গুগল সার্চে টাকা ইনকাম করার উপায়
এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষ অনেক টাকাও ইনকাম করতে পারছেন। টাকা ইনকাম করা তেমনই একটি মাধ্যম হলো গুগল। এই গুগল থেকে মানুষ কোটি কোটি টাকা ইনকাম করছে। তাই আজকে আমার জানব গুগল থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়। জানতে হলে আজকের এই পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ। বিজ্ঞানের যুগে অনেক কাজই সহজ করে দিয়েছে। মানুষ যেসব কাজ আগে ভাবতেও পর্যন্ত পারেনি।সেইসব কাজ এখন খুব সহজে করা যাচ্ছে এ বিজ্ঞানের মাধ্যমে। শুধু যে বিজ্ঞানের মাধ্যমে কঠিন কাজ সহজ হয়েছে তা কিন্তু নয়। চাকরির ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের বড় অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানের ফলে চাকরির নতুন নতুন বিভিন্ন সংস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের মতো দেশেও বেকারত্বের হাড় প্রায়ই কমে এসেছে। এরি ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা আলোচনা করব গুগল সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
গুগল থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়ঃ
গুগল এমন একটি মাধ্যম যেখান থেকে মানুষ চাইলে খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারে। এই গুগল থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য শিক্ষাগত কোন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। চাইলে যে কেউ এই মাধ্যম থেকে ইনকাম করতে পারেন। এই গুগলের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কাজ করে মানুষ কোটিপতিও হয়েছেন।
আপনার ঘরের স্ত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও এই গুগল মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবে। তাই গুগল থেকে টাকা ইনকাম করার চারটি মাধ্যম সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করব ।
১।ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম
ইউটিউব গুগলের একটি সার্ভিস। এই সার্ভিসটি থেকে চাইলে খুব সহজে টাকা ইনকাম করা যায়। এই ইউটিউবের সাথে প্রায় সবাই পরিচিত। কারণ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানে আমরা ইউটিউব ব্যবহার করে থাকি। রান্না রেসিপি থেকে শুরু করে যেকোনো কাজের ভিডিও আমরা এখানে পেয়ে যাই। ফলে সেই সমস্যা গুলো খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যায়।
আর এই ইউটিউবে আমরা যেসব ভিডিও দেখে থাকি। সেগুলোকে আমাদের মত সাধারণ মানুষেরাই তৈরি করে থাকে। এবং সেখান থেকে তারা টাকা ইনকাম করে। আপনিও চাইলে থেকে ইউটিউব খুব সহজে থাকেন ইনকাম করতে পারবেন। ইউটিউবের ভিডিও এডিট করা না জানলে আপনি ইউটিউব এর যে কোন ভিডিও থেকে শিখে নিতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য যা যা প্রয়োজনঃ
১.সবার প্রথমে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। যে চ্যানেলে আপনি ভিডিও আপলোড করবেন। তারপর কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে না জানলে ইউটিউবে সার্চ করে দেখলে আপনি পেয়ে যাবেন
২.ভিডিও এডিট করে, সেই ভিডিও আপলোড করতে হবে।মনে রাখতে হবে ভিডিওগুলো ইউনি থাকতে হবে। তাহলে মানুষজন আপনার ভিডিও বেশি দেখবে।
৩.ভিডিও ইন্টারেস্টিং হতে হবে। তাহলে মানুষজন সে ভিডিও দেখে ইন্টারেস্ট পেলে। আপনার আরো বিভিন্ন ভিডিও দেখতে থাকবে।
৪.আপনাকে নিজে ভিডিও এডিট করতে হবে। কোথা থেকে কপি করা যাবেনা। আমি চাইলে যে কোন বিষয়ের উপরে ভিডিও বানাতে পারেন বা করতে পারেন। আজকাল প্রায় ফানি ভিডিও সবাই পছন্দ করে। আপনি আরে ফানি ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এছাড়া
- একজন ব্লগার হিসাবে ইউটিউবের ভিডিও বানাতে পারেন
- নানা ধরনের টেকনোলজি সম্পর্কে ভিডিও বানাতে পারেন
- যেকোনো ধরনের আর্নিং টিপস সম্পর্কে ভিডিও বানাতে পারেন
৫.ইউটিউবে টাকা ইনকাম করতে হলে দুইটি শর্ত রয়েছে
- ১০০০ সাবস্ক্রাইবার হতে হবে
- এক বছরে প্রায় চার হাজার ঘন্টা ভিউ থাকতে হবে
এই শর্তগুলো পূরণ করতে পারলে আপনি খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন
৬. টাকা ইনকাম করার জন্য ইউটিউবে যে মনিটাইজিং অপশনটি আছে সেটি চালু রাখতে হবে। এটি চালু রাখতে হলে আপনাকে ইউটিউবের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। এই শর্তগুলো পূরণ হয়ে গেলে মনিটাইজিংয়ের জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন। তারপরে তারা যাচাই-বাছাই করে। আপনার মনিটাইজেশন যদি অন করে দেয়। তাহলে আপনি এখান থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
২।ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়
ইউটিউবের মতো একটি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেসবুক। ফেসবুকে চাইলেও খুব সহজে টাকা ইনকাম করা যায়। ইউটিউবের তুলনায় ফেসবুকে টাকা ইনকামের চান্স বেশি রয়েছে। কারণ বেশিরভাগ মানুষ ইউটিউব এর থেকে ফেসবুক বেশি ব্যবহার করে থাকেন। ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা অনেকটাই ইউটিউবের মতোই।
ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে যা যা প্রয়োজনঃ
১.প্রথমে ফেসবুক আইডি খুলতে হবে।ফেসবুক আইডি খোলার জন্য আপনাকে কিছু তথ্য দিতে হবে। এসব তথ্যর জায়গা পূরণ করে একটি ফেসবুক আইডি খুলতে হবে।
২.এরপর ভিডিও এডিট করে সেখানে আপলোড করতে হবে।আপনি এমনিতেও ভিডিও এডিট করে সেখানে আপলোড করতে পারেন। আর যদি প্রফেশনাল ভাবে ভিডিও আপলোড করতে চান তাহলে যেকোনো অ্যাপের সাহায্য নিতে পারেন। তেমনি এক ধরনের অ্যাপ হল Creator studio। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি ভিডিও এডিটও করতে পারবেন আবার ফেসবুকে আপলোড করতে পারবেন।
৩.মনে রাখতে হবে প্রথমদিকে আপনার ভিউয়াস, ফলোয়ার কম হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন ধৈর্য ধরে ধীরে ধীরে ভিডিও আপলোড করতে থাকবেন সময়ের সাথে সাথে আপনার ভিউয়ার্স এবং ফলোয়ার বাড়তে থাকবে।
৪.ইউটিউবের মতো ফেসবুকে টাকা ইনকাম করার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। এর জন্য প্রথমে মনিটাইজিং চালু করতে হবে। মনিটাইজিং চালু করতে হলে কিছু শর্ত রয়েছে।
- ৫০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে
- ৬০ দিনের ৬ লাখ মিনিট ভিউ থাকতে হবে
- পলিসি ইস্যু থাকা যাবে না
ইত্যাদি এ ধরনের আরো কিছু শর্ত রয়েছে যেগুলো আপনাকে আগে থেকে পূরণ করতে হবে। এগুলো যদি পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনার ভিডিও মানুষ যত দেখবে তত টাকা আয় করতে পারবেন।
৩।ব্লগিং করে টাকা ইনকাম
গুগলে কোন একটা ওয়েবসাইট খুলে সেখানে লেখালেখির কাজ করা কে মূলত ব্লগিং বলে। এখানে মানুষ আর্টিকেল লিখে টাকা ইনকাম করে। আর্টিকেলগুলো বিভিন্ন বিষয়ে হতে পারে। ধরুন আপনি যদি গুগলে কোন একটা বিষয়ে সার্চ করেন, তাহলে তার উত্তর স্বরূপ আপনাকে অনেকগুলো আর্টিকেল সামনে দেওয়া হয়।
এই যে আটিকের আপনার সামনে থাকবে এগুলো কিন্তু গুগল নিজে তৈরি করে না। আপনার মত কিছু সাধারন মানুষ এগুলোকে তৈরি করে। এবং এগুলো তৈরি করার মাধ্যমে তারা অনেক টাকা ইনকাম করে। আপনি চাইলেও এভাবে টাকা ইনকাম করতে পারেন। হ্যাঁ হয়তো শুরুর দিকে এটি থেকে ইনকাম নাও হতে পারে।
কিন্তু ধৈর্য ধরে যদি কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার ইনকাম বাড়তে থাকবে। আপনার যদি এ বিষয়ে ইন্টারেস্ট না থাকে তাহলে এই কাজটি করা যাবে না। কারণ ইন্টারেস্ট না থাকলে ধৈর্যও থাকে না। আর এই কাজটি করার জন্য প্রচুর ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আবার একবার যখন ইনকাম হওয়া শুরু হবে তখন আর থামবে না। এ ব্লগিং করে মানুষ কোটিপতি ও হয়ে যায় ।
ব্লগিং করার জন্য যা যা প্রয়োজনঃ
১.প্রথমে যেকোনো একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট বেছে নিতে হবে। যেখানে আপনি লেখালেখির কাজ করবেন।
২. এরপর এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর আর্টিকেল লিখতে হবে। এমন কিছু কিছু আর্টিকেল লিখতে হবে যেগুলো বর্তমান সময়ে চাহিদা বেশি। তাহলে আপনার ইনকাম খুব সহজেই হবে।
৩.আর্টিকেলগুলো ইউনিক হতে হবে। তাহলে মানুষ এগুলোকে বেশি বেশি পড়বে। আপনার আর্টিকেলগুলো মানুষ যত পড়বে তো আপনার ইনকাম বাড়তে থাকবে । তাই সেরকম ক্যাটাগরি অনুযায়ী আপনাকে আর্টিকেলগুলো লিখতে হবে। যেন মানুষ এগুলোকে পড়তে পছন্দ করে।
৪।ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকাম
ডাটা এন্ট্রি মানে হল কম্পিউটারে তথ্য প্রবেশ করানো। তথ্যগুলো বিভিন্ন ধরনের
হয়ে থাকে। এগুলো কম্পিউটারে প্রবেশ করার মাধ্যমে মানুষ টাকা ইনকাম করতে
পারে। ডাটা এন্ট্রি করার জন্য কিছু দক্ষতা থাকতে হবে। যেমনঃ দ্রুত টাইপিং
স্কিল, এমনভাবে টাইপিং করতে হবে যেন সেগুলো ভুল না যায়। এ কাজটি দুইভাবে করা
যায় ।
১। ফুল টাইম
২। পার্ট টাইম
আপনি যেকোনো একভাবে এই কাজটি করতে পারবেন। এ কাজটি করতে হলে ইংলিশ বিষয়ে জ্ঞান
থাকতে হবে। কাউকে ডাটা এন্ট্রি বেশিরভাগ কাজ ইংলিশ দিয়ে করা হয়। আপনি চাইলে
বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারবেন। যেমনঃ
- Upwork
- Freelancer
- Rev
- Scibie
ইত্যাদি আরো এরকম মাধ্যম রয়েছে। আপনি চাইলে যে কোন মাধ্যম থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমে ডাটা এন্ট্রি বিভিন্ন মাধ্যম গুলোর মধ্যে ,একটি মাধ্যমের ওপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই পর্বটি আপনার সম্পন্ন পড়েছেন। যদি পড়ে থাকেন
তাহলে অবশ্যই আপনার অনেক উপকারে লাগবে। এই পর্বে আমরা আলোচনা করেছি গুগল থেকে
কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় এসব বিষয়। আপনি চাইলে এখন ঘরে বসে এসব পদ্ধতি অবলম্বন
করে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url