শীতে প্রতিদিন গোসল করা ভালো না ক্ষতিকর
আমার প্রত্যেকে অনেকেই তো গরম পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করে। এটাও কি ঠিক? কখনোই না গরম পানি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। খাবার নিয়মিত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাও কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। শীতের সময় এমনিতেই আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে। তারপর ঠান্ডা পানি গোসল করলে ঠান্ডা জনিত কোন রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
তাহলে, ঠান্ডা পানিতেও গোসল করা ক্ষতিকর গরম পানি দিয়ে ক্ষতিকর। তাহলে কি করব আমরা? আজকে এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে এই পোস্টটি অবশ্যই আপনাদেরকে পড়তে হবে। তাহলে চলুন দেখে নিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর।
ভূমিকা
শীতকাল অনেকের কাছে প্রিয় আবার অনেকেই কাছে অপ্রিয়। শীত মানে এক ধরনের অলসতা। সকালে ঘুম থেকে উঠতে অলসতা, গোসল করতে অলসতা। এইটি প্রত্যেকের সাথে হয়। কিন্তু অলসতার কোন জিনিসই কিন্তু ভালো হয় না। আমরা যদি সকালে তাড়াতাড়ি উঠে আমাদের কাজ শুরু করি এবং শীতকালের নিয়মিত গোসল করি। তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। কিন্তু আমরা তা করি না। শীতকালে প্রতিদিন গোসল করা উচিত কারণ আমাদের শরীরে যেসব জীবাণু থাকে গোসলের উপরে সেসব জীবাণু ধুয়ে যায়। ফলে আমরা রোগ মুক্ত থাকতে পারি।
শীতকালে প্রতিদিন গোসল করা কি ভালোঃ
অনেকে আছে যারা শীতকালে নিয়মিত গোসল করেন। আবার এরকমও মানুষ আছে যে শীতকালে নিয়মিত গোসল করে না একদিন দুইদিন তিনদিন পর্যন্ত গোসল করে না। তাহলে গোসল না করা কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। হ্যাঁ , নিয়মিত গোসল করা ভালো। কিন্তু সব ক্ষেত্রে নয়।নিয়মিত গোসল করলে শরীরে যেসব খারাপ ব্যাকটেরিয়া আছে সেগুলো ধুয়ে যায়। এক্ষেত্রে নিয়মিত গোসল করা ভালো।
এখন কথা হল অনেকে আছে যারা গোসল না করে অস্বস্তি বোধ করেন। তাই তারা নিয়মিত গোসল
করে থাকে। একটা কথা জানিয়ে রাখি যে, যারা শরীর নোংরার জন্য নিয়মিত গোসল করেন।
তারা হয়তো এটা জানে না যে, নিয়মিত গোসল করলে শরীর নোংরা হবে আবার না করলেও
হবে।
বিজ্ঞানের মতে, যাদের বাহিরে অনেক কাজ করতে হয় কিংবা ময়লার সংস্পর্শে
থাকেন। তাদের জন্য নিয়মিত গোসল করা উচিত। আর যারা ঘরে থাকে। বাইরে
বেশি কাজের জন্য যেতে হয় না। তারা চাইলে একদিন পরপর গোসল করতে পারেন।
কতদিন পরপর গোসল করা উচিত
এখন কথা হলো একদিন পরপর কেন গোসল করতে হবে। কারণ নিয়মিত গোসলের ফলে আমাদের ত্বকের যে উপকারের ব্যাকটেরিয়া গুলো রয়েছে সেগুলো গোসল করার সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে যায়। ফলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।তাই যারা ঘরে থাকেন বা ময়লার সংস্পর্শে যান না তারা নিয়মিত গোসল না করলেও কোন অসুবিধা হবে না। তাদের শুধু হাত মুখ পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে হবে।
এখন কথা হল যারা বাহিরে কাজ করে, কাজের ফলে তাদের অতিরিক্ত ঘামের সৃষ্টি হয়।
তারা এখন বলতে পারে যেহেতু নিয়মিত গোসল করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে তাহলে তারাও
গোসল করবে না। এটি কিন্তু একদমই উচিত নয়। কারণ তারা যেহেতু বাহিরে তাদের
কাজকর্ম করে তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ময়লা, ধুলা ও ঘামের সৃষ্টি হয়।
এগুলো আমাদের শরীরের জন্য একদম ভালো নয়। তাই তাদের সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত
গোসল করা প্রয়োজন। কারণ এইসবের সাথে বিভিন্ন ধরনের খারাপ ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা
আমাদের শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তাই তাদের জন্য নিয়মিত গোসল করতে হবে।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, গরমের সময় নিয়মিত গোসল করার ফলে কি ত্বকের ক্ষতি হতে পারে না। গরমের সময় কেন তাহলে নিয়মিত গোসল করে সবাই।
আসলে গরমের সময় বাহিরে কিংবা ঘরে থাকুক না কেন গরমের কারণে অনেকেই ঘাম হতে পারে। আবার গরমের সময়টা আশেপাশে অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে থাকে ফলে ধুলা উড়ে জানালা দিয়ে ঘরে আসতে পারে। তাই এ সময় আপনার তো অবশ্যই ময়লা থাকবে। আর তাছাড়া গরমে ঠান্ডা অনুভব করার জন্য এবং গরমের হাত থেকে বাঁচতে তার গোসল করে থাকে। আর এছাড়া বড় কথা হল গরমের হাত থেকে মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য মূলত সকলে গোসল করে।
গরম পানিতে গোসল করলে কি হয়ঃ
শীতের সময় পরিবেশ এমনিতেই ঠান্ডা থাকে। এই সময় ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাটা কিন্তু কষ্টসাধ্য। তাই অনেকেই এই সমস্যা মেটাতে গরম পানিতে গোসল করেন। আবার অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত গোসল না করলে অস্বস্তি বোধ করেন। তারাও এ অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে গরম পানি দিয়ে গোসল করে থাকেন।
কিন্তু তারা হয়তো জানে না এটি যেমন আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তেমনে এটি
আমাদের চুলের জন্য অনেক ক্ষতিকর। গরম পানিতে গোসল করার সময় তারা শরীরে ব্যবহার
করা পাশাপাশি চু্লেও গরম পানি ব্যবহার করে থাকেন। গরম পানি শরীরের জন্য যতটা
না ক্ষতিকর। চুলের জন্য এটি আরো বেশি ক্ষতিকর। চুলে গরম পানি ব্যবহার করার ফলে
চুল পড়া বাড়তে পারে, মাথায় খুশকি দেখা দেয়।
এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর কারণ গরম পানিতে গোসল করার ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। গরম পানির ত্বকের এক কোয়াটির নামক কোষের ক্ষতি করে। ফলে আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। আবার আমাদের ত্বকে যে প্রাকৃতিক তেল রয়েছে এটিও গরম পানি দ্বারা ধুয়ে যায়।
শীতের সময় কি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা উচিতঃ
শীতে যেমন গরম পানিতে গোসল করা ফলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তেমনি ওদের তো ঠান্ডা
পানি দিয়ে গোসল করলেও। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। স্বাভাবিকভাবেই শীতের
পানি অনেক ঠান্ডা হয়ে থাকে। এপারে গোসল করাও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর।
এমনিতেই এই সময়টা ঠান্ডা মৌসুমের। আর তার ওপর যদি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা
হয় তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের ভালো নয় বরং ক্ষতি সাধন করে। ঠান্ডা পানিতে
গোসল করার ফলে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ মাথা
ব্যথা,জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদি আরো ঠান্ডা জনিত রোগ।
আবার এও শোনা যাই যে, শীতকালে মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালার কারণে অনেকের ব্রেন
স্টোকো হয়। গবেষণা জানা গেছে যে ঠান্ডা পানি ব্যবহারের ফলে ব্রেন স্টোকে
সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
এখন কথা হল শীতকালে গরম পানিতে গোসল করাও ক্ষতিকর, ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল
করাও ক্ষতিকর। তাহলে কি করা উচিত।
শীতকালের যে পানিতে গোসল করা উচিতঃ
শীতকালে অনেকে গরম পানিতে গোসল করে থাকেন। এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য
অনেকটাই ক্ষতিকর। আবার অনেকে আছেন গরম পানির এই ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার জন্য
ঠান্ডা পানিতে গোসল করেন। ঠান্ডা পানিতে গোসল করা কিন্তু তাদের জন্য ভালো নয়।
ঠান্ডা পানিতে গোসল করার ফলে, ঠান্ডা তো বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই
ঠান্ডা পানিতে গোসল করা একদম উচিত নয়।
তাই গবেষকরা বলেন, শীতকালে যেহেতু গরম পানিতে গোসল করার ফলে ত্বকের ক্ষতি হয়ে
থাকে। আবার ঠান্ডা পানিতে গোসল করার ফলে ও ঠান্ডা বিভিন্ন রোগ বা ব্রেন স্টক হয়ে
থাকে। তাই শীতকালে হালকা গরম পানিতে গোসল করা ভালো।
কারণ এটি খুব একটা গরমও নয় আবার ঠান্ডাও নয়। এটা কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। এর ফলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। এবং আপনি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন। তাই শীতকালে হালকা পানি দিয়ে গোসল করার সবার জন্যই প্রয়োজন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এই পর্বে আমরা আলোচনা করেছি শীতকালে কি পানি দিয়ে গোসল করা উচিত। পানিতে গোসল করলে কি হতে পারে এসব বিষয়। যদি আজকের পর্বটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুল করবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url