বাড়ির ছাদে গোলাপ চাষ - গোলাপ ফুলের উপকারিতা

গোলাপ ফুলকে আমরা সকলেই চিনি। গোলাপ ফুলের বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুল হলো লাল গোলাপ। এছাড়াও অনেকের সাদা কিংবা গোলাপী গোলাপ ফুল পছন্দ করেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই লাল গোলাপ ফুল পছন্দ করেন। 

এই গোলাপ ফুলে আমাদের অনেক দিক থেকে সাহায্য করে। অনেক যুগ আগে থেকেও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতে গোলাপ ফুলের ব্যবহার হয়ে আসছে। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের গোলাপ ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ভূমিকা

এটি শুধু যে সৌন্দর্যর জন্য তা কিন্তু নয়। গোলাপ ফুল এসবের পাশাপাশি মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী। হয়তো এটি শুনে অনেকে অবাক হয়ে যাবেন যে, গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। হ্যাঁ এটি সত্যি। গোলাপ ফুল আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

গোলাপ ফুলের উপকারিতাঃ

থেকে গোলাপ ফুলের ব্যবহার হয়ে আসছে । গোলাপ ফুল ব্যবহার করা হতো। কখনো মানব দেহের জন্য, কখনো মন ভালো করার জন্য। এভাবে ধীরে ধীরে গোলাপ ফুল তার জনপ্রিয়তা লাভ করে। গোলাপের পাপড়ি ত্বকের সৌন্দর্যের অন্যতম উপাদান। এটি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

এটি যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ।তেমনি মানসিক শান্তি ও ওজন কমানোর সাহায্য করে। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেই গোলাপ ফুলের উপকারিতা গুলো। বিশ্বের অনেক দেশে গোলাপ ফুল খাওয়ার রীতি রয়েছে। 

এখনো অনেকে হয়তো জানে না যে গোলাপ ফুলের পাপড়ি খাওয়াও যায়। হ্যাঁ অবশ্যই গোলাপ ফুলের পাপড়ি খাওয়া যায়। গোলাপ ফুলের পাপড়ি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। দেরি না করে চলুন জেনে নিই গোলাপ ফুলের উপকারিতা গুলো।

ওজন কমাতে গোলাপ ফুল সাহায্য করে

 ওজন নিয়ন্ত্রণেও গোলাপ ফুল আমাদের অনেক সাহায্য করে। এতে থাকা যৌগ আমাদের ওজন সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে । এবং দেহের বিষ দূর করতে সাহায্য করে। এক মুঠো গোলাপ পাপড়ি সেবন করলে সেটি আমাদের ওজন করাতে অনেক সাহায্য করে। 

কারণ গোলাপের পাপড়ি খাওয়ার ফলে আমাদের পেট প্রায় সময় ভরা থাকবে। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছা করবে না।এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি গোলাপের পাপড়ি দিয়ে দিতে হবে। পানিটি আগে থেকে গরম করে রাখতে হবে। 

গোলাপ ফুলের পাপড়ি ততক্ষণ রাখতে হবে। যতক্ষণ না সেই পানি গোলাপি আকার ধারণা করে। এতে সামান্য পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার চর্বিও কমে যাবে।

অরুচি দূর করে গোলাপ

আজকাল পেটের  সমস্যা প্রায় অনেকেরই রয়েছে। খাবার খেলে কেমন একটা যেন লাগে। খাবার খেতে মন চায় না। এসব সমস্যা দূর করতে গোলাপ ফুলের পাপড়ি অনেক উপকারী। গোলাপ ফুলের পাপড়ি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। অনেকের পেটে বেশি চর্বি হয়ে যাওয়ার কারণে কোন কিছু খেতে মন চায় না। গোলাপ ফুলের পাপড়ি খেলে চর্বি ও কমে যায়। 

পেটাও ক্লিয়ার হয়ে যায়। ফলে অরুচি সমস্যাও দূর হয়ে যায়।এছাড়াও অরুচি সমস্যা কমানোর জন্য গোলাপ ফুলের পাপড়ি বেটে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। তাহলে অর্থের সমস্যা খুব সহজে দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও পেট ব্যথার সমস্যা ও দূর হয়ে যায় ।

পাইলস দূর করে

গোলাপের পাপড়ি বেটে খালি পেটে প্রতিদিন সকালে যদি খাওয়া যায় তাহলে পাইলসের সমস্যা দূর হয়ে যায়। তাই যাদের পায়ের সমস্যা রয়েছে। পাইলস দূর করতে সাহায্য করে এর ভেতরে থাকা ফাইবার। এছাড়াও হজম শক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক সাহায্য করে গোলাপের পাপড়ি।

তাই প্রতিদিন সকালে গোলাপের পাপড়ি বেটে খালি পেটে খেলে এসব সমস্যা দূর হয়ে যায়। এছাড়া রক্ত পায়েস দূর করতো সাহায্য করে। সে সঙ্গে ব্যথা দূর করতেও সাহায্য করে।

মানসিক চাপ দূর করে

হতাশা এবং মানসিক চাপ সাধারণত আসে পরিমাণ মতো ঘুম না হওয়ার জন্য। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেগুলো অতিরিক্ত বিরক্তি ও উদাসীনতার সৃষ্টি করে। গোলাপের পাপী এবং এর নির্যাস এ ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক সাহায্য করে।এ ধরনের সমস্যা দূর করতে, গরম পানি ছিটিয়ে নিন। এবার কিছুক্ষণ পর সে পানি রে গোসল করে নিন ।

গরম পানির তাপে গোলাপ ফুলের সম্পূর্ণ সুগন্ধ পানিসহ সেই কক্ষে ছড়িয়ে যাবে। আর এই গন্ধ খুব সহজে মানসিক চাপ দূর করে ও বিভিন্ন ধরনের চিন্তা দূর করে। যা আপনার মনকে প্রশান্তি দিবে। সে সঙ্গে মন কেউ প্রফুল্ল করে দিবে। তাহলে মানসিক চাপের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। সে সঙ্গে অনিদ্রাও দূর হয়ে যাবে ।বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা থেকে মুক্তি দেবে। ফলে মানসিক চাপ খুব সহজে কমে যাবে।

ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে গোলাপের ভূমিকা

ঠোঁটের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বাহিরের রোদ কিংবা অন্যান্য কারণে জন্য ঠোঁট কালো হয়ে যায়। আবার অন্যান্য কিছু সমস্যার কারণে ঠোঁটের রং ধীরে ধীরে কালো হয়ে যায়। আবার কারো আগে থেকে ঠোঁটের রং কালো । তাদের জন্য গোলাপ ফুল অনেক উপকারী। গোলাপ ফুল ঠোঁটের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

পাশাপাশি শর্ট ঠোঁটের কালো দাগ দূর করে। এছাড়াও ঠোঁটকে মোলায়েম ও গোলাপি করে তোলে। তাই ঠোঁটের এসব সমস্যা দূর করতে হলে গোলাপ ফুলের ব্যবহার করতে হবে। দুধের স্বর এবং কয়েক ফোঁটা মধু গোলাপ পাপড়ির সাথে মিশিয়ে নিন । এখন এই পেস্টটি কিছুক্ষণ ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। এবার কিছুক্ষণ পর হাত দিয়ে ধীরে ধীরে ঘষতে থাকুন। এরপর পানিতে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে ঠোঁটের এ ধরনের সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে।

ত্বকের সৌন্দর্যে গোলাপ ফুল

ত্বকের জন্য গোলাপ ফুল অনেক উপকারে। গোলাপ ফুলের জনপ্রিয়তা পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ত্বকের সৌন্দর্যে এর অবদান। অনেক আগে থেকে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গোলাপ ফুলের পাপের ব্যবহার হয়ে আসছে। গোলাপ ফুলের পাপী ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।

সেই সঙ্গে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে। ত্বকের সুরক্ষার জন্য গোলাপজল বেছে নেওয়া একজন বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ এটি ত্বকে গভীরভাবে  পরিষ্কার করে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। গোলাপ ফুলে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ত্বকের বিভিন্ন খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকও ভালো থাকে।

 বাড়ির ছাদে গোলাপ চাষ

গোলাপ গাছের বীজ খুব কমই হয়। বিশেষ প্রক্রিয়া এগুলোকে তৈরি করতে হয়। কিভাবে ডাল দিয়ে গোলাপ ফুলের গাছ চাষ করা যায় আজকে সেটা জানবো। সাধারণত নার্সারিতে যেভাবে গোলাপ গাছ চাষ করা হয়। সেই নিয়মেই গোলাপ ফুল চাষ করা পদ্ধতি দেওয়া হয়েছে।

অনেকে বাড়িতে গোলাপ ফুল চাষ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু ভালোমতো গোলাপ ফুল গাছ বেড়ে ওঠে না কিংবা ফুল ধরে না। আবার গোলাপ ফুলের ডাল লাগালে সেটি মরে যায়। আবার সেখান থেকে কোন পাতা বের হয় না। এসব সমস্যা থেকে দূর হতে গেলে গোলাপ ফুল চাষ করা সঠিক নিয়ম জানতে হবে।

নিচে গোলাপ ফুল চাষ করার সঠিক নিয়ম দেওয়া হলোঃ

এর জন্য গোলাপ ফুলের ডাল প্রয়োজন হবে। খেয়াল রাখতে হবে গোলাপ ফুলের ডালগুলো যেন এক বছর পুরনো হয়। তাহলে গোলাপ ফুল চাষ করার সহজ হয়ে যাবে। এজন্য গোলাপ ফুলের ডাল নিয়ে সেগুলোর কাটা গুলো কেটে ফেলতে হবে। এরপর মিডিয়াম সাইজ করে ডালগুলোকে কেটে ফেলতে হবে।

এরপর একটি টবে বালি ব্যবহার করতে হবে। আপনারা চাইলে বালি এবং মাটি মিক্স করে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে গোলাপ ফুলের গাছ ভালো হবে। এরপর সেই মাটিতে পানি দিতে হবে। পানিটি শুষে নেওয়ার পর। সেখানে চাইলে গোবর সাড়া দিতে পারেন। 

সেগুলো শুকনো হতে হবে। এরপর সে ডালগুলোকে পুঁতে দিতে হবে। অনেক সময় ডালগুলো মরে যায়। এই সমস্যা দূর করতে হলে দিনে কিছু সময় রোধ দেওয়ার পর কোন একটি বোতলের অর্ধেক অংশ কেটে সেখানে দিয়ে দিতে হবে। তাহলে সেরকম সমস্যার হবে না।

নিয়মিত গাছে পানি দিতে হবে। এভাবে নিয়মিত পানি দেওয়ার পর ধীরে ধীরে পাতা বের হতে দেখবেন। ১৫ দিনের মাথায় সেই পাতাগুলো আরো বাড়তে থাকবে। আপনারা চাইলে এখান থেকে অন্য কোথাও পুতে দিতে পারেন। আর চাইলে এখানে রাখতে পারেন। তবে একটি টবে একটি গাছ রাখাই ভালো। তাহলে গোড়াগুলো খুব সহজে মিলতে পারে। আর গাছটাও মারা যায় না।

গোলাপ গাছে বেশি ফুল পাওয়ার উপায়

গোলাপ গাছের বেশি ফুল পাওয়ার জন্য কয়েকটি প্রধান উপায় আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো উপযুক্ত সোয়াইল ও সুস্থ মাটির নির্বাচন করা। গোলাপের জন্য মাটি অধিকতর নিউট্রিয়েন্ট ভরপূর হওয়া প্রয়োজন। 

মাটির প্রাথমিক পরীক্ষা করতে পারেন একটি বৃহত্তর গোলাপ গাছের জন্য।সঠিক পোষণ সরবরাহের জন্য পোষণের সারের উপযুক্ত অনুমান করতে হবে। রোজ জীবাণুক সার বা পৌষ্টিক সার মিশানো গোলাপ গাছের ফুল প্রস্তুতির জন্য ভাল হতে পারে।

গোলাপগুলির জন্য প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত আলো এবং নিয়মিত ও উচ্চমাত্রায় ওষুধ সরবরাহ করা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, প্রতি সপ্তাহে ভাল হতে পারে গোলাপ গাছের পোষণ সারে একটি প্রয়োজনীয় পৌষ্টিক সার বা উপায়ে পোষণ করা।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আমি খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এবং জানতে পেরেছেন কিভাবে বাড়ির সাথে গোলাপ চাষ করা যায়। এবং গোলাপ ফুলের উপকারিতা কি কি এর সম্পর্কে আজকের পর্ব যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করুন।
পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url