কমলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা
কমলা এমন একটি ফল , যেটি ফলের পাশাপাশি খোসাতেও অনেক পুষ্টি রয়েছে। এটা আমাদের
বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। আবার যাদের জন্ডিস হয়েছে তাদের জন্য
কমলার রস অনেক উপকারি । কারণ জন্ডিস মূলত পানি বাহিত রোগ। এই সময় কমলার রস অনেক
প্রয়োজনীয়।এ এটি যে শুধু আমাদের রোগ প্রতিরোধ কিংবা রোগ থেকে দূরে থাকতে
সাহায্য করে তা বললে ভুল হবে।
কারণ এটি আমাদের শরীরের পাশাপাশি আমাদের ত্বকের যত্নেও অনেক সাহায্য করে। আমরা
হয়তো অনেকেই জানি কমলার খোসা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকরি অনেকে এটি ব্যবহার
করে থাকেন। আবার কমলার খোসার চা ও অনেক উপকারী। আবার শরীরে শর্করা মাত্রা
নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিন্তু অনেক ভালো।
কমলার পুষ্টিগুণঃ
কমলা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। যার খোসাতেও রয়েছে অনেক পুষ্টি। কমলা
আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারে। এটি শীতের সময় বেশি উপকারি । কারণ শীতের
সময় আমাদের মধ্যে পানি খাওয়ার কমে যায়। ফলে সে সময়ে আমাদের শরীরে পানির
পরিমাণ ঠিক রাখার জন্য কমলা অনেক সাহায্য করে। কারণ কমলার বেশিরভাগই অংশেই পানি
রয়েছে। আর এ কারণে কমলা শীতের সময় খাওয়া প্রয়োজন।
কমলাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ,ফাইবা্র, ফলেট,
ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। মিলে কমলা একটি
পুষ্টিকর ফল। কারণ এসব পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি আমরা জানি
ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আবার সে সঙ্গে আমাদের
ত্বকের যত্নেও এর ভূমিকা রয়েছে।
কমলার উপকারিতাঃ
কমাতে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেসব আমাদের শরীরের জন্য অনেক
উপকারী। কারণ কমলার এই পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের বিভিন্ন উপকারে আসে।
ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে এটি আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এখন বেশিরভাগ
মানুষেরই ওজন নিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয়। আর এই ওজনের সমস্যার সমাধানে
কমলা অন্যতম ভূমিকা রাখে। ওজন কমাতে সাহায্য করে তা কিন্তু নয় সে
সঙ্গে এটি আমাদের হজ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
অনেকেরই দেখে থাকবেন বাসে উঠে কিংবা যে কোন গাড়িতে এক
ধরনের বমি বমি ভাব হয়। তাদের জন্য তো কমলা অনেক বেশি উপকারী। কারণ এবংবমির
সমস্যাটা বেশিরভাগ মানুষেরই রয়েছে। সেই সময় যদি কমলা খাওয়া যেতে পারে
তাহলে বমি বমি ভাবটি দূর হয়ে যায়। বমি হওয়ার থেকে বমি বমি ভাব
দিয়ে একটু বেশি কষ্টকর। তাই সেই সময়ে কমলা খেতে পারলে খুব সহজে দূর করে
দেয়।
নিচে কমলার কিছু উপকারিতা দেওয়া হলঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমরা আগে জেনেছি কমলতা রয়েছে ভিটামিন সি। আমরা হয়তো সকলেই জানি যে ভিটামিন সি
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ আমাদের শরীরে এক
ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এ এন্টি অক্সিডেন্ট এর ফলে আমাদের
শরীরে রোগের ঝুঁকি কমে যায়। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কমলা
খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
কমলা যেমন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। তেমনি এটি আমাদের ওজন
কমাতে সাহায্য করে। বর্তমান যুগে সবাই চায় তাদের শরীরে ফিট রাখতে। বেশি হলে নানা
অসুবিধায় ভুগতে থাকে তারা।
আপনারা খেয়াল করবেন কমলা খাওয়ার সময় এতে এক ধরনের টক টক ভাব থাকে। এটি
আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আপনারা তো অবশ্যই জানেন যে টক জিনিস আমাদের
চর্বি কাটাতে অনেক সাহায্য করে। ফলে ভারতে চর্বি কমিয়ে এটি আমাদের ওজন খুব
সহজেই নিয়ন্ত্রণের রাখতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে কমলা
কমলা অধি গুন সম্পন্ন একটি ফল। কমলা শুধু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা কিংবা ওজন কমাতে সাহায্য করেনা। বরং এটি আমাদের ত্বকের যত্নেও কিন্তু অনেক
সাহায্য করে। ত্বকের যত্নে কি কমলা সাহায্য করে।
কমলা রস আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ভালো। আবার এতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড। আগে
বলেছিলাম কমলাতে এক ধরনের টক টক ভাব থাকে। আপনারা তো জানেন ক টক জাতীয় ফলে
প্রাকৃতিক এসিড থাকে। এটি আমাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর করতে
সাহায্য করে। ফলে আমাদের সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখত কমলার ব্যবহার অন্যতম। আমরা হয়তো সকলেই জানি যে ভিটামিন এ
আমাদের চোখের জন্য অনেক উপকারী। কারণ এটি আমাদের চোখের। দৃষ্টিশক্তি ভালো
রাখতে সাহায্য করে। আবার যখন কম আলো থাকে তখনও দৃষ্টিশক্তি প্রচার করতে
সাহায্য করে। ফলে আমরা কম আলোতে অনেক ভালো দেখতে পাই।
সে সঙ্গে এটি আমাদের চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকেও বাঁচতে সাহায্য করে। আর এ
কারণে দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য কমলার অবদান রয়েছে। কারণ এই কমলাতে
ভিটামিন এর একটু ভালো উৎস রয়েছে।
ত্বকের যত্নে কমলার ব্যবহারঃ
আপনার হয়তো অনেকেই দেখে থাকবেন , বর্তমানে ত্বকের যত্নে অনেক সময় কমলার ব্যবহার
হচ্ছে। কমলার ব্যবহার হওয়ার কারণ এটি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা
থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।
ত্বকের সমস্যা দূর করার জন্য কমলার কিছু ব্যবহার জেনে রাখা উচিত। কারণ এটি কিভাবে
ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকের সমস্যা থেকে বের হতে পারে।
নিচে ত্বকের যত্নে কমলার কিছু ব্যবহার দেওয়া হলঃ
১। কমলার রস আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। কারণ এটি আমাদের ত্বকের ব্রণের
সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
২। আমরা হয়তো অনেকে আছে যারা কমলার খোসা ফেলে দেয়। কিন্তু আপনার এই কমলার
খোশাকে ফেলে না দিয়ে ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। কমলার খোসা ত্বকের জন্য
অনেক উপকারী।
কমলার খোসা গরম পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে, এ থেকে যে পানি বের হয়। এই পানিটি ত্বকের
জন্য অনেক উপকারী । এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।
৩। কমলার খোসাগুলো সেদ্ধ করে নিয়ে, এগুলোকে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর এর
মধ্যে এক থেকে দুই চামচ গ্লিসারিন দিয়ে দিতে হবে। এরপর এটি যদি মুখে
ব্যবহার করা যায় তাহলে এটি মুখের কালো দাগ, ময়লা এবং ব্রণ দূর করতে
সাহায্য করে।
৪। কমলার খোসা রোদে কিছুদিন শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর এগুলোকে ব্লেন্ড করে
নিতে হবে। তারপর এতে বেসন মিশিয়ে পরিমাণমতো কাঁচা দুধ
দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। এটিও মুখের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে এবং
ত্বকের ময়লা দূর করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভবতী অবস্থায় কমলা খাওয়া অনেক উপকারি। আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন যে,
গর্ভবতী অবস্থায় শরীরে পানি থাকা অনেক প্রয়োজনীয়। আর এই কমলা শরীরে সে পানির
প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।আবার কমলা শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে অনেক সাহায্য করে।
এর পাশাপাশি শিশুর হাড়ের বিকাশেও কমলা অনেক উপকারি।কমলা গর্ভাবস্থায়
রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখত সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম। এটি
উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থার সময় কমলালেবু খাওয়া গুনকারী হতে পারে এটি পৌষ্টিক এবং সমৃদ্ধশীল।
কমলা লেবু ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সাইড যোগদান ধরে রাখে যা গর্ভাবস্থার সময়
মা ও শিশুর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অক্সিডেন্ট
নিয়ন্ত্রনে মায়ের রক্তচাপ উচ্চ রক্ত নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। এটি প্রতিরক্ষা
সিস্টেমকে সাবধান রাখতে সাহায্য করে এবং এবং মায়ের শরীরকে ইনফেকশন থেকে রক্ষা
করতে সহায়ক হতে পারে। কমলা লেবুতে ফলিক এসিড ও পটাশিয়াম থাকা একটি শিশুর সুস্থ
উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং শিশুর উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়া কি ক্ষতিকর
প্রিয় পাঠক এরপরও আমরা জানাবো গর্ব অবস্থায় কম রাখা কি ক্ষতি করে এ বিষয়ে।
জানতে হলে পুরো পর্বটি সম্পন্ন পড়ুন। আপনি জেনে খুশি হবেন যে গর্ব অবস্থায়
কমলার রস গর্ভবতী মা এবং বাচ্চার দুটোর জন্যই অনেক উপকার বাচ্চার ভ্রূণ বৃদ্ধি
করার জন্য কমলার রসের ভূমিকা অপরিসীম। তাই গর্ব অবস্থায় পড়লাম রস বা কমলা কোন
ক্ষতি করে না।
শেষ কথা
এভাবে কমলা আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে অনেক সাহায্য করে যাচ্ছে। এটি আমাদের
শরীর, স্বাস্থ্য, ত্বক, দৃষ্টিশক্তি , ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে। সে
সঙ্গে এটি গর্ভবতী অবস্থায় খাওয়া অনেক ভালো। তাই মানবদেহের জন্য কমলার উপকারিতা
অন্যতম। তাই কমলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। আজকে এখানেই শেষ
করছি যদি আজকের এই পরবর্তী আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন
না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url