রোজ সকালে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা - আমলকি সিরাপ
আমলকির পুষ্টিগুণঃ
আমলকি এমন একটি ফল যা যুগ যুগ আগে থেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গবেষনাতেও জানা গেছে যে অন্যান্য ফলের তুলনায় আমলকিতে কয় গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। তাই অনেক সময় আমলকি কে ভিটামিন সি এর রাজা বলা হয়ে থাকে। ভিটামিন সি এর অভাবে যেসব রোগ হয় সেই সব রোগ সরাতে আমলকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এটি যে শুধু ভিটামিন সি রয়েছে তা নয় এছাড়াও আরো কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যেমনঃ শর্করা, খনিজ পদার্থ, ক্যালরি, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি১,ফাইবার সহ আর অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
যা আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে। আমলকি জন্ডিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। আবার চর্ম রোগের চিকি সাথেও আমলকির ব্যবহার রয়েছে। আমলকি রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। আমলকির এসব পুষ্টি উপাদানের জন্যই আমলকি বিভিন্ন রোগের ঔষধ বলা হয়।
আমলকির উপকারিতাঃ
আমলকি শীতকালের একটি ফল। শীতকালে আমলকি বাজারে ওঠার সাথে সাথেই মানুষজনের ফলটিকে কিনতে শুরু করে। এর পুষ্টিগণ শরীরের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে। শিশু থেকে বয়স্কদের শরীরে বিভিন্ন রোগ শাড়ে তুলতে সাহায্য করে।
১।ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী
আমলকিতে যে খনিজ পদার্থ আছে তার নাম Chromium। এটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের আমাদের সাহায্য করে। এছাড়াও ইনসুলিনের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ও সাহায্য করে।
২।ওজন কমাতে সাহায্য করে
আমলকিতে রয়েছে ফাইবারের উৎস যা ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও হজমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। যাদের ডায়রিয়ার সমস্যা রয়েছে, আমলকি খাওয়ার ফলে তাদের সে সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৩।হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
ভিটামিন সি এক ধরনের হার্টের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কারণ ভিটামিন সিও এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত কাজ করে। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। আবার যাদের ব্লাড প্রেসার রয়েছে তাদের জন্য আমলকি অনেক উপকারে। আর তাছাড়া ভিটামিন সি রক্তে জমাট বাঁধতে বাধা সৃষ্টি করে তাই হার্ট অ্যাটাক বাস স্টোকের মত বিভিন্ন সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
৪।হাড়ের সমস্যা দূর করে
আমলকিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। হাড়ের বিভিন্ন ব্যথা দূর করত সাহায্য করে। তাই হাড়ের সমস্যাও আমলকির অবদান রয়েছে।
৫।রক্তস্বল্পতা কমায়
আমলকিতে থাকা রক্তস্বল্পতা কমাতে অনেক সাহায্য করে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই রক্তস্বল্পতা কমাতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও বাচ্চা জন্ম দেয়ার সময়ও অনেক রক্ত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা যায়। সে সময় চাইলে আমলকি খেয়ে রক্তস্বল্পতা কমাতে পারেন।
৬।দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে
ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে।আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন এ। যার দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। চোখে ঝাপসা দেখার মতো বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। আমলকি খাওয়ার ফলে এসব সমস্যা ও দূর হয়ে যায়।
৭। ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে
বয়স বাড়তে না বাড়তে মুখে বলি রেখা, ভাজের ছাপ দেখা দেয়। আবার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এসব সমস্যা দূর করতে আমলকি অবদান রয়েছে। এসব সমস্যা দূর করতে আমলকি খেতে পারেন।
৮।চুলের সমস্যা দূর করে
চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে আপনাকে অনেক সাহায্য করে। আমলকি খাওয়ার ফলে চুল পড়া কমে যায়, খুশকি কমে যায়,চুল লম্বা করতে সাহায্য করে।
চুলের যত্নে আমলকিঃ
চুলের সমস্যা নেই এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে পৃথিবীতে। আবার হাতের কাছেই কিছু জিনিস দিয়ে আপনার এই চুলের সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে পারবেন। তেমনি এক ধরনের উপাদান হল আমলকি। যা চুলের সব ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
চুলের যত কথা বললে সবার প্রথমে আনলোকের কথায় উঠে আসে । চুল পড়া থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এই আমলকি। আবার চুল খুব দ্রুত লম্বা করতেও সাহায্য করে।
চুলের এই উপকার গুলো পেতে হলে যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
১। চুল লম্বা করতে আমলকির তেল
সবাই জানে আমলকির তেল আমাদের চুলের জন্য কত উপকারী। এটা আমাদের চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে চুল লম্বা করতে অনেক সাহায্য করে। সেসঙ্গে চুলের গোড়া শক্ত করতেও সাহায্য করে।
২।খুশকি দূর করতে আমলকির রস
আমলকির তেল যদি না ব্যবহার করতে চান,।তাহলে বাড়িতে আমলকির তেল বানিয়ে নিতে পারবেন। আমলকির তেল বানাতে হলে আমলকির রস, নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরার প্রয়োজন। এই তিনটা জিনিস মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
৩।চুল সিল্কি করতে আমলকির ব্যবহার
চুল সিল্কি করার ক্ষেত্রেও আমলকি অনেক উপকারী। আমলকির গুঁড়ো, ডিমের সাদা অংশ ও লেবু। এই তিনটি জিনিস একসাথে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে। চুল সিল্কি করতে অনেক সাহায্য করে।
আমলকির অপকারিতাঃ
যে আমলকি ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সে আমলকিরও আবার নাকি ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। এটি সত্যি অবিশ্বাস্য। আমলকি বেশি খাওয়ার ফলও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আমলকি খাওয়ার ফলে ওজন খুব সহজেই কমে যায়। কিন্তু আমলকি বেশি খাওয়ার ফলে ওজন আবার বেড়ে যেতে পারে। ওজন বাড়ার পাশাপাশি হজমের বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দেয় । এসিডিটির ও সমস্যা দেখা দেয়।
তাই আমলকি পরিমাণ মতোই খাওয়া প্রয়োজন। আবার তাই বলে যে একদম কম খেতে হবে তা কিন্তু নয়। যে কোন জিনিসই পরিমাণ মতো খাওয়া ভালো। আমলকির ক্ষতিকারক দিকের থেকে উপকারিতায় বেশি রয়েছে।
আমলকি সিরাপ
আমলকি সিরাপ হলো একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর পদার্থ, যা আমলকের রস এবং মিষ্টির সমন্বয়ে তৈরি হয়। এটি অধিকাংশই ভিটামিন C, এন্টিঅক্সিড্যান্ট, ও আমিনো অ্যাসিড ধারণ করে, যা শরীরকে বিভিন্ন উপকারে আসতে সাহায্য করতে পারে। এটি মৌলিকভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, কোলেস্টেরল স্তর কমিয়ে তোলতে এবং মুক্তিযোগ্য রেডিক্যালসকে নষ্ট করতে সাহায্য করতে পারে।
এটি এমনও মাধুর্যপূর্ণ এবং স্বাদু, যার কারণে এটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু পদার্থ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া, আমলকি সিরাপ বিভিন্ন রোগের প্রতি রোগ প্রতিরোধ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে এবং শরীরের সার্জিক্যাল ক্রিয়াকলাপের জন্য একটি উত্তাপক্ষী উপাদান হিসেবে কাজ করতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url