চেক লেখার সঠিক নিয়ম
আমরা প্রায় আজকাল ব্যাংক থেকে টাকা লেনদেন করি। ব্যাংক থেকে টাকা লেনদেন করার সময় চেক প্রয়োজন হয়। এই চেক প্রয়োজনের মূল কারণ হলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা। অনেকে হয়তো জানেন না ব্যাংকে টাকা লেনদেন করার সময় চেক কেন ব্যবহার করা হয়। এই নিরাপত্তার কারণে মূলত চেক ব্যবহার করা হয়।
এই চেক যেমন আমাদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হয়। তেমনি যদি চেক লেখার সময় কোন ভুল ত্রুটি হয়ে যায় তাহলে, যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন । তাই চেক লেখার সঠিক নিয়ম জানতে হবে। সে সঙ্গে কোনো রকম ভুল ত্রুটিও করা যাবে না।
চেক লেখার সঠিক নিয়মঃ
চেক লেখার কিছু নিয়ম রয়েছে। সে নিয়মগুলো আমাদের জানতে হবে। কারণ চেক লেখার সময় যেন কোন রকমের ভুল ত্রুটি না হয়। তাই আগে থেকে সেসব নিয়ম জানতে হবে। চেকগুলো হয় পাঁচ প্রকার। সেগুলো হলঃ
১। ক্যাশ চেক
ক্যাশ চেক কে বলা হয় মূলত নগদ চেক। এই চেক ব্যবহার করা হয় মূলত ব্যাংকের
সুবিধাভোগী কে টাকা প্রদান করার নির্দেশ হিসেবে। অর্থাৎ ব্যাংক থেকে নগদ টাকা
তোলার জন্যই এই ক্যাশ চেক ব্যবহার করা হয়।
২। অ্যাকাউন্ট পেয়ে চেক
এই চেকের একটি সুবিধা রয়েছে যে, যেই ব্যক্তির নাম চেকে লেখা হয়েছে
শুধুমাত্র সেই ব্যক্তি টাকা পাবেন। আর যদি অন্যান্য প্রতারক এ চেক থেকে টাকা
তোলার চেষ্টা করেন তাও তারা এখান থেকে টাকা তুলতে পারবেনা। কারণ শুধুমাত্র যার
নাম লেখা হয়েছে তার একাউন্টে টাকা যাবে।
৩। ট্রান্সফারিং চেক
এর নাম শুনে বোঝা যাচ্ছে যে এটা কি ধরনের চেক। ট্রান্সফার মানে হলো স্থানান্তর
করা। তাই এই চেক ব্যবহার করা হয় স্থানান্তর করার জন্য। এখানে একটি ক্রেডিট
কার্ড থেকে অন্য ক্রেডিট টাকা স্থানান্তর করার জন্য ট্রান্সফার চেক ব্যবহার
করা হয়।
৪। ক্লিয়ারিং চেক
এই চেক ব্যবহার করা হয় মূলত অসুবিধা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দূর করার
জন্য। এছাড়াও এই যে কে যেন পেমেন্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়।
এছাড়াও চেক যদি হারিয়ে যায় গ্রাহকের যেকোনো অসুবিধা দূর করে।
৫। হাই ভ্যালু
ধরুন যদি ক্লিয়ারিং ক্লিয়ারিং চেক এগারোটায় জমা দিলেন। কিন্তু
এই টাকাটা জমা হবে অনেক দেরিতে। আর যদি হাই ভ্যালু চেক জমা দেন
তাহলে তাহলে আপনার সে টাকাটা বারোটার মধ্যে জমা হয়ে যাবে। মনে রাখতে
হবে হাই ভেলুতে পাঁচ লাখ টাকার নিচে হয় না। পাঁচ লক্ষ টাকার উপরে হাইভেল
চেক হয়ে থাকে।
নিয়ম নিচে দেওয়া হলঃ
Pay To
আপনি যদি কারো নামে টাকা তুলতে চান কিংবা আপনার নিজের নামে টাকা তুলতে চান তাহলে
সেই নামটা এই অপশনে দিতে হবে। এটি মূলত চেকের উপর দিকে থাকে।
The Sume of Taka
এখানে টাকার পরিমান লিখে দিতে হয়। প্রথমে এই জায়গায় বানান করে টাকার
পরিমাণ লিখতে হবে। এরপর Tk অপশনে সংখ্যায় টাকার পরিমাণ লিখতে হবে। আপনি
যেকোনো পরিমাণে টাকা তুলতে পারেন এটা আপনার ইচ্ছা। সেই পরিমাণটাই এখানে মূলত লেখা
হয়। আর টাকার পরিমানটা লেখার পর অবশ্যই মাত্র লিখতে হবে। এটি করা হয় মূলত
প্রতারকের হাত থেকে বাঁচার জন্য।
Signature
ব্যাংকের কাগজে ঠিক যেভাবে সিগনেচার করেছিলেন সেভাবে এখানেও সিগনেচার করতে হবে।
যেই টাকা তুলতে চান তাকে সিগনেচার করতে হয়।
Date
অন্যান্য চেকের অংশগুলা লেখার পাশাপাশি তারিক অবশ্যই দিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে
আমি আপনাকে বলব তারিখটা আগে না লেখায় ভালো। কারণ যদি কোন কারণবশত ব্যাংক বন্ধ
হয়ে যায় তাহলে আপনার সেই চেকটি নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ আপনি সেখানে তাই আগে থেকেই
দিয়ে দিয়েছেন। তাই ব্যাংকে যাওয়ার পর ব্যাংক যদি খোলা থাকে তারপর তাই টা দিয়ে
দিলে ভালো হয়।
Nomber
চেক লেখা শেষ হয়ে গেলে চেকের অপর পৃষ্ঠায় আরও তিনটি একই রকম সিগনেচার করে
নাম্বার দিতে হবে। এখানে নাম্বার দেওয়ার কারণ হলো যদি আপনি অ্যাকাউন্ট থেকে কেউ
টাকা তুলতে চায় তখন নিরাপত্তা মুলক ব্যবস্থা অনুযায়ী আপনার এই নাম্বারে কল
দেওয়া হবে এবং আপনার কাছ থেকে পারমিশন না হবে আদৌ কি টাকাটা তোলা যাবে কি যাবে
না। আপনি হ্যাঁ বললেই শুধুমাত্র টাকা তোলা যাবে।
চেকে লেখা ভুল হলে সমাধান করার নিয়মঃ
চেক লেখার সময় মাঝে মাঝে যে কোন জিনিসে কাটাকাটি কিংবা ভুল হয়ে যেতে পারে। ভুল
যেহেতু করেছেন তাহলে সমাধান তো আপনাকে করতে হবে। আর এই ভুলের
জন্য যেকোনো ধরনের সমস্যা হয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই ভুলের সংশোধন
করতে হবে। ভুলের সংশোধন করতে হলে, সেগুলো সংশোধন কিভাবে করতে হয় সেগুলো তো জানতে
হবে।
চেক লেখার সতর্কবাণীঃ
১ চেক লেখার আগে কোথায় কি কি লিখবেন সেগুলো আগে ভেবে নিতে হবে যেন পরবর্তীতে কোন কাটাকাটি না হয়।
২। লেখার সময় ঘষামাজা করা যাবে না।
৩। আর আপনি যদি চেক লেখা না জানেন তাহলে অন্যের সহায়তা নেওয়া উচিত।
ভুল লিখে ফেললে কি হবে
যদি ভুল লিখে ফেলেন তাহলে সেটিকে বারবার কাটাকাটি করা যাবে না। বারবার না
কেটে একবারে কেটে দিতে হবে। একবারে কেটে দেওয়ার পর নিচেও জায়গা থাকে সে নিচে
টাকার পরিমাণটা লিখে দিতে হবে। কিংবা আপনার নামে জায়গায় যদি ভুল করেন তাহলে
পাশে আরো জায়গায় রয়েছে সেখানে লিখতে পারেন। আবার যদি সংখ্যায় টাকার পরিমাণটা
ভুল লিখে ফেলেন তাহলে সেটিকে একটা না কেটে একটু উপরে কিছু জায়গা থাকবে সেখানে
লিখে দিতে হবে।
আর যদি তারিখের জায়গায় কাটাকাটি করেন তাহলে সেখানেও ফাঁকা জায়গা
রয়েছে সেখানে আপনি সঠিক তারিখ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url