ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার - ফুসফুস ভালো রাখার ঔষধ
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আমরা প্রতিনিয়ত অনেক ধরনের খাবার খেয়ে থাকি যেগুলোর ফলে আমাদের শরীরে অনেক ধরনের রোগ উৎপাদন হয়। তাই আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার এবং ফুসফুস ভালো রাখার ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার দেওয়া হলো।
ভূমিকাঃ ফুসফুস ভালো রাখার ওষুধ
ফুসফুস ভালো রাখার জন্য আমরা কতই না কিছু করে থাকি। তবু আমরা ভালো রাখতে পারি না। এর মূল কারণ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল খাবার খাওয়া। যেসব খাবারের মাধ্যমে আমাদের ফুসফুস আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়। আমাদের দেশে এখন অনেক ধরনের ভেজাল খাবার বের হয়েছে যেগুলো মানুষ প্রতিনিয়ত না বুঝে খেয়ে যাচ্ছে। এই খাবারগুলো মূলত আমাদের শরীরকে আরো বেশি খারাপ করে তুলছে।
আরো পড়ুনঃ হার্টের সমস্যার লক্ষণ ও প্রতিকার
এর জন্য বিভিন্ন ধরনের ডাক্তাররা বাইরের খাবার খেতে মানা করে। বিশেষ করে রাস্তায় যেসব খাবারগুলো তৈরি হয় সেই খাবার গুলো আমরা বেশি খেয়ে থাকি। আর এই খাওয়ার গুলোতে অনেক ধুলোবালি পড়ে থাকে যেগুলো আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। তাই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে তা দেওয়া হল।
ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার
প্রিয় পাঠক আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ফুসফুস এর ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। কেননা ফুসফুসের খারাপ খাবার থেকে দূরে থাকা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে ফুসফুস এর জন্য ক্ষতিকর খাবার দেওয়া হলঃ
ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর লবণ
আমরা প্রতিদিন রান্নার কাজে লবণ ব্যবহার
করে থাকি যেটা আমাদের খাবারের স্বাদ বাড়াই। লবণ আমাদের বিভিন্ন ধরনের
খাবারে সাদ বাড়িয়ে থাকে। কিন্তু আমরা কোন কিছু না চিন্তা করে অতিরিক্ত লবণ
খেয়ে ফেলি। এর ফলে ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর জন্য বলা যায়
লবণ ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি খাবার।
ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর অ্যালকোহল
আমরা যখন কষ্টে থাকি তখন অনেক ধরনের
মদ পান করে থাকি। যা ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি পানীয়। আবার আমরা কোন
ধরনের হাসিখুশি অনুষ্ঠানেও এই মদ পান করে থাকি। কিন্তু আমরা কোন কিছু না ভেবে এটি
খেতেই থাকি। অতিরিক্ত মদ পান করলে আমাদের ফুসফুসে নানা ধরনের রোগের দেখা দেয়।
অতিরিক্ত মদ্যপান করার ফলে ক্যান্সারও হয়ে যেতে পারে। তাই বলা যায় মদ
যা আমাদের ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর প্রক্রিয়াজাত মাংস
আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন
ধরনের মাংস খেয়ে থাকি। অনেক ধরনের মাংস আছে যেগুলো অনেকদিন ধরে প্রক্রিয়াজাত
করে রাখা হয় মূলত এই মাংসগুলো ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্রক্রিয়া জাত
মাংসগুলো নাইটরাইড দ্বারা সংরক্ষণ করা হয়। এই নাইট্রাইট গুলি ফুসফুসের প্রদাহ
এবং চাপ সৃষ্টি করে এর ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়। সুতরা বলা যায়
প্রক্রিয়াজাত মাংস ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর তামাকজাত দ্রব্য
তামাকজাদ দ্রব্য যেমন বিড়ি,
সিগারেট, তামাক পাতা,গাঁজা ইত্যাদি এ ধরনের দ্রব্য সেবন করলে ফুসফুস অনেক দ্রুত
নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ ফুসফুসে অনেক পরিমাণ নিকোটিনের সৃষ্টি হয়। এই তামাকজাত
দ্রব্যের কারণে ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। এর জন্য বলা
যায় তামাকজাত দ্রব্য আমাদের ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি দ্রব্য।
ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর চিনি যুক্ত পানীয়
অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করে
চিনিযুক্ত পানীয় ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবার থেকে বয়স্কদের
ব্রংকাইটিস হতে পারে। এর কারনে ফুসফুসকে সুস্থ রাখার জন্য চিনিযুক্ত কোমল পানীয়
থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
ফুসফুসের জন্য উপকারী খাবার
প্রিয় পাঠক আমরা উপরে উক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন। এবার আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ফুসফুসের জন্য উপকারী খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো তা নিম্নে দেওয়া হলঃ
আরো পড়ুনঃ কিডনি পরিষ্কার করে ৯ খাবার
- কফি
- গাজর
- রসুন
- আপেল
- অ্যাভোকাডো
উপরোক্ত খাবারগুলোর খাওয়ার সঠিক নিয়ম গুলো নিম্নে দেওয়া হলঃ
ফুসফুসের জন্য উপকারী কফি
আমরা দিনে কতটুকু কপি পান করবো এ নিয়ে
অনেক জনের বিতর্ক রয়েছে। তবে আমরা দিনে দুই থেকে তিনবার কফি খেতে পারি। কফি
খাওয়ার ফলে আমাদের ফুসফুস আগের চেয়ে ভালো থাকে। কফি খাওয়ার ৪ ঘন্টা পর
শ্বাসতন্ত্রের কার্যক্রম আরো ভালো হয়ে যায়। এবং শ্বাস নিতে তেমনটা কষ্ট হয়
না। সুতরাং আমাদের ফুসফুস কে ভালো রাখতে নিয়মিত কফি পান করতে পারি।
ফুসফুসের জন্য উপকারী গাজর
গাজরে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন
ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান। অনেক ধরনের গবেষণাগারের বলা হয়েছে
বেটা কেরোটিন শরীরের ভেতরে গিয়ে ভিটামিন ‘এ’ এর সৃষ্টি করে। এর ফলে শরীরের
বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে। তাই বলা যায় ফুসফুস ভালো রাখার
জন্য গাজর একটি উপকারী খাবার।
ফুসফুসের জন্য উপকারী রসুন
ফুসফুস ভালো রাখার জন্য রসুনের গুরুত্ব
অপরিসীম। কেননা রসুনে থাকা অ্যান্টিবায়োটিক যৌগ যা এজেন্ট হিসেবে
কাজ করে থাকে। রসুন খেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ গুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য
করে। রসুন আমাদের শরীরের এবং ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে মুক্তি দেওয়ায় সাহায্য
করে। এর জন্য আপনিও প্রতিদিন রসুন খেতে থাকুন। সুতরাং পরিশেষে বলা যায় রসুন
আমাদের ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মসলা।
ফুসফুসের জন্য উপকারী আপেল
ফুসফু সুস্থ রাখার জন্য আদার ব্যবহার
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আদা অনেক ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। আপনারা
যারা ধূমপান করেন তারা যদি প্রতিদিন এক টুকরা আদাতে চিবুতে থাকেন তাহলে
ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ থেকে। রক্ষা পেতে পারেন। এর জন্য বলা যায় আপেল আমাদের
প্রস্তুসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল।
ফুসফুসের জন্য উপকারী অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো ফুসফুসের জন্য একটি
উপকারী খাদ্য। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সাধারণত এর মধ্যে
রয়েছে রোধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কারো নানা ধরনের গুণ। অ্যাভোকাডো ফ্রি
রেডিকেলের ক্ষতিকর বিভিন্ন ধরনের প্রভাব থেকে আমাদের শরীরের সুরক্ষিত রাখে। তাই
পরিশেষে বলা যায় ফুসফুস ভালো রাখার জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় এভোকাডো রাখুন।
কোন ফল খেলে ফুসফুস ভালো থাকে
ফুসফুস ভালো রাখার জন্য আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা এখনো জানিনা ফল আমাদের ফুসফুসকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এর জন্য আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে কোন ফল খেলে শরীর ভালো থাকে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, নিম্নে তা দেয়া হলঃ
ফুসফুসের জন্য ভালো পেয়ারা
পেয়ারাতে রয়েছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন
সি জাতীয় উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি এর
সঙ্গে রয়েছে ফ্লাভানয়েড। আমরা যদি প্রতিনিয়ত পেয়ারা খায় তাহলে আমাদের ফুসফুস
অনেক ভালো থাকে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর জন্য প্রতিদিন খাদ্য
তালিকায় পেয়ারা রাখুন যা ফুসফুসের জন্য একটি কার্যকরী ফল।
ফুসফুসের জন্য ভালো আপেল
ফুসফুস ভালো রাখতে প্রতিদিন একটা করে আপেল
খেতে পারেন। কেননা আপেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন এবং ভিটামিন সি যা
আমাদের শরীরে থাকা ফুসফুস এর বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ভাবে লড়াই করে
থাকে। এবং যারা ধূমপান করে থাকেন তাদের জন্য আপেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং
বলা যায় আপেলও একটি ফুসফুসের জন্য উপকারী ফল।
ফুসফুসের জন্য ভালো আমলকি
আমলকি নানা ধরনের গুণের জন্য বিখ্যাত। এটি
যে কোনো রোগ সারাতে সক্ষম। এছাড়াও এই ফলটিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভরপুর।
আমলকি আমাদের শুধু পুরো শরীরেই নয় এটি আমাদের ফুসফুসের জন্যও অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল। তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে ফুসফুসটা ভালো রাখতে আমলকি ফল
খেতে পারেন।
ফুসফুসের জন্য ভালো বেরি জাতীয় ফল
বিরিজ জাতীয় ফলো আমাদের শরীরের
জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেড়ে জাতীয় ফলেও রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের
শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয়। আমাদের ফুসফুসে থাকা টক্সিন জাতীয় দ্রব্য
বিড়ি জাতীয় ফল খাওয়ার ফলে এটি ফুসফুস থেকে বের করে দেয়। যার ফলে আমাদের
ফুসফুস আগের থেকে অনেক ভালো থাকে। এর জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় বেরিয়ে
জাতীয় ফল রাখুন।
ফুসফুসের জন্য ভালো কলা
ফুসফুস কে ভালো রাখতে কলাও অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম। এই পটাশিয়াম
দ্রব্য যদি আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত পৌঁছায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে বিশেষ
করে ফুসফুসের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর জন্য প্রতিনিয়ত বেশি বেশি করে কলা
খান। এতে ফুসফুই ভালো থাকবে।
ফুসফুস ভালো রাখার ঔষধ
ফুসফুস ভালো রাখার জন্য ইতিমধ্যে আমাদের ঔষধি বাজারে নানা ধরনের ঔষধ বের হয়েছে। যেগুলো অনেক মানুষই সেবন করে থাকে। তবে আমার মতে উপরোক্ত ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর খাবার থেকে দূরে থাকলে অবশ্যই আপনাদের সকলের ফুসফুস ভালো থাকবে। আর যদি আপনারা কোন ধরনের ওষুধ সেবন করতে চান তাহলে অবশ্যই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন। কেননা আপনি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন না করেন তাহলে পরবর্তীতে আরো বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন। তবে আমার মতে উপরোক্ত নিয়ম গুলো মেনে চললে আর কোন ওষুধের প্রয়োজন পড়বে না।
ফুসফুস ইনফেকশনের ঔষধ
প্রিয় পাঠক বিভিন্ন ধরনের অযত্নের কারণে আমাদের ফুসফুসে অনেক ধরনের রোগ হয়। যার ফলে পড়ি শেষে ফুসফুসে ইনফেকশন হয়ে যায়। তবে যদি ফুসফুসে ইনফেকশন হয়ে যায় তাহলে বাসায় বসে না থেকে নিকটস্থ বক্ষব্যাধি ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ গ্রহণ করে ওষুধ সেবন করতে পারেন। ফুসফুসে ইনফেকশন হলে দুশ্চিন্তা না করে কিভাবে ভালো হওয়া যায় সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে আমার মতে ইনফেকশন হলে ভাল কোন ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়াটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আরো পড়ুনঃ কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ - কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয়
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url