মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় - মেয়েদের ওজন কমানোর উপায়
ওজন বৃদ্ধি মেয়েদের একটি অন্যতম সমস্যা। একদিকে মানুষের কটু কথা আরেকদিকে রয়েছে মানসিক চাপ ।এই দুই মিলে মেয়েদের ওজন বৃদ্ধি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা চাইলে এই সময় তাদের পছন্দমত জামাকাপড় পড়তে পারে না। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি অনেক উপকারে লাগবে।
আবার মেয়েদের স্বাভাবিক কাজগুলো তারা ঠিকমতো করতে পারেনা এ ওজন বৃদ্ধির কারণে। তাই আজকে ওজন কমানোর কিছু উপায় সম্পর্কে আমরা জানব। ফলে মেয়েদের এই সমস্যা থেকে তারা মুক্তি পেতে পারে। তাহলে চলুন বিস্তারিত বিষয় জেনে নেই।
মেয়েদের ওজন বাড়ার কারণঃ
অনেকেই আছে যাদের হঠাৎ করে কিংবা আগের থেকে অনেক বেশি ওজন বেড়ে যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধির মূল কারণটি আমাদেরই চাল চলনের ক্ষেত্রে। দৈহিক পরিশ্রম কম করার জন্য ওজন বেড়ে থাকে।
অনেক সময় হরমোনগত কারণেও আমাদের ওজন বেড়ে থাকে। আবার ভুল খাদ্য অভ্যাস, মানসিক চাপ তাদের কারণে আমাদের ওজন বেড়ে থাকে।আমাদের ভুল খাদ্যাভ্যাসের জন্য ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধির কারণে ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কারণ এগুলো আমাদের চর্বিকে বৃদ্ধি করে। চর্বি বৃদ্ধির কারণে আমাদের ওজনও বেড়ে যায়।
আর এ ওজন বেশি বৃদ্ধির জন্য আমাদের নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। এটি আমাদের
স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে। তাই সকলেরই চাই তাদের ওজন ঠিক রাখতে।
তাই আজ আমরা জানবো ওজন কমানোর কিছু উপায়।
ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়ঃ
ওজন বৃদ্ধি মেয়েদের একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশি ওজন বৃদ্ধির কারণে
শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। মেয়েরা তখন স্বাভাবিকভাবে অনেক
অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রয়েছে কিছু
ঘরোয়া উপায়। গুলো অবলম্বন করলে মেয়েরা চাইলে খুব সহজে তাদের ওজন কমিয়ে ফেলতে
পারি।
এদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বাইরে খাবার খেতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু তারা জানে না বাইরে বেশিরভাগ খাবার রয়েছে উচ্চ ক্যালোরি । যা মেয়েদের শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। এটি মেয়েদের ওজন বাড়িয়ে দেওয়ার একটি বড় কারণ। এটা তো শুধু মেয়েদের জন্য ক্ষতিকারক তা নাই এটির ছোট থেকে শুরু করে প্রত্যেকের জন্যই ক্ষতিকারক। তাই আমাদের সঠিক নিয়ম মেনে বাইরের খাবার খাওয়া যে শুধু মেয়েদের জন্য ক্ষতিকারক তারা কিন্তু নয়। এটি ছোট থেকে বড় সকলের জন্যই ক্ষতিকারক।
আবার আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খাবার খায়।
এটিও কিন্তু ঠিক নয়। হ্যাঁ অনেকে বেশি খেতে পারে তবে কিছু নিয়ম মেনে
খাওয়া উচিত। যেমনঃ একদিনের খাওয়া আমরা চাইলে চার থেকে পাঁচ ভাগে করে নিতে
পারে। মানে হল আমরা বেশি খাব ঠিকই কিন্তু আমাদের পেট একটু ফাঁকা রেখে খেতে হবে।
এই নিয়মটি অবলম্বন করলে বেশি খেলো আমাদের ওজন কিন্তু বাড়বে না।
এছাড়াও ওজন কমানোর জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় কিছু খাবার রাখতে পারেন যা আপনার
ওজন কমাতে সাহায্য করে। যেমন সালাত, শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম। এগুলো আমাদের
বেশি ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
পানি আমাদের দেহের জন্য খুব উপকারী। কারণ এটি আমাদের চর্বি গলিয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই আমাদের নিয়মিত পানি পান করা উচিত। আপনাদের আরো একটা কথা জানিয়ে রাখি যে গরম পানি কিন্তু ওজন কমানোর জন্য খুব খুব বেশি উপকারি, কারণ গরম পানি খাওয়ার কারণে, আমাদের শরীরে তাপমাত্রার তারতম্য হয়। আর এ কারণে এটি আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। গবেষণা এটি জানা গেছে যে গরম পানি আমাদের ওজন কমানোর জন্য খুব উপকারি।
আপনারা চাইলে গরম পানির সঙ্গে হালকা লেবু মিস করে খেলে এটি আমাদের শরীরের জন্য খুব ভালো প্রভাব ফেলে, এটি তো শুধু ওজন কমাতে সাহায্য করে । আবার মেথি ভিজে রাখা পানিও ওজন কমাতে সাহায্য করে, এটা শুধু ওজন কমাতে সাহায্য করে তা নয় বরং এটি ডায়াবেটিস রোগী ব্যক্তিদের জন্য অনেক উপকারী।
নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় কারণ, এটাতে শুধু আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে তা কিন্তু নয় এটি আমাদের শরীর ও মন দুটো ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে পারব। নিয়মিত ব্যায়ামগুলোর মধ্যে রয়েছে,
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠা, জোরে জোরে হাটা, সাইকেল চালানো,সাতার
কাটা আরো বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত
ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমরা খুব সহজে আমাদের শরীরে বাড়তি ওজন কমাতে পারি। আর
যারা আপনাদের খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে চান না তাহলে এই ব্যায়াম কিন্তু অবশ্যই করতে
হবে।
পরিমাণ মতো ঘুম আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আমরা আগে জেনেছি মানসিক চাপ
আমাদের ওজন বাড়াতে পারে। তাই আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো উচিত। রাতে আট
ঘন্টা ঘুমানো ভালো। আপনি যদি দিনের ফাঁকে একটু সামান্য রেস্ট নিতে চান তাহলে
দুপুরে কিছুক্ষণ চোখ মুঝে থাকতে পারেন। কিন্তু দুপুরে ঘুমটা শরীরের জন্য
ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই দুপুরে না ঘুমানোই ভালো।
ওজন কমাতে আমাদের প্রতিদিনের রাতের খাবার আগে খাওয়া উচিত। রাতে আগে খাওয়ার
কারণে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে এবং চর্বিও কমে যেতে পারে। আমাদের রাতে আগে খাওয়া
উচিত কারণ, আমরা যদি দিনে খাবার খায় তখন আমরা পরে কাজ করে কিংবা দৌড়াদৌড়ি করার
পর আমাদের সে খাবারটা খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়। কিন্তু রাতে সেটা হয় না
কারণ রাত্রে আমরা খাওয়া-দাওয়ার পরপরই ঘুমিয়ে পড়ি। ফলে সে খাবার গুলো সরাসরি
আমাদের পেটে লেগে যাবে এবং চর্বিতে পরিণত হয়। তাই আমাদের রাতের খাবার একটু আগে
খাওয়াই ভালো
ওজন কমানোর কিছু অন্যতম টিপসঃ
আমাদের উপরোক্ত কিছু নির্দেশনা পাশাপাশি, ছোট কিছু টিপসের মাধ্যমে আমাদের ওজন খুব
সহজে কমাতে পারি। তাহলে চলুন জেনে নেই সেই ছোট্ট টিপসগুলো।
নিচে সে টিপস গুলো দিয়ে দেওয়া হলোঃ
ওজন কমানোর জন্য খুব কার্যকরী এটি শুধু ওজন কমানোর জন্য উপকারী নয় বরং এর
একাধিক উপকারিতা রয়েছে। গ্রিন টি মূলত তৈরি হয় ক্যামেলিয়া সিনসিস নামক এক
উদ্ভিদ থেকে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । যা আমাদের মেটাবলিজম কমিয়ে ওজন
কমাতে সাহায্য করে। আর এর সঙ্গে শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য
করে। আর এই কারণে গ্রীন টি আমাদের শরীরের জন্য খুব কার্যকরী। আপনারা চাইলে
প্রতিদিন এর খাবার তালিকায় এদিকে রাখতে পারি।
গ্রিন টির পাশাপাশি ব্ল্যাক কফি ও আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। ব্ল্যাক কফিতে
রয়েছে ক্লোরোজেনিক এসিড নামক এক পদার্থ। যা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আর এ
ক্লোরোজেনিক পদার্থ আমাদের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
আমাদের সবসময় খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়া উচিত । কারন আমরা যদি
ধীরে ধীরে খাবার চিবিয়ে খায় তাহলে খাবারগুলো তাড়াতাড়ি হজম করতে
হয় সাহায্য করে। আর যদি খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায় তাহলে খাবারের
চর্বি জাতীয় পদার্থ আমাদের শরীরে কম প্রভাব ফেলবে। তাই আমাদের খাবার ধীরে ধীরে
চিবিয়ে খাওয়া উচিত।
আমরা ব্যায়ামের পাশাপাশি কিছু খেলাধুলাও করতে পারে যা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য
করে সে সঙ্গে, আমাদের শরীর ও মন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কিংবা বাইরে যে কিছু
খেলা খেলতে পারি যা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।যেমনঃ দড়ি লাফ, বাইরে
দৌড়াদৌড়ি কিছু খেলা ইত্যাদি। এসবের মাধ্যমে আমাদের ওজনটা কমে আনতে পারি।
ইসলাম ধর্মে রোজা রাখা ফরজ। আমরা ফরজ রোজা ছাড়াও কিছু নফল রোজা করতে পারি যা
আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে এর সঙ্গে আমাদের শরীর ফিট রাখত সাহায্য করে। অনেকে
উপশও করে থাকেন এটা আমাদের শরীরের জন্য ভালো।
আমাদের কি ডায়েট করা উচিত?
এখন অনেক জায়গায় বিজ্ঞাপনে দেখা যায় এক সপ্তাহে ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন কমে থাকে, শুধুমাত্র ডায়েট চার্টের মাধ্যমে। এটি কিন্তু একদম ভিত্তিহীন। কারণ কঠোর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ আমাদের শরীরের জন্য মোটেও ভালো না। এটি আমাদের শরীর দুর্বল করে দেয়।
অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওজন কমানোর
বিষয়ে আমাদের ধৈর্য ধারণ করা উচিত। আমি এমন কিছু বলছি না যে ডায়েট করা
ভালো নয়। হ্যাঁ অবশ্যই এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু কোন
জিনিসের খুব বেশি প্রভাব আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়। আমাদের নিয়ম মেনে
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট চার্ট করা উচিত।
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি সম্পূর্ণ পড়েছেন। তাহলে অবশ্যই
আপনি জানতে পেরেছেন মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। আশা করছি আজকের এই
আর্টিকেলটি আপনাকে অনেক ভাবে উপকৃত করেছে। যদি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো
লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url