গাজর চাষ পদ্ধতি - গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গাজর কিংবা Cerrot একটি শীতকালীন সবজি। এই সবজি মূলত মাটির নিচে হয়ে থাকে।
গাজরকে এক ধরনের সুপার ফুড হিসেবে ধরা হয়। কারণ এটি বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে
সাহায্য করে। আবার ঠান্ডা জনিত রোগ থেকে মুক্তি অনেক সাহায্য করে।
গাজরকে বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়ে থাকে। যেমনঃ সালাত, হালুয়া, সবজি, খিচুড়ি
ইত্যাদি ভাবে খাওয়া যায়। এছাড়াও এটিকে রান্না ছাড়া কাঁচাই খাওয়া যায়।
কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে দাঁতের ময়লা দূর হয়। আবার এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা
বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। গাজরের এসব গুণের কারণে মূলত এ কিছু সুপার ফুড বলা
হয়।
গাজরের উপকারিতাঃ
গাজর একটি শীতকালীন সবজি। শীতকালে মূলত এই সবজি পাওয়া যায়। ছোট বড় সবাই গাজর খেতে পছন্দ করে। গাজর বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। যেমনঃ সালাত, সবজি, খিচুড়ি, পোলাও নুডুলস ইত্যাদি আরো অনেক খাবারে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি যেমন খাবারের স্বাদ বাড়ায়।
তেমনি এটা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই শীতকালীন সময়ে নিয়মিত গাজর খাওয়া উচিত। কারণ এটি শুধু শীতকালে পাওয়া যায়। এক এক সবজির এক এক গুণ। কেউ অন্যান্য কোন সবজির সমান হতে পারবে না। তাই যেহেতু এটি শুধু শীতকালে পাওয়া যায় তা এটি অবশ্যই খাওয়া উচিত। কারণ গাজরের পুষ্টি অন্য কোন সবজিতে পাওয়া যাবে না।
এটি যেমন আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তেমনি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও অনেক সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের যত এটি ব্যবহারিত হয়। এটি তোর সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। গাজরের কিছু উপকারিতা দেওয়া হলঃ
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে
গাজরের রয়েছে ভিটামিন এ। চোখে দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। চোখের
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার পাশাপাশি যাদের রাতকানা রোগ রয়েছে, তাদের এই রোগ
সারাতে সাহায্য করে। তাই চোখের যে কোন ধরনের সমস্যার জন্য কাজের অনেক উপকারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
অক্সিডেন্ট শরীরের ুক্ত র্যাটিকেল গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলে
যে কোন রোগের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। আবার এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে।তাই শরিরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে গাজর খাওয়া
উচিত। কারণ এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
পাকস্থলীর সমস্যা দূর করে
ফাইবার এমন একটি উপাদান যা পাকস্থলীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক সাহায্য করে। যেমনঃ হজমের সমস্যা, বদহজম, পেটে ব্যথা, এসিডিটি ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। তাই এ ধরনের সমস্যা এড়াতে গাজর আমাদের অনেক সাহায্য করে।
রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
গাজরের রয়েছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। পটাশিয়াম আমাদের শরীরের রক্তচাপ কমাতে অনেক সাহায্য করে
ত্বক উজ্জ্বল রাখে
গাজর বিভিন্ন ধরনের রোগের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ত্বকের যত্ন অনেক উপকারে।
কারন এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর
পাশাপাশি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দূর করে থাকে। যেমনঃ মুখের কালো দাগ দূর
করে, সমস্যা দূর করে ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে থাকে। তাই ত্বকের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য গাজর খাওয়া অনেক উপকারী।
হৃদপিণ্ড ভালো রাখে
গাজর শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে খারাপ
কোলেস্টেরল ঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে দেয় না। ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা দেখা দেয়। ঠিকমতো রক্ত প্রবাহিত না হওয়ার ফলে বেশিরভাগ হৃদপিণ্ডের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই যখন রক্তে খারাপ কলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়
তখন হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে যায়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গাজর খাওয়া উচত
হাড় সুস্থ রাখে
বর্তমানে হাড়ের সমস্যা প্রায় সবারই দেখা দেয়। আগে শুধু বৃদ্ধলোকেদের হারের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিত। বর্তমানে সবারই হাড়ের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
হাড়ের সমস্যার মূল কারণ হলো ক্যালসিয়ামের অভাব। শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কম
থাকার জন্য হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। গাজরের রয়েছে
ক্যালসিয়াম। যা আমাদের হাড়ের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
দাঁত সুস্থ রাখে
গাজর আমাদের ত্বক সুস্থ রাখার পাশাপাশি দাঁতের যত্ন ব্যবহার হয়। গাজর খাওয়ার
ফলে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। যেমনঃ দাঁতে দুর্গন্ধ, দাঁতের
মাড়ি শক্ত হয়, দাঁতের ময়লা দূর করে ইত্যাদি আরো সমস্যা দূর করে। তাই তাদের
যত্নে গাজর খাওয়া ভালো।
লিভার সুস্থ রাখে
গাজরের রয়েছে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ যেমন আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য
করে। তেমনি এটি লিভার ভালো রাখত সাহায্য করে। গাজরে থাকা ভিটামিন এ লিভারের
বিভিন্ন খারাপ উপাদান পরিষ্কার করে। আবার এর পাশাপাশি অতিরিক্ত চর্বি কমাতে
সাহায্য করে। তাই লিভার সুস্থ রাখার জন্য গাজর খাওয়া উচিত।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
গাজরের রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আন্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এটা ক্যান্সার প্রতিরোধও অনেক
সাহায্য করে। তাই ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে অবশ্যই গাজর খাওয়া উচিত।
গাজর চাষ পদ্ধতি
গাজর প্রায় সবারই পছন্দের একটি খাবার। ছোট বড় সবারই গাজর খেতে ভালো লাগে। গাজরে
থাকা পুষ্টিকর উপাদান গুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
এসব সমস্যা দূর করার জন্য গাজর খাওয়া উচিত। অনেকে আছে যারা বাড়িতে গাজর চাষ
করতে চান। কিন্তু গাজর কিভাবে চাষ করতে হয় কিংবা গাছের কিভাবে যত্ন করতে হয় তা
হয়তো অনেকে জানে না।
কারণ গাছের ঠিকমত যত না হলে গাছ ভালো ফলন দিবে না। তাই গাছের ভালো ফলনের জন্য
অবশ্যই কিভাবে চাষ করতে হয় সেটা জানা প্রয়োজন। তাই কিভাবে গাজর চাষ করতে হয়
সেটা নিচে দেওয়া হলঃ
বাজার থেকে গাজরের বিছ আনার পর এগুলোকে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এগুলো ভিজিয়ে রাখার পর একটি টবে পরিমাণ মতো মাটি নিয়ে জৈব সার কিংবা গোবর সার ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশিয়ে নেওয়ার পর বীজগুলো এনে পানিসহ সেখানে ঢেলে দিতে হবে।
একবারে পানিসহ ঢেলে দেওয়ার পরে আর কোন পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এরপর ৩ থেকে ৪ দিন পরে চারাগাছগুলো মাটি থেকে বের হয়ে আসবে। এর চারাগাছগুলো দেখতে কিছুটা ঘাসের মত হয়। ধীরে ধীরে বড় হওয়ার পর এটিকে গাজর গাছ বলে বোঝা যায়। এরপরে ধীরে ধীরে 10 দিনের মধ্যে গাজরের আসল পাতাগুলো বের হয়ে আসবে।
এরপর টপ থেকে বের করে নিয়ে এগুলোকে মাটিতে পুঁতে দিতে হবে। গাজরের জন্য বেলে মাটি বেশি ভালো।ফাঁকা ফাঁকা করে এগুলোকে । মাটিতে পুঁতে দিতে হবে । চাইলে কম্পোস্ট কিংবা গোবর সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন। যদি মাটি গুলোতে আগে থেকে গোবর কিংবা কম্পোস্ট সার মিশিয়ে রাখা যায় তাহলে গাছগুলো ভালো হয়। দুই মাস হয়ে গেলে গাজরগুলো খাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে। তাই দুই মাস পর গাজর গুলো মাটি থেকে বের করে নিতে পারেন।
বাড়িতে যদি কোন ধরনের সবজি চাষ করতে চান, তাহলে জৈব কিংবা গবরষ্যার ব্যবহার
করাই ভালো। কারণ এগুলো প্রাকৃতিক হয়ে থাকে। ফলে গাছ অনেক সুন্দর ভাবে বেড়ে ওঠে
এবং গাছের সবজিগুলো অনেক ভালো হয় ।তাই চেষ্টা করবেন জৈব কিংবা গোবর সার
দেওয়ার।
গাজরের উপকারিতাঃ
এই সুপার ফুড গাজরেরও নাকি আবার অপকারিতা রয়েছে। এটা আসলে অবিশ্বাস্য। গাজর যেমন আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে তেমনি এটি আমাদের শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাবও ফেলতে পারে। গাজরের উপকারিতা জানতে হলে পুরো পর্বটি পড়ুন।
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গাজর খাওয়া ভালো নয়। মিষ্টি জাতীয় সবজি। আর ডাইবেটিস রোগীদের মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। তাই তাদের গাজর খুব কম পরিমাণ
- গাজর যেমন আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। তেমনি বেশি গাজর খাওয়ার ফলে ত্বকের রং হলুদ হয়ে যেতে পারে। তাই পরিমাণ মতো গাজর খাওয়া ভালো।
- আবার গাজর আমাদের দাঁত সুস্থ রাখে। অতিরিক্ত গাজর খাওয়ার ফলে দাঁতের ক্ষয় ও হতে পারে।
- গাজরে থাকা ফাইবার আমাদের পাকস্থলীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। কিন্তু শরীরে ফাইবার পরিমাণ বেড়ে গেলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ফলে এসিডিটির মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকার লাগবে। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আশা করছি গাজর সম্পর্কে আপনাদেরকে সঠিক ধারণা দিতে পেরেছি দেখা হবে পরে আর্টিকেলের সঙ্গে ততক্ষণ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url