রাতে বাম দিকে ঘুমালে কি হয় - ইসলামে ঘুমানোর সঠিক দিক
ইসলাম অনুসারে কিভাবে ঘুমানো উচিতঃ
আমাদের সবার মধ্যে এই প্রশ্নটা হয়তো আসতে পারে যে আমাদের কোন দিকে ঘুরে ঘুমানো উচিত । ইসলামে বা এ বিষয়ে কি বলে । কোন দিকে পা দেওয়া যাবে না বা কোন দিকে পা দিয়ে ঘুমাতে হবে। আবার উত্তর দিকে পা কিংবা পিঠ দিয়ে ঘুমানো যায় না।পশ্চিম দিকে বাপ বাদ দিলে কি হয়। আদেও কোন দিকে মাথা দিয়ে ঘুমানো উচিত। এসব প্রশ্ন প্রায় সবার মনে জেগে। চলুন দেখে নিই ইসলামের শরীয়তে এ বিষয়ে কি বলা হয়েছে।
ইসলামের শরীয়ত অনুসারে পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘোড়াকে বেয়াদবি বলা হয়। কারণ আমরা জানি যে, আমরা সবাই পশ্চিম দিকে ঘুরে নামাজ পড়ি। পশ্চিম দিকে রয়েছে কাবাঘর। এইসব জানা সত্ত্বেও যদি কেউ পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমায়। তখন সেটাকে বেয়াদবি হিসেবে ধরা হয়। কারণ এটা ইচ্ছাকৃত ভুল বলে মনে করা হয়।
আবার অনেকেই ভুলবশত পশ্চিম দিকে পা দিয়ে থাকেন। তারা বুঝতে পারা মাত্রই ঠিক হয়ে ঘুমাবেন। পশ্চিম দিকে পা দেয়ে ঘুমানো ঠিক নয়। আর পশ্চিম দিক বাদে আপনারা যেকোনো দিকে পাবে ঘুমাতে পারেন। কিংবা যে কোন দিকে মাথা দিয়েও ঘুমাতে পারেন। শুধুমাত্র এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে যেন পশ্চিম দিকে পা না যায়। তাহলেই হবে।
বাম দিকে ঘুরে ঘুমালে কি হয়ঃ
অনেকের মুখে শোনা যায় যে বাম দিকে ঘুরে ঘুমাতে হয় না। বাম দিকে ঘুরে ঘুমানো স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। বামদিকে ঘুরে ঘুমালে জীবনে বিপদ আপদ নেমে আস। ডান দিকে ঘুরে ঘুমানো ভালো । প্রায় সবার মধ্যে এই সব ধারণা থেকেই থাকে। আসলে তাদের এই ধারণাটা পুরোপুরি ভুল।
বিশেষজ্ঞরা ডান দিকে ঘুরে ঘুমা লাগে খুব একটা ভালো মনে করেন না। ডান দিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বাম দিকে ঘুরে ঘুমানোর অভ্যাসটাই সবচেয়ে বেশি ভালো।
সারাদিন কাজ করার পরে শরীরের ক্লান্তি দূর করতে প্রয়োজন ঘুমানোর। সেই সঙ্গে শরীর সুস্থ রাখতে ঘুমানো প্রয়োজন। তাই শরীর সুস্থ রাখতে হলে কিভাবে ঘুমাতে হবে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে প্রায় সবারই ঘুমের ঠিক ঠিকানা নেই। যে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ঘুমিয়ে থাকে। এটি কিন্তু একটি ভুল অভ্যাস। সব ভাবে ঘুমানো কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমানোর ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
বামদিকে ঘুরে ঘুমালে কি হয় তা নিচে দেওয়া হলঃ
১। হার্টের সমস্যা দূর হয়
বামদিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে হার্টের রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে। তাই রক্ত সঞ্চালনের ফলে হার্ট ভালো থাকে।
২।হাজার শক্তি বৃদ্ধি করে
বামদিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে হজমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে থাকে। সেসঙ্গে এসিডিটির সমস্যা দূর করে।
৩।গর্ভবতীদের জন্য ভালো
বামদিকে ঘুরে ঘুমানো গর্ভবতীদের জন্য অনেক বেশি ভালো। কারণ এটি বাচ্চার পুষ্টি ঘাটতি সহ বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৪।নাক ডাকার সমস্যা দূর হয়
অনেকে হয়তো এ কথাটি বিশ্বাস নাও করতে পারে। কিন্তু এটাই সত্যি যে বাম দিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে নাক ডাকার মত বড় সমস্যার সমাধান হতে পারে।
৫।বদ হজমের সমস্যা দূর করে
যাদের হয় তা বদহজমের সমস্যা বেশি রয়েছে তাদের বাম দিকে ঘুমানোর ফলে এই সমস্যাটা দূর হয়ে যেতে পারেন। কিংবা গ্যাসের জন্য বুক জ্বালা করে এটিও কিন্তু দূর হয়ে যেতে পারে।
ডান দিকে ঘুরে ঘুমালে কি হয়ঃ
আমরা তো প্রায় সবাই মনে করি যে ডান দিকে ঘুরে ঘুমানো ভালো। এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।আসলে এই বিষয়টি একদমই সঠিক নয়। এ ভুল ধারণাটা প্রায় সবার মধ্যে রয়েছে।
ডান দিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে শরীরের জন্য ভালো নয় বরং এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি সব থেকে প্রযোজ্য নয় কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডান দিকে ফিরে কমানোর স্বার্থপর হতে পারে।
ডান দিকে ঘুরে ঘুমালে কি হয়ঃ
১।হার্টের সমস্যা দেখা দেয়
বামদিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে যেমন হার্টের সমস্যা দূর হয়। তেমনই ডান দিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ ডান দিকে ঘুমানোর পরে ঠিকভাবে হার্টে রক্ত সঞ্চালন হয় না ।
২।শরীরে ব্যথা সৃষ্টি হয়
আমাদের মধ্যে অনেকেই এই সমস্যাটা হয়তো রয়েছে যে রাতে ঘুমানোর পর। সকালে ঘুম থেকে উঠলে শরীরে ব্যথা অনুভব হয়। এর কারণ তো ডান দিকে ঘুমানো।
৩।গর্ভবতীদের জন্য ভালো নয়
ডান দিকে ঘুরে ঘুমানোর গর্ভবতীদের জন্য ভালো নয়।কারণ এটি শিশুর সঠিক বিকাশে বাধা দান করে । শিশুর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই গর্ভবতীতে বাম দিকে ঘুরে ঘুমানোর অভ্যাস করা উচিত।
৪।গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়
ডান দিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে গ্যাসের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বুক জ্বালা করার মতো সমস্যারও দেখা দেয়।
আসলে মূলত বাম দিকে ঘুরে ঘুমানোর ফলে যেসব সুবিধা পাওয়া যায়।ডান দিকে ঘুমানোর ফলে সেই সবের উল্টো কাজ করে। তাই সবারে বাম দিকে ঘুমানোর অভ্যাস করে তোলা ভালো।
ইসলামে ঘুমানোর সঠিক দিক
ঘুমানোর সবচেয়ে ভালো উপায়টি হলো চিত হয়ে ঘুমানো। এভাবে ঘুমানোর ফলে শরীরের সব জায়গায় ভারসাম্য ঠিক থাকে। তাই চিৎ হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করাটা অনেক ভালো।
উপুড় হয়ে ঘুমানো একদমই ভালো নয়। কারণ উপর হয়ে ঘুমানোর ফলে বুকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। পাকস্থলীতে চাপের সৃষ্টি হয়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার দেখা দেয়। অনেকেই হয়তো উপির হয়ে ঘুমাতে খুব বেশি পছন্দ করেন। তাদের এই কথাটি জেনে রাখা উচিত ।
আবার অনেকেই ঘুমানোর সময় পায়ের উপর পা দিয়ে ঘুমান। এটা শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই সব সময় ঠিক হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন কিংবা বাম দিকে ঘুরে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার শরীরের কোন ক্ষতি হবে না। আশা করছি আজকের এই পর্বটি খুব ভালোভাবে আপনি বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমরা এইভাবে আলোচনা করেছিলাম হাতে বাম দিকে ঘুমালে কি হয় ইসলামের ঘুমানোর সঠিক দিক কোনটি এসব বিষয় । আশা করছি আজকের এই পর্বটি আপনার ভালো লেগেছে। আজকের যদি আপনার কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url