রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা কি
রসুনের পুষ্টিগুণঃ
রসুন সাধারণত ব্যবহার করা হয় রান্নার সাত বাড়ানোর জন্য। হয়তো অনেকে জানে না রসুনের উপকারিতা। প্রাচীনকালের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে প্রাচীন মিশর, গ্রীক, চীন এবং রোমান রাজ্যে এটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রসুনের প্রতি ১০০ গ্রামের রয়েছে প্রায় 150 ক্যালোরি, ৩৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রে্ ৬.৩৬ গ্রাম প্রোটিন । এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন বি এর কিছু অংশ,ফলেট, ভিটামিন সি, আইরন ইত্যাদি আরও অনেক কিছু।
কাঁচা রসুন এর উপকারিতাঃ
রসুন যেমন আমাদের খাবারের স্বাদ বাড়াই। তেমনি রসুন আমাদের দেহের জন্য অধিক উপকারী। তাই আমাদের রসুনের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। যাতে আমরা রসুনের এই উপকারিতা গুলোকে কাজে লাগাতে পারে। তাই চলুন জেনে রসুন আর কিছু উপকারিতা।
রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
রসুন একটি অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল এজেন্ট
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি শরীরের ভাইরাস এবং অন্যান্য জীব প্রতিরোধ বা
ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য
করে।
রসুন রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। আবার রোশন লিভার এবং মুত্রাশয়ের
কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে
আজকাল প্রায়ই দেখা যায় হার্টের বিভিন্ন সমস্যা। প্রায় মানুষ আজকাল হার্ট
অ্যাটাক , স্টক করে থাকেন। রসুন এইসব সমস্যা এড়াতে সাহায্য করেসাহায্য
করে। রসুন আমাদের হার্টের জন্য খুবই উপকারী। খালি পেটে রসুন খেলে যেমন উচ্চ
রক্তচাপ কমায় আবার রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এটি গবেষণা জানা গেছে যে রসুন
খাওয়ার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। রসুনের এই উন্নত রক্ত
সঞ্চালনের কারণে হৃদরোগ দূর করতে সাহায্য করে। এটি যে শুধু হার্টের রোগ
নির্মূল করে তা কিন্তু নয় রসুন খাওয়ার কিছু নিয়ম হার্টের পাশাপাশি রসুন
ক্যান্সার রোগীদের জন্য উপকারী।
আজকাল প্রায় সব বয়সী নারীর হারে সমস্যা দেখা দেয়। এ হারের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও রসুন অন্যতম ভূমিকা রাখে। রসুন খাওয়ার ফলে এই সমস্যা দূর হয়ে যেতে পারে।
ত্বকের জন্য উপকারী
রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি -এজিং, আন্টি- ইনফ্লামেটরি ইত্যাদি। যা
আমাদের ত্বককে মসৃণ করে। তাই রসুন যদি ত্বকের লাগানো যায় তাহলে এটি
ত্বকের জন্য খুব উপকারী।
রসুন খাওয়ার নিয়মঃ
আমরা জানি সকল কিছু করে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেটি যে কোন
জিনিসই হতে পারে। তাই রসুনের উপকারিতা পেতে হলে এরও কিছু নিয়ম রয়েছে।
যার মাধ্যমে আমরা রসুনের উপকারিতা গুলো পেতে পারি। অনেকে হয়তো আমাদের দেহের
জন্য কতটা উপকারি । এটি আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
শুধু যে রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে তা নয় এছাড়া আরো
অনেক উপকারিতা রয়েছে। তাই এসব উপকারিতা পেতে হলে সঠিক নিয়মে রসুন
খেতে হবে।
১। রসুনের কোয়া কাঁচা খেলে আমাদের শরীরের জন্য বেশি উপকারী । কারণ এটি রান্না করার ফলে এটিতে যে এলিসিনের গুনাগুন আছে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এটি কাঁচা খাওয়ায় আমাদের জন্য উপকারী।
২। কাঁচা রসুন ও মধু আমাদের শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে। রসুনের দুইটি দুইটি কোয়া কুচি করে এর সাথে এক চামচ মধু মিশে খেলে আমাদের শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে।
৩। ঘর পদ্ধতিতে রসুনের আচার করেও রসুন খাওয়া যায়। এসো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনেকে হয়তো কাঁচা রসুন ভালো করে খেতে পারেন না কিংবা গন্ধ লাগে। সেই সময় আপনারা আচার করে খেতে পারেন । আচার খেতে খুব একটা অসুবিধা হবে না বলে মনে হয়।
রসুন খাওয়ার অপকারিতাঃ
রসুন খাওয়ার যেমন উপকারিতা হয়েছে তেমন এর অপকারিতা রয়েছে। আমরা জানি
কোন কিছুর ভালো গুণের পাশাপাশি খারাপ গুলো রয়েছে । আমরা যদি এর খারাপ গুন
গুলো আগে থেকে জেনে রাখেন তাহলে আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে
পারে। তাই আমাদেরও জানা উচিত রসুনের কিছু অপকারিতা।
রসুনের কিছু অপকারিতা নিচে দেওয়া হলঃ
১। আমরা এটা অবশ্যই জানি যে কোন জিনিসের বেশি ব্যবহার আমাদের জন্য
মোটেও সুবিধা জনক নয়। তেমনি রসুনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । রসুন যেমন আমাদের
শরীরের জন্য উপকারী তেমন বেশি রসুন খাওয়াটাও আমাদের শরীরের জন্য অপকারী হতে
পারে। যেমনঃ কাঁচা রসুন খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
২। আমরা যদি অধিক পরিমাণে কাঁচা রসুন খেয়ে থাকে তখন আমাদের মুখ দিয়ে এক
ধরনের দুর্গন্ধ বের হয়। কারো সাথে কথা বলি তখন আমাদের নিজেদেরই
খারাপ লাগা শুরু হয়। তাই কাঁচা রসুন খাওয়ার পরিমাণ টা কমিয়ে দিলে ভালো।
৩। রসুন বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের পেটে গলায় ও বুকে জ্বালা হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে। রসুনের মধ্যে একটি ঝাঁঝালো ভাবটা রয়েছে। যা বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের
শরীরেও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
৪। অনেকেরই রসুন খাওয়ার ফলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দেয়। তাদের জন্য তো আরোই রসুন কম করে খেতে হবে। কারণ তাদের আগে থেকেই রসুনের থেকে এক ধরনের গ্যাসের সমস্যা হয়।শুধু যে গ্যাসের সমস্যা হয় তা নয় বেশি রসুন খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হতে পারে। এমনকি ডায়রিয়া পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।
৫। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তাদের জন্য কাঁচা রসুন খাওয়া খুব একটা
কিন্তু ভালো নয়। তারা যদি কাঁচা রসুন বেশি পরিমাণে খায় তাহলে তাদের এই
সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
প্রতিদিন একটি করে রসুন খেলে কি হয়
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি সম্পূর্ণ পড়েছেন। এবং জানতে পেরেছেন রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা কি। আপনার এই আর্টিকেল সম্পর্কে যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url