লাউ শাকের উপকারিতা - লাউ গাছের কীটনাশক
লাউকে হয়তো সকলের চিনে থাকবেন। এটি একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি। লাউ মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী। তেমনে লাউশাক ও মানব দেহের জন্য অনেক উপকারি। অনেকে হয়তো এখনো জানেনই না যে, লাউয়ের পাশাপাশি লাউশাকও খাওয়া যায়। হ্যাঁ অবশ্যই লাউ শাক খাওয়া যায়।
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই লাউ শাকের উপকারিতা এবং লাউ গাছের কীটনাশক
সম্পর্কে। এই বলবে আমরা আলোচনা করব লাভার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে হলে আজকের
আর্টিকেলটি মিস করবেন না।
ভূমিকা
এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এদিকে মূলত সাধারণ শাকের মতো রান্না করে
খাওয়া যায়। বেশিরভাগ মানুষই এভাবে লাউ শাক খেয়ে থাকে। এখন কথা হল এই লাউশাকে
কি এমন আছে যা আমাদের শরীরের জন্য এত উপকারি। তাই এটি জানতে হলে লাউ শাকের
পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়াও বাড়িতে লাউ গাছ লাগালে কি
ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে লাউ গাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে এটিও জেনে রাখা ভালো।
তাহলে আপনি খুব সহজে লাল গাছের যত্ন নিতে পারবেন।
লাউ শাকের পুষ্টিগুণঃ
লাউ শাকে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গুণ। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এইসব পুষ্টিগুণ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই। আবার বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি যে শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কিংবা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে তা কিন্তু নয়। বরং এটি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক সাহায্য করে।
এতে থাকা ভিটামিন সি মানব দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে আরো রয়েছে আইরন যার রক্তস্বল্পতা কমাতে অনেক সাহায্য করে। এটি ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে, এর পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে ফাইবার। এছাড়াও এটি গর্ভবতীদের জন্য অনেক উপকারি। কারণ এতে রয়েছে ফলিক এসিড যা গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে অনেক সাহায্য করে।
আর এইসব পুষ্টি গুণের জন্যই ,লাউশাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। তাই
উপকারিতা গুলো পেতে গেলে লাউ শাক খাওয়া প্রয়োজন।
লাউ শাকের উপকারিতাঃ
খুব সাধারণভাবে বেড়ে ওঠে লাউ গাছ। প্রায় সকলে লাউ খেতে পছন্দ করেন। আর লাউ শাক
আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। এ লাউ আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ
থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। লাউয়ের পাশাপাশি লাউ শাকও আমাদের
শরীরের জন্য অনেক উপকারী। লাউ শাকে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। লাউশাকে কি এমন
পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আর এই লাউ শাক খাওয়ার
ফলে কি কি উপকারিতা পাব।
নিচে লাউ শাকের উপকারিতা দেওয়া হলোঃ
১। গর্ভবতীদের জন্য অনেক উপকারী
এতে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড গর্ভবতীদের জন্য অনেক উপকারী। কারণ এটি রক্তশূন্যতা
দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভে শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।
এছাড়া গর্ভে শিশুর বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভবতী অবস্থায়
লাউ শাক খাওয়া অনেক ভালো।
২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এতে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য
করে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য লাউ শাকের পাতা খাওয়া ভালো। এছাড়া
ভিটামিন সি এর অভাবে যেসব রোগ হয় সেসব রোগ দূর করতেও সাহায্য করে।
৩। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
লাউ শাকে রয়েছে ফাইবার। ফাইবার পাকস্থলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
সে সঙ্গে হজম শক্তি বৃদ্ধি করত অনেক সাহায্য করে। তাই যাদের বদহজমের সমস্যা
রয়েছে তার লাউশাক খেতে পারেন। ফলে আপনাদের হজমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এছাড়াও পাইলস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৪। ত্বক ভালো রাখে
বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও ব্যবহার
হয়। এটি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আদ্রতা ধরে রাখতে
অনেক সাহায্য করে। তাই এটি ত্বকের যত্নে অনেক সাহায্য করে।
৫। হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
লাউ শাকের রয়েছে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের হাড়ের সমস্যা দূর করতে
সাহায্য করে। হাড়ের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি খেলে কি হয়
৬। রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
বরাবরের মেয়েদের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। তাই মেয়েদের জন্য লাউ শাক খাওয়া
অনেক উপকারি। কারন এটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই রক্তের সমস্যা দূর করতে
লাউ শাক খাওয়া উচিত। এছারাও কোষের বর্জ্য পদার্থ দূর করতে সাহায্য
করে।
৭। রক্তস্বল্পতা কমায়
লাশটাকে রয়েছে আইরন। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। অক্সিজেন
পুরো শরীরের নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এছাড়াও আইরন রক্তস্বল্পতা কমাতে অনেক
সাহায্য করে। তাই রক্তস্বল্পতা কমাতে লাউ শাক অনেক সাহায্য করে। তাই যাদের
রক্তস্বল্পতা রয়েছে তারা লাউ শাক খেতে পারেন।
৮। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
ফাইবার ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।তাই যদের ওজনের সমস্যা রয়েছে তারা লাউ শাক খেতে পারেন। লাউ শাক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সাহায্য করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যও লাউ শাক খাওয়া অনেক উপকারি।
৯ অনিদ্রা দূর করে
লাউ শাক শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখত অনেক সাহায্য করে। ফলে টেনশন থেকে দূরে থাকা যায়। তাই যাদের অনিদ্রা মত সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য লাউ শাক অনেক উপকারী। মাথা ঠান্ডা রাখার ফলে ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
১০। মানসিক চাপ দূর করে
লাউ শাক রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া
গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখলে সাহায্য করে। আর এসব নিয়ন্ত্রণে রাখার
মাধ্যমে মানসিক চাপও দূর হয়। তাই যারা মানসিক চাপে ভুগছেন তারা লাউ শাক খেতে
পারেন। তাহলে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে
লাউ গাছে কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা উচিতঃ
লাউ একটি পুষ্টিকর সবজি । না আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এই সবজিকে চাইলে
বাড়িতেও চাষ করা যাবে। বাড়ির ছাদে কিংবা বাগানে যেখানেই হোক এই গাছের ফলন অনেক
ভালো হয়। লাউ প্রায় সারা বছরে পাওয়া যায়। তাই যখন খুশি এর চারা গাছ রোপন করতে
পারেন। চারা রোপন করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। এটি যেহেতু
বছরের সবসময় পাওয়া যায় তাই যেকোনো সময় রোপন করা যাবে।
কিন্তু অনেক সময় লাউ গাছ রোপন করার পর লাউ গাছে ফল ধরে না কিংবা ফুল ধরে ঝরে
যায় এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এধরনের সমস্যার সমাধানে
কৃষকেরা বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। তাই আজকে আমরা জানবো লাউ
গাছের সমস্যা দেখা দিলে কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত।
ফ্লোরা এক ধরনের কীটনাশক। যা গাছের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
যেমনঃ
- ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করে
- কচি লাউ ঝরে পড়া বন্ধ করে
- অধিক ফলন পাওয়া যায়
এর ব্যবহারঃ
এই কীটনাশককে পানির সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হয়। আর রোদ থাকা অবস্থায় এটি
গাছের দেওয়া যাবে না। এই কীটনাশককে বিকেলের দিকে ব্যবহার করা ভালো। চারা গাছ
লাগানোর বিষ দিন পরে পানির সঙ্গে মিশে গাছে স্প্রে করা হয়। এরপর আবার ২৫ দিন পরে
গাছের স্প্রে করা হয়। তাহলে গাছের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। এটি গাছের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করলেও এ কীটনাশকের বেশি ব্যবহার গাছের জন্য ভালো নাই।
তাই প্রায় ২৫ দিন পর পর এটি গাছে ব্যবহার করা ভাল।
কিউ ফেরো
- এটি কচি লাউ নষ্ট হতে বাধা দেয়
- বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচায়।
এর ব্যবহারঃ
এর ব্যবহার আগেরটা থেকে একটু ভিন্ন। কারণ এটিকে একটি বোন কেটে সেখানে ঝুলিয়ে
দিতে হয়। এমন ভাবে কাটতে হবে যেন পোকা গুলো সেখানে আসতে পারে। আর এটিকে মাছ
বরাবর সুতার মাধ্যমে ঝুলিয়ে দিতে হবে। ফলে পোকার হাত থেকে ফলগুলোকে
বাঁচাতে সাহায্য করে। আবার এর বেশি ব্যবহার ফলে ভালো পোকা গুলো মরে যেতে
পারে। তাই এদিকে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করা ভালো।
এতক্ষণ কোন কোন কীটনাশক গুলো গাছের জন্য ভালো হবে তা জানলাম। এখন জানব বাড়ির কিছু জিনিস দিয়ে কিভাবে গাছের যত্ন করা যায়।
লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার
শীতকালের মূলত লাউ গাছের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। যেমন গাছ
ঠিকমতো বাড়ে না, গাছ বাড়ছে কিন্তু গাছে ফুল ধরছে না, ফুল ধরে ঝরে
পড়ে যাচ্ছে ইত্যাদি সমস্যার জন্য একটি সমাধান রয়েছে। সেটি হলোঃ পিয়াজের খোসা
পানিতে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে আর সেই সঙ্গে চা পাতিও পানিতে
চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর এগুলোকে ছেঁকে নিতে হবে। ছেকে নিয়ে
দুই পানিকে মিশ করতে হবে এরপর গাছে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। তাহলে এই সমস্যাগুলো
দূর হয়ে যাবে।
ফল না ধরার সমস্যার জন্য গাছের গোড়ায় গোবর সার কিংবা ডিমের খোসা ছোট ছোট করে সেখানে দিয়ে দিতে হবে তাহলে গাছের ফল ভালো হবে। ফল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। তাই এভাবে ব্যবহার করলে গাছ অনেক বেশি ফলন দিবে।
শেষ কথা
লাউ শাক, একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর শাকসবজি, যা উচ্চ পোষকশৃঙ্গি, ভিটামিন, এবং মিনারেল সমৃদ্ধ। এটি বিভিন্ন রকমের রেসিন, ফোলিক এসিড, এবং ভিটামিন সি সম্পন্ন। যা শরীরকে বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। লাউ শাকে থাকা ফাইবার ও প্রোটিন শক্তি দিয়ে সহজে বোঝা যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
এটি কোলেস্ট্রল নিয়ন্ত্রণে মাধ্যমে হৃদয়ের স্বাস্থ্যকে বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। লাউ শাক স্বাদেও উত্তেজনাদায়ক এবং বিভিন্ন রুচিশীল রান্নায় ব্যবহার করা হয়, যা খাদ্যের স্বাদ বাড়ায় এবং একটি সুস্বাস্থ্য ব্যক্তিত্ব বজায় রাখে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url