প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত - কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
কিসমিস অতি পরিচিত একটি খাবার। যা আমাদের রান্নার সাত বাড়াতে সাহায্য করে। এটি পোলাও বিরিয়ানি পায়েস ছাড়াও বিভিন্ন রান্নার কাজে ব্যবহারিত হয়। তবে এই কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই এখনো জানিনা।
কিসমিসের পুষ্টিগণ অনেক। কারণ আপনার হয়তো জানেন না কোন ফলকে যদি শুকান হয় তাহলে তার পুষ্টিগণ আগের থেকে অনেক পরিমাণে বেড়ে যায়। তেমনই এক ধরনের খাবার কিসমিস। তাই অন্যান্য খাবারের তুলনায় কিসমিসের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।
কিসমিসের পুষ্টিগুণঃ
রান্নার কাজে অনেক ব্যবহার হয়। রান্নার সাত বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। শুধু রান্নাই নয় আমরা আবার এদিকে এমনিও খেতে পারি।এটিকে যেভাবে খায় না কেন এর পুষ্টি কোন অনিক।
কিসমিসের রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন,ক্যালসিয়াম, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কার্বোহাট্রেট আরো অনেক কিছু। যা আমাদের রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি যে শুধু আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তা নয়। এতে থাকা বস্তুর উপাদান গুলো
হার্টের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কিসমিস আয়রনের একটি ভাল বৎসর হয়েছে যার রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। এরে থাকা ক্যালসিয়াম বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা নিরাময়ের কাজে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেন।
এগুলো ছাড়াও আরো নানার সমস্যার সমাধানে রয়েছে কিসমিস। আঙ্গুরের তুলনায় কিছুতে অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে।
কিসমিস যেভাবে বানানো হয়ঃ
আমরা হয়তো প্রায় সবাই জানি কিছু কিছু মূলত তৈরি করা হয় আঙ্গুর থেকে। কিন্তু এটি কিভাবে তৈরি করা হয় তা হয়তো আমরা বেশিরভাগই মানুষই জানিনা। তাই আজকে আমরা জানবো কিভাবে কিসমিস বানানো হয়।
আমরা সবাই জানি আমরা যেসব আঙ্গুর খেয়ে থাকি সেসব আঙ্গুর থেকে কিসমিস তৈরি করা হয়। কিন্তু এই কথাটি ভুল। সবচেয়ে বড় কথা হল কিসমিস অন্য ধরনের আঙুল দিয়ে বানানো হয়। যেমনঃ সুলতানস,ফিয়েসতা থম্পসন সিডলেস,ব্লাক করিনহ ইত্যাদি আঙ্গুর দিয়ে।
প্রথমে আঙ্গুলগুলো এক ধরনের কেমিকালে ডোবানো হয়। জানো এগুলো খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে পার। এরপর এগুলোকে শুকতা দেওয়া হয় ১৪ থেকে ১৬ দিন পর্যন্ত। এগুলো শুকিয়ে গেলে এগুলোকে ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর এর গায়ে যেসব ময়লা কেমিক্যাল আছে সেগুলোকে পরিষ্কার করা হয়। তারপর এগুলো থেকে পানি বের করে নিয়ে একদম শুকিয়ে ফেলা হয়। আর এভাবেই তৈরি হয় কিসমিস।
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতাঃ
কিসমিস কেমন খাবারের স্বাদ বাড়ায় তেমনি এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কিসমিসের অধিক পুষ্টিগুন রয়েছে। কারন কোন ফলকে যদি শুকানো হয় তাহলে তার পুষ্টিকর আগের থেকে অনেক বেড়ে যায়। তাই সেগুলোর উপকারিতা অনেক বেশি।
নিচে কিসমিসের কিছু উপকারিতা দেওয়া হলঃ
হাড়ের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
আমরা আগে জেনেছি কিসমিসে রয়েছে ক্যালসিয়াম। আর আমরা সকলেই জানি ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়ের জন্য কতটা উপকারী। ক্যালসিয়ামের অভাবে প্রায় সকলেরই হারের ব্যথা হয়ে থাকে। তাই কিসমিস খাওয়ার ফলে হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা ও দূর করতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
কিসমিসে রয়েছে ফাইবার। ফাইবার আমাদের হজম শক্তি বাড়ায়। হজম হওয়ার ফলে শরীরের অতিরিক্ত খাবারও হজম হয়ে যায়। ফলে ওজন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই যাদের ওজন নিয়ে মাথা ব্যথা তারা কিসমিস খেতে পারেন। এটি আপনাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কিসমিসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করে
আয়রনের একটি ভালো উৎস রয়েছে। আমরা সকলেই জানি আর আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।মহিলাদের মধ্যে বেশি রক্তস্বল্পতা দেখা যায়। তাই তারা তাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে কিসমিস খেতে পারেন।
এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে
আমরা সকলেই জানি যে এতই কে দূর করার জন্য প্রয়োজন ক্ষারীয় পদার্থ। এসিটি মানে এসিড।অ্যাসিড ও ক্ষারের বিটিআই অ্যাসিটি দূর করতে সাহায্য করে। আর কিস মিসু রয়েছে ক্ষারীয় পদার্থ।তাই এটি আমাদের অ্যাসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের সাহায্য করে থাকেন। তাই কিসমিসের উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় কিছু পরিমাণ হলেও কিসমিস রাখা প্রয়োজন।এখন প্রশ্ন হল কিসমিস কিভাবে খাওয়া প্রয়োজন বা কত পরিমাণে খেতে হবে।
কিসমিস বাজার থেকে কেনে আনার পর এটিকে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর এটিকে খেতে হবে। এতে বিভিন্ন রকমের ময়লা আবর্জনা লেগে থাকে।
কিসমিস খাওয়ার সবচেয়ে ভালো নিয়ম হলো রাতে এদিকে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া। কিসমিস কি ভিজে রাখলে এর পুষ্টিগণ আরো বৃদ্ধি পায়। তাই এভাবে খাওয়ার ফলে এর উপকারিতা খুব দ্রুতই পাওয়া সম্ভব।
এছাড়াও আপনারা প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে দেড়শ গ্রাম পর্যন্ত কিসমিস খেতে পারেন। মানে হল ১০ থেকে ১৫ টা কিসমিস। এর থেকে বেশি খেলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। সে পরিমাণ মতোই খাওয়া ভালো।
কিসমিসের অপকারিতাঃ
আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তেমন এটি বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এসএমএস বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পৃথিবীতে থাকে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম যেমন আমাদের হাড়ের বেগমের সমস্যা দূর করে আবার শরীরে এর পরিমাণ বেশি হওয়ার ফলেও হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও কিসমিস বেশি খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। ওজন বাড়ার পাশাপাশি এলার্জি বা শ্বাসকষ্টের মত সমস্যাও দেখা দেয়। তাই আমাদের সব সময় পরিমাণমতো খাওয়া ভালো। কোন জিনিসের বেশি প্রভাব কখনোই ভালো হয় না।
কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চাইছেন কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয় এর সম্পর্কে। যদি না
জেনে থাকেন তাহলে আজকের পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এখন আমরা আপনাদেরকে জানাবো
কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয় এ সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেই কিসমিস খেলে কি
ফর্সা হয়। আপনি যদি প্রতিদিন কিসমিসের পানি পান করেন তাহলে আপনার শরীরে থাকা
বিভিন্ন ক্ষতিকর টক্সিন শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
এই কিসমিস প্রতিদিন পান করলে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শরীরের অনেক উপকার রয়েছে। বিশেষ করে ত্বক ফর্সা করার জন্য কিসমিসের পানি শরীরের অনেক উপকার লাগে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। কিসমিসে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরী, প্রোটিন,ফ্যাট ও ফাইবার। এবং আরো রয়েছে ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম আয়রন ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম এর মত প্রয়োজনীয় সব উপাদান। যা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য অনেক উপকারি।
আপনি যদি কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখেন বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে রাখেন তাহলে কিসমিসে থাকা সব ধরনের পুষ্টিগুণ জলের সাথে মিশে যায় আর সেই জল আপনি যদি পান করেন তাহলে কিসমিসের সম্পূর্ণ গুনাগুন আপনার শরীরে অনেক উপকারে লাগবে বিশেষ করে ত্বক ফর্সা করার জন্য কিসমিসের কোন তুলনা হয় না।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমরা আজকে এই পর্বে আলোচনা করেছি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত কিসমিস খেলে কি হয় কিসমিসের পুষ্টিগণ এসব বিষয় আশা করছি আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটি পড়েছেন। আজকের এই আর্টিকেল সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url