগে থেকেই পাঙ্গাস মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়া পাঙ্গাস মাছের কিছু ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে।সেগুলো অবশ্যই জানা উচিত।জানতে হলে পুরো পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পাঙ্গাস মাছ খেলে কি উপকার হয়ঃ
পাঙ্গাস মাছের পুষ্টি অন্যান্য মাছের থেকে অনেক বেশি রয়েছে। গবেষণায় জানা গেছে পাঙ্গাস মাছে অ্যামাইনো এসিড বেশি রয়েছে, অন্যান্য মাছের তুলনায়। আর এ কারণে বাংলাদেশে থাকা আমিষের মান অনেক উন্নত। তাই গবেষকেরা বলেন, অন্যান্য মাছের থেকে পাঙ্গাস মাছের অনেক পরিমাণে আমিষ রয়েছে। এছাড়া রুই ও তেলাপিয়া মাঝেও উচ্চমানের আমিষ রয়েছে।
কিন্তু এগুলোর থেকে পাঙ্গাস মারছে অধিক পরিমাণে আমিষ রয়েছে। পাঙ্গাস
মারছে আমিষের পাশাপাশি রয়েছে ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও চর্বি। এগুলো
আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে পাঙ্গাস মাছ
পাঙ্গাস মাছ রক্তে খারাপ কোলেস্টের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রক্তে
ভালো কোলেস্টের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে খারাপ কলেজ মাত্রা কমে যাওয়ার
ফলে হার্ট এর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। এছাড়াও হার্ট
অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের মতো সমস্যার ঝুঁকি কমে যায়। তাই পাঙ্গাস মাছ খাওয়ার
ফলে হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
হাড়ের যত্ন ও ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করে পাঙ্গাস মাছ
পাঙ্গাস মাছে ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস রয়েছে। ক্যালসিয়াম হাড়ের বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। হাড় ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও বয়স বাড়ার কারণে হাড় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাদের সেই
সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম হাড় ক্ষয় রোধ করে। হারকে আরো
শক্তিশালী ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
শিশুদের জন্য অনেক উপকারী
চুলের সমস্যা দূর করে
পাঙ্গাস মাছের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি। এটি চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কারণ মাছ এ থাকা বিভিন্ন প্রকার চর্বি আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারি। এগুলো আমাদের চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
যেমনঃ চুল পড়া কমায়, চুল দ্রুত বৃদ্ধি করে। এছাড়াও পাঙ্গাস মাছ রয়েছে ভিটামিন
ডি। এটিও আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পাঙ্গাস মাছ রয়েছে অ্যামাইনো এসিডের একটি ভালো উৎস। এটি প্রোটিন ও আমিষ
তৈরি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য
করে। অন্যান্য মাছের তুলনায় পাঙ্গাস মাছের অ্যামাইনো এসিড এর সংখ্যা বেশি,
এটি গবেষণায় জানা গেছে। তাই এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম।
বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে
পাঙ্গাস মাছ রয়েছে ফসফরাস। ফসফরাস আমাদের জীবনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি
আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য ক্যেরে।মন কিডনিতে পাথর,
যকৃতের রোগ এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভালো করতে সাহায্য করে। এইসব রোগ হওয়ার কারণ
শরীরের ফসফরাসের ঘাটতি পূরণ করতে পাঙ্গাস মাছ অনেক সাহায্য করে।
পাঙ্গাস মাছ কি কোন ধরনের এলার্জি আছেঃ
হ্যাঁ, পাঙ্গাস মাছ খেয়ে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি সমস্যা হতে পারে। যেকোনো ধরনের
খাবারে এলার্জি সমস্যা থাকতে পারে। তাই আপনার কোন কোন খাবারে এলার্জি রয়েছে সেটি
অবশ্যই জানতে হবে। এলার্জিক খাবার গুলোর মধ্যে পাঙ্গাস মাছ রয়েছে। তাই পাঙ্গাস
মাছ খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ যাদের অ্যালার্জি
সমস্যা রয়েছে তারা যদি পাঙ্গাস মাছ খায় তাহলে তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে
পারে। যেমনঃ
- ত্বকে বিভিন্ন ধরনের চুলকানি সমস্যা হতে পারে
- শ্বাসকষ্ট কিংবা হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে
- ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
- মুখ ও ঠোঁট ফুলে যাওয়া
- গলা চুলকানির সমস্যা
- চোখ চুলকানোর সমস্যা ইত্যাদি ছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
পাঙ্গাস মাছের তেল কি চুলের জন্য উপকারীঃ
সাধারণত বিভিন্ন মাছের চর্বি চুলের জন্য অনেক উপকারী। এ চর্বিতে এক বিশেষ
ধরনের তেল রয়েছে। যেগুলো চুল আরো সুন্দর ও মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও
আজকাল চুল পড়ার সমস্যা প্রায় অনেকেরই রয়েছে। তাই তাদের জন্য মাছের চর্বি অনেক
উপকারি। পাঙ্গাস মাছ আছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি রয়েছে। তাই এটি চুলের জন্য অনেক
উপকারি।
পাঙ্গাস মাছের অপকারিতা
- অতিরিক্ত পাঙ্গাস মাছ খাওয়ার ফলে, শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের লক্ষণ দেখা যায়।
- প্রতি সপ্তাহে যদি দুইদিন পাঙ্গাস মাছ খাওয়া হয়। তাহলে শরীরে এটি এক ধরনের বিষের মতো কাজ করে।
- বাজারে যেসব পাঙ্গাস পাওয়া যায়। সেগুলো মূলত বাড়িতে চাষ করা মাছ। তাই সেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। এমনকি এটি গবেষণা জানা গেছে যে, বাজার থেকে কিনে আনা আছে অনেক ক্ষতিকারক জিনিস রয়েছে। যেগুলো আমাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
- বাজারে পাওয়া মাছগুলো যেহেতু বাড়িতে চাষ করা হয়। তাই এগুলো দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক কিংবা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। আর এগুলো যদি আমাদের শরীরে যায় তাহলে, ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে।
শেষ কথা
বাজারে পাওয়া মাছগুলোতে যদি অনেক পরিমাণে কীটনাশক কিংবা রাসায়নিক পদার্থ থাকে, তাহলে কি নদীতে থাকা মাছগুলোতেও খারাপ কীটনাশ কিনবার আসেন পদার্থ রয়েছে। না কারণ নদীরে থাকা মাছগুলোতে কোন ধরনের কীটনাশক কিংবা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। আর এমনিতেও পাঙ্গাস মাছ অন্যান্য মাছের থেকে পুষ্টি গুনে অনেক এগিয়ে রয়েছে। তাই আপনারা যদি নদী থেকে পাঙ্গাস মাছ নিতে পারেন। তাহলে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url