খেজুরের উপকারিতা - শিতকালে খেজুরের উপকারিতা

খেজুর অধিক পুষ্টি গুনে ভরপুর। খেজুরের উপকারিতা গুলো গুনে শেষ করা যাবে না। কারণ খেজুরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।  শীতকালেও খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারে। 

কারন শীতকালে আমাদের শরীরে রোগের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই শীতকালে অবশ্যই খেজুর খাওয়া ভালো। আজকের পর আমরা খেজুরের উপকারিতা এবং শীতকালে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানব।

 ভূমিকা

কারন শীতকালে আমাদের শরীরে রোগের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই শীতকালে অবশ্যই খেজুর খাওয়া ভালো। আজকের পর আমরা খেজুরের উপকারিতা এবং শীতকালে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানব।

তার পাশাপাশি খেজুরের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে সেগুলো আজ আমরা এই পোস্টে জানতে পারবো। জানতে হলে আজকের এই পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়বেন। নিচে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

শীতকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ

শীতকালে খেজুর খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। শীতকালে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় । যেগুলো দূর করতে খেজুর আমাদের অনেক সাহায্য করে। খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বলে খেজুর খাওয়া উচিত। শীতকালে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা হয়। যেগুলো দূর করতে খেজুর অনেক উপকারী। 

ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে খেজুর

খেজুর রয়েছে  ভিটামিন সি এর একটি ভালো উৎস। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে ঠান্ডার জন্য বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যেমনঃ সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা আরো ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

এজমা দূর করতে সাহায্য করে

এজমাএমন এক ধরনের সমস্যা । যা শীতকালে বেড়ে যায়। এটি মূলত এক ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা। খেজুর এজমার সমস্যাদূর করতে সাহায্য করে। এজমা করতে হলে, সকাল ও সন্ধ্যায় এক থেকে দুইটি করে খেজুর খেতে হবে। তাহলে অ্যাজমার সমস্যা আর বেড়ে যাবে না।

শরীর গরম রাখতে খেজুরের ভূমিকা

প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর গরম রাখার জন্য বিশেষ্য করা বাদাম এবং খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই শীতকালে বাদাম ও খেজুর খাওয়া উচিত। এগুলো শরীর গরম রাখতে অনেক সাহায্য করে। বিশেষ করে বৃদ্ধ এবং শিশুদের এই খেজুর খাওয়া উচিত। কারণ বৃদ্ধ এবং শিশুরা বেশি ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না। তাই তাদের জন্য অবশ্যই খেজুর খাওয়া উচিত।

এছাড়াও খেজুরের আরো কিছু উপকারিতা রয়েছে। যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই নিজে খেজুরের বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হল।

খেজুরের উপকারিতাঃ

বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খেজুর। এর অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। এসব কারণে খেজুর আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। খেজুর আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও শক্তির যোগান দিতে খেজুর অনেক সাহায্য করে। এজন্য মুসলিমরা ইফতারের সময় খেজুর খেয়ে থাকেন। কারন তারা সেই সময়ে সারাদিন রোজা থাকেন। রোজা থাকা মানে সারাদিন না খেয়ে থাকা। তাই সেই সময়ে তাদের অনেক দুর্বল হয়ে যায়। 

আর সেই সময়ে খেজুর খাওয়া তাদের জন্য অনেক উপকারি। কারণ খেজুর তাদের শরীরের শক্তি যোগান দিতে সাহায্য করে।এছাড়াও খেজুর আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ের জন্যও সাহায্য করে। কারণ খেজুরে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। 

এগুলোই আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের জানা উচিত। খেজুরের উপকারিতা গুলো নিচে দেওয়া হলঃ

 দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে 

খেজুর রয়েছে ভিটামিন এ এর একটি ভালো উৎস। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মানবদেহে এন্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। অনেকেরই  বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা দেয়। আগের মত শক্তি থাকে না। সেইসঙ্গে চোখে সমস্যাও বেড়ে যায়। 

এ সময় ভিটামিন এ চোখের জন্য অনেক উপকারি। তাই চোখে যে কোন ধরনের সমস্যার সমাধান রয়েছে ভিটামিন এ। এমনকি বিশেষজ্ঞরা ও চোখের সমস্যার জন্য ভিটামিন এই সংযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই খেজুর আমাদের চোখে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

 রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

খেজুর রয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন এ এর মত ভিটামিন সি ও আমাদের দেহে এক ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। এছাড়াও ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন সি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে।ত্বকের জন্য ভিটামিন সি অনেক উপকারি। এছাড়া দাঁত ও চুল ভালো রাখত ভিটামিন সি আমাদের অনেক সাহায্য করে।

রক্তস্বল্পতা কমায়

বর্তমানে রক্তসল্পতার সমস্যা একটু বেড়েই গেছে। তাই রক্তস্বল্পতা কমানোর জন্য আইরন অনেক সাহায্য করে। এটি খাদ্য পরিপূরক হিসেবেও অনেক সাহায্য করে। আবার আমাদের অনেক সময় মনোযোগের ঘাটতি হয়। আইরন মনোযোগের ঘাটতি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া নানা ধরনের ব্যাধি নিরাময় কত সাহায্য করে।

রক্তস্বল্পতা দেখা গেলে সর্বপ্রথম বিশেষজ্ঞরা আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই রক্তস্বল্পতার মত কোন সমস্যা দেখা দিলে, অবশ্যই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

 হাড়ের সমস্যা দূর করে

খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। আর আমরা সকলেই জানি ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। এটি শরীরের হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও হাড়ের ক্ষয় দূর করতেও সাহায্য করে। অনেক সময় বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এসব দূর করতে ক্যালসিয়াম অনেক উপকারী। তাই হাড়ের যে কোন সমস্যার জন্য খেজুর খাওয়া উপকারী। 

এছাড়াও দাঁতের সমস্যাও ক্যালসিয়াম অনেক উপকারী। ক্যালসিয়াম রক্ত জমাট বাঁধতেও সাহায্য করে। তাই দাঁত ও হাড়ের সমস্যা সমাধানের জন্য অবশ্যই খেজুর খাওয়া উচিত। কারণ খেজুর দাঁত ও হাড়ের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে খেজুর

ফাইবারএমন একটি পুষ্টি উপাদান যা, পাকস্থলীর যে কোন সমস্যার দূর করতে পারে। সেই সঙ্গে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। খেজুরেও রয়েছে ফাইবার । খেজুরও কোষ্ঠকাঠিন্য করতে সাহায্য করে। সমস্যা দূর করতেও ফাইবার অনেক সাহায্য করে। অতিরিক্ত চর্বি কমানোর জন্য ফাইবার অনেক উপকারি।

 এছাড়া অনেক সময় বিশেষজ্ঞরা ওজন কমানোর জন্য খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই ওজন কমানোর জন্য খেজুর অনেক উপকারী। এছাড়াও খেজুর খেলে অনেক সময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত খাবারের পরিমাণও কমে যায়। তাই খুব সহজে ওজনও কমে যায়।

হার্ট সুস্থ রাখেতে খেজুরের ভূমিকা

মানুষের শরীরে রয়েছে দুই ধরনের কোলেস্টেরল। একটি হলো ভালো এবং একটি খারাপ। যেটি ভাল করে সেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকা। এটি আমাদের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা করে। আবার  কোলেস্টের কিন্তু আমাদের দেহের জন্য মোটেও ভালো নয়। 

এটি শরীরে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। সে সঙ্গে হার্টেরও সমস্যা হতে পারে। আবার এও বলা যায় যে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও রয়েছে।

তাই শরীরে খারাপ কোলেস্টেলর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। এটি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেনসাহায্য করে। খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

 ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করে

খেজুর রয়েছে কয়েক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। আমরা জানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া বিভিন্ন রোগ ও প্রতিরোধ করে। খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সার কোষ তৈরি হতে বাধা প্রদান করে। ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচার জন্য খেজুর খাওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।

 রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

বেশিরভাগ নারীদের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। খেজুর রয়েছে পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস। যেটি রক্তচাপের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। শুধু রক্তচাপের সমস্যা নাই রক্তের আরো বেশি ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেশি সংকোচনের সহায়তা করে পটাশিয়াম। তাই রক্ত চাপের মতো সমস্যা এড়াতে হলে অবশ্যই খেজুর খাওয়া প্রয়োজন।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর খাওয়া যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারে। তেমনি এটি অনেকের জন্যও উপকারী নাও হতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই জেনে রাখা উচিত তাদের এই খেজুর খাওয়া মোটেও ভালো নয়। তাহলে খেজুরের উপকারিতা পেতে গিয়ে শরীরের কোন ক্ষতি হবে না।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খেজুর খাওয়া মোটেও ভালো নয়। কারন খেজুর রক্ত গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মোটেও সুবিধার জনক নয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই খেজুর কে একটু এড়িয়ে চলতে হবে।

আবার যাদের শরীরের পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি রয়েছে। তাদেরকেও খেজুর থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ খেজুরে পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস রয়েছে। যা শরীরে পটাশিয়াম এর মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই যাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি রয়েছে তাদের খেজুর খাওয়া যাবেনা।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url