ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় - ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
নাম শুনে ভিতি সৃষ্টি হওয়ার রোগ ডায়াবেটিস। কিন্তু খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণ রাখলে এই ডাইবেটিসকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। সুস্থ রাখতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবারের। তেমনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন হল সঠিক খাদ্য অভ্যাস।
ডায়াবেটিসে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা
ডায়াবেটিস এমন একটি শারীরিক অবস্থা সারা জীবন বই নিয়ে বেড়াতে হয়। এই কারণে সারা বিশ্বে প্রায় প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যায়। যেকোনো ব্যক্তি এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। সেটা যখন তখন হতে পারে। শরীর যখন রক্তের সব চিনিকে কিংবা গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে বা ভাঙতে ব্যর্থ হয়।
তখনই ডায়াবেটিস রোগের আবির্ভাব হয়। আর এ কারণে মানুষের হার্ট অ্যাটাক
কিংবা স্টকের মত যেকোনো কিছু হতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিসের কারণে অনেক
মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। কিডনি ও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার অনেক
সময়ও ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের দিকে অংশে এক ধরনের ঘা হয়। যার
কারণে পাও কেটে ফেলতে হয়।
ডায়াবেটিস কত ধরনেরঃ
ডায়াবেটিস সাধারনত চার ধরনের হয়ে থাকে। আপনার অবশ্যই জানা উচিত যে আপনি
কোন ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাহলে আপনি সেটার চিকিৎসাও সে অনুযায়ী
করতে পারবেন। তার নিচে ডায়াবেটিসের চারটি ধরন দেওয়া হলো।
- Tipe 1
- Tipe 2
- Jestisional diabrtes balaitas
- Other specific type of diabetes balitas
Tipe 1
আমাদের প্রত্যেকের শরীরে অগ্নাশয় নামক একটি গ্রন্থ থাকে. যেখান থেকে
ইনসুলিন নামক একটি হরমোন উৎপাদন হয়। যেগুলো ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে
। যদি কোন ব্যক্তির ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তাহলে ব্যক্তিটি যে
ডায়াবেটিস দ্বারা আক্রান্ত সেটি হল টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস।
Tipe 2
যাদের ফ্যামিলির কোন সমস্যা রয়েছে। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না। এক্ষেত্রে ইনসুলিনটা কিছুটা নষ্ট হওয়ার কারণে এই ডায়াবেটিসটা হয়ে থাকে।
Jestisional diabrtes balaitas
কোন এক গর্ভবতী মা যখন সন্তান জন্ম দেন। তখন যদি কোন কারণে তার ব্লাড সুগার লেভেলটা বেড়ে যায়। তিনি যে ডায়াবেটিস দ্বারা আক্রান্ত হয় সেটিকে যেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে।
Other specific type of diabetes balitas
এটি যে ধরনের কারণে হতে পারে যেমনঃ হরমোনাল কোন ইম ব্যালেন্স এর কারনে,
ড্রাগস থেক্ যেখান থেকে ইনসুরেন্স উৎপাদন হয় সেটা যদি কোন ভাবে
অসুস্থ হয়ে পড়ে । তাহলে তখন ব্যক্তিটি এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে
পারে।
কিভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে নাকি হয়নিঃ
সুপ্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা আপনি বুঝবেন কি
করে এর সম্পর্কে। জানতে হলে পুরো পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন নিচে বিস্তারিত
আলোচনা করা হলো।
ডায়াবেটিস হওয়ার খুব সাধারণ লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে,
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা পাওয়া
- স্বাভাবিকের চাইতেও ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া
- বিশেষ করে রাতের বেলায় খুব ক্লান্ত বোধ করা
- কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া
- প্রধাহ জনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া
- ধীরে ধীরে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা
- শরীরের কোথাও কেটে গেলে সেটি দেরিতে সেরে যাওয়া
ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ৪ উপায়
আপনি যদি একজন ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন । তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে
যে কিভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কারণ এই ডায়াবেটিসকে আপনার সারা জীবন
বয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর সে কারণেই ডায়াবেটিস কিভাবে আপনি কমাতে
পারবেন সেটিকে অবশ্যই জানার প্রয়োজন। এর জন্য কিছু টিপস রয়েছে সেগুলো
নিচে দেওয়া হলোঃ
সঠিক খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার সর্বপ্রথম ধাপ হল সঠিক খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা। কারণ আপনারা খাবারের ওপরে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখা নির্ভর করে। খাবারের প্রতি অবশ্যই আপনাকে অনেক সিরিয়াস হতে হবে। আর এই খাদ্য অভ্যাসটা যদি মেনে চলতে পারেন । তাহলে ডায়াবেটিস রোগী হয়েও সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন। যেমনঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন, শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন ইত্যাদি।
ভাতে অনেক পরিমাণে শর্করা রয়েছে ওই জন্য ভাতকে এড়িয়ে চলতে হবে।
আপনি সাদা চালের ভাতের বদলে। লাল চালের ভাত খেতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন
ধরনের ফল ও শাকসবজি খেতে হবে।সেগুলো থেকে আপনি পরিমাণ নানা ধরনের ভিটামিন
ওমিনারেল পাবেন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আমি জাতীয় খাবার অনেক উপকারি। তাই বলে
বেশি পরিমাণে আমি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।
শারীরিক পরিশ্রম
ডায়াবেটিস এমন এক ধরনের রোগ যেটি সারাদিন বেডে শুয়ে থাকার রোগ নয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত পরিশ্রম করতে হবে। শুধু খেলেন আর বিশ্রাম নিলেন
তা কিন্তু হবে না। চিকিৎস করা বলেন দিনে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের
মতো পরিশ্রম করতে হবে। সব থেকে বেশি ভালো হবে যদি আপনি ঘরের ভেতরে
কিংবা বাইরে কোথাও হাঁটতে যান।
জীবন আচরণ
সুস্থ জীবন আচরণ গড়ে তুলতে হবে যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে চান। সুস্থ
জীবন আচরণ গড়ে তুলতে হলে, সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে। সেই সঙ্গে সময় মতো
ঘুমিয়েও যেতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় খেতে হবে। আর অবশ্যই সেই খাবারগুলোর
স্বাস্থ্যকর ও পরিমিত হতে হবে। একেবারে বেশি খাওয়া যাবে না । চাইলে অল্প
অল্প করে দিনে কয়েকবার আপনি খেতে পারবেন।
সে সঙ্গে এটিও খেয়াল রাখতে হবে যে শরীরের ওজন যেন বেশি বেড়ে না যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে অবশ্যই ধূমপান কিংবা অ্যালকোহল জাতীয় কোন
জিনিস খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে ডায়াবেটিস হলে কি মিষ্টি খাওয়া যাবে না।
অনেকে এটি মনে করেন যে ডায়াবেটিস হলে মিষ্টি খাওয়া যাবে না মিষ্টি
খাওয়া একেবারেই বারণ। এই ধারণাটি ভুল। কারণ চিকিৎসকেরা বলেন , মিষ্টি
খাওয়া যাবে কিন্তু সেটিকে পরিমাণ মতো খেতে হবে। খুবই অল্প পরিমাণে খেতে হবে
একবারে বেশি খাওয়া যাবেনা।
নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে
ডায়াবেটিস ব্যক্তিদের উচিত প্রতিদিন রক্তের চিরির পরিমাণ পরীক্ষা করা। পায়ে কোন
ধরনের ঘা হয়েছে কিনা সেটির উপর খেয়াল রাখা। তাহলে কোন ধরনের ঘা এর লক্ষণ দেখা
গেলে সেটিকে আগে চিকিৎসা করে নিরাময় করা যাবে। যদি দেরি হয়ে যায়
তাহলে কোন কারনে পা কেটে ফেলাও লাগতে পারে।
একবার করে হলেও ওজন পরীক্ষা করতে হবে। প্রতি মাসে রক্তচাপও পরীক্ষা করতে হবে।
কয়েক মাস পর পর চোখের পরীক্ষাও করা প্রয়োজন। এসব পরীক্ষার যেসব ফল পাচ্ছেন
সেগুলো অবশ্যই নোট করে রাখতে হবে। কয়েক মাস পর পর চিকিৎসকের
কাছে যাওয়া উচিত চেকআপের জন্য।
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকাঃ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো খাদ্য অভ্যাস। খাদ্য
অভ্যাসের উপর আপনার সুস্থ শরীর নির্ভর করবে। আপনি যদি সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে
তুলতে পারেন। তাহলে আপনি ডায়াবেটিস রোগী হয়েওএকটি সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবেন
। তাই খাদ্য অভ্যাসের উপর অনেক সিরিয়াস হতে হবে। তাই খাদ্য অভ্যাস
নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে অবশ্যই আমাদের জানা উচিত ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য
তালিকা সম্পর্কে। তাহলে সঠিক খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা যাবে।
- সারাদিনের খাবারগুলোতে ছয় ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। কারণ একবারে বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না।
- এছাড়াও চিকিৎসকেরা বলেন, ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকাই ভালো।
- মিষ্টি জাতীয় ফল এড়িয়ে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ফাইবার জাতীয় ফল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফাইবার অনেক উপকারি।
- সকাল ও রাত করে রুটি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। আর দুপুরে চাইলে ভাতও খেতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে ভাত কিন্তু বেশি খাওয়া যাবেনা। কারণ ভাতে রয়েছে শর্করা। তাই কম পরিমাণে ভাত খেলে ভালো।
- প্রতিদিন সকাল করে বাইরে থেকে হেঁটে এসে, গ্রিন টি খেতে পারেন। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো হবে।
- প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আমিষ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে বেশি পরিমাণে আমিষ খেলেও কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়।
-
আর প্রতিদিন রক্তে চীনের মাত্রা মেপে দেখা উচিত। এছাড়াও মাসে
একবার ডাক্তারের নিকটবর্তী হওয়া প্রয়োজন। ডাক্তারের পরামর্শে
সবসময় চলতে হবে।
কত সুগার হলে ইনসুলিন নিতে হয়?
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
তৈরি করতে হয় এবং ওষুধ ছাড়া ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি এর সম্পর্কে। আজকের এই
পর্বটি যদি আপনার কোন উপকারে লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url