জিলহজ মাসে চুল নখ কাটার হাদীস - জিলহজ মাসের আমল
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জিলহজ মাসে চুল নখ কাটার হাদীস এবং জিলহজ মাসের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। যা আমাদের মুসলমান ভাইদের কে সকলেই জেনে রাখা উচিত। জিলহজ মাসে চুল নখ কাটার হাদীস জানার জন্য আমাদের সাথে থাকুন।
ভূমিকাঃ জিলহজ মাসে চুল নখ কাটার হাদীস
হিজরি মাসের শেষ মাসকে সাধারণত জিলহজ মাস বলা হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস হল জিলহজ মাস কারণ হিজরী বছর এর চারটি মাস আল্লাহ তা'আলা অনেক পছন্দ করেন। হিজরী বছরে এ চার মাসের মধ্যেও একটি মাস হল জিলহজ মাস।
এ জিলহজ মাসে মুসলমানদের জন্য একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে ধরা ঈদুল আযহা। এ মাসে প্রথম ১০ তারিখ পর্যন্ত মুসলমানদের অনেক আমল থাকে। জিলহজ মাসে যদি একজন মুসলমান ব্যক্তি এই আমলগুলো পালন করে তাহলে অনেক ফজিলত রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ২০২৩ - ঈদ উল আযহা নামাজের নিয়ম ২০২৩
ইসলামের মধ্যে পাঁচটি স্তম্ভ আছে। এ পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হল হজ । মানুষ হজ করতে যায় জিলহজ মাসে কারণ জিলহজ মাসে হজ অনুষ্ঠিত হয়। আমরা অনেকেই জিলহজ মাসে চুল নখ কাটার হাদীস সম্পর্কে জানি না।
এ মাসে চুল নখ দাড়ি কাটার জন্য আল্লাহতালার কাছে কুরবানী দেওয়ার জন্য অনেক বিধান রয়েছে। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, একজন ব্যক্তি যখন আল্লাহতালার কাছে কুরবানী করবে সে ব্যক্তি কুরবানী দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার শরীরের চুল, দাড়ি এবং নখ কোন কিছু যেন না কাটা হয়।
আমাদের মুসলমান ব্যক্তির মধ্য অনেকে মনে করেন একজন ব্যক্তি যখন রোজা রাখবে তখন সে এই নিয়মগুলো মেনে চলবে কিন্তু এই নিয়ম কুরবানীর সাথে কোন সম্পর্ক থাকে না। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এ কথাটি বলেছেন তাহলে অবশ্যই এই বিষয়ে অনেক গুরুত্ব রয়েছে।
জিলহজ মাসে চুল নখ কাটার হাদীস
আমরা জিলহজ মাসে চুল, নখ কাটার একটি হাদিস সম্পর্কে জেনেছি। চলুন আমরা নিম্নে আরো অনেক হাদীস রয়েছে সেই হাদীসগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যখন বলেন যে একজন যে ব্যক্তি কোরবানি দিবেন সে ব্যক্তি শুধু চুল দাড়ি নখ কোন কিছু কাটতে পারবে না কিন্তু এমনটা না যে তার পরিবারের লোকজনও এগুলো করতে হবে। যে ব্যক্তি কুরবানী দিবে সে ব্যক্তি শুধু এই কাজ করবে এর ব্যতীত যে পরিবারের লোকজন রয়েছে তাদেরও কাটা লাগবে এমন কোন ধরনের হাদীস নাই।
অনেক আলেমরা বলে থাকেন যে এ কাজটি করা হলো মুস্তাহাব। আবার অনেক ওলামায়ে কেরামের দল রয়েছে যারা বলেন এ কাজটি করা ওয়াজিব। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নির্দেশনা অনুযায়ী বলা যায় যে এ কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটাতে কোন ধরনের সন্দেহ থাকার প্রয়োজনে আসে না।
যারা কুরবানী দিবেন তাদের জন্য একটি উত্তম কাজ হলো তারা কোন ধরনের পশম থেকে শুরু করে শরীরের কোন কিছুই কাটা ঠিক হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি কুরবানী না দিচ্ছেন। আপনার যখন কোরবানি দেওয়া শেষ হয়ে যাবে তখন এগুলো কাটা আপনার জন্য জায়েজ।
চুল নখ কাটার নিয়ম
আপনি যদি একজন মুসলমান ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে আপনার নিয়মিত নখ কাটা হলো সুন্নত। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নখ কাটার সম্পর্কে কোন ধরনের শিক্ষা দেন নাই। অনেক ধরনের গ্রন্থ রয়েছে যেগুলোতে বলা হয়েছে যে এ নখ থেকে শুরু করে ওই লোক পর্যন্ত কাটতে হবে বা এই দিক থেকে শুরু করে ওই দিক পর্যন্ত কাটতে হবে বা কাটার অনেক ধরনের ফজিলত রয়েছে বা বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো সব কিছুই যখন যোগ আস্তে আস্তে পরিবর্তন হচ্ছে ঠিক তেমনি নিয়ম ও পরিবর্তন হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ কোরবানির গরুর বয়স
আপনার যদি হাত পায়ের নখ বড় হয় বা আপনার অবাঞ্ছিত পশম বড় হয় তাহলে আপনার কাটা সুন্নত। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে ইসলামে নবীদের পন্থা রয়েছে পাঁচটি যেগুলো হল নখ কাটা, গোপ ছোট করা, খাতনা দেওয়া, অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা, আপনার শরীরে হাতের নিচে বগলের লোমগুলো কেটে ফেলা।
হাদিস নং ২৯২। আবার অন্যদিকে হাদীসে আছে যে, ফিরাত হলো দশটি। এই দশটি ফেরাতের মধ্যে নখ কাটা ও রয়েছে। আপনার শরীরের অবাঞ্ছিত লোম ৪০ দিনের মধ্যে কাটতে হবে।
নাহলে গোনার দিকে হিসেবে কাজ করবে। এই সম্পর্কে সাহাবী আনাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেছেন হাতের নখ কাটা, গোপ ছোট করা অবাঞ্ছিত লোম কাটা এগুলোর একটি নির্দিষ্ট সময় ছিল। হাদীস ২৫৮।
ইসলামে নখ কাটার দিন
ইসলামের দিক দিয়ে বলা যায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকা হলো ঈমানের অঙ্গ। আপনার যদি হাত পায়ের নখ বড় হয় তাহলে অবশ্যই কাটতে হবে। আপনি যদি একজন ঈমানদার ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলেও আপনার নখ বড় হলে কাটতে হবে কিন্তু এমন না যে আর কোন জায়গায় লেখা আছে যে হারানো এই দিনে কাটা লাগবে। একজন ব্যক্তি সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে হাত পায়ের নখ বড় হয়ে যায় আপনি যদি চান তাহলে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে আপনি হাত পায়ের নখ কেটে নিতে পারেন।
আবার ৪০ দিনের মধ্যে আপনার শরীরে অবাঞ্চিত লোমগুলো কেটে ফেলতে হবে। হাদীসে রয়েছে ইমাম রহমতউল্লাহ এই সংক্রান্ত সব হাদীস ব্যাখ্যা করেছেন চুল নখ কাটা সুন্নত। কিন্তু আপনি যদি ৪০ দিনের মধ্যেও অবাচিত লোমগুলো না কেটে ফেলেন তাহলে আপনি পবিত্র থাকবেন না।
নখ কাটার নিষিদ্ধ সময়
আপনার যদি নিয়মিত নক বড় হয় তাহলে আপনার নিয়ম অনুযায়ী নখ কাটা সুন্নত। নখ কাটার জন্য এমন কোন নির্ধারিত সময় বা নিয়ম নেই সম্পর্কে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কোন ধরনের শিক্ষা দেয় নি। আপনি আপনার হাতের বা পায়ের নখ দেখলে বুঝতে পারবেন যে নখ বড় হলে উপযুক্ত সময় কেটে ফেলতে হবে। গা হাত-পা পরিষ্কার রাখা এবং নিজে পরিষ্কার থাকা হলো ঈমানের অঙ্গ।
আপনি যদি প্রতি সপ্তাহে একবার করে চুল নখ কাটেন তাহলে মুস্তাহাব হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু কোরবানির সময় আপনার কোরবানি দেওয়ার আগে চুল নখ এগুলো কোন কিছুর কাটা যাবে না। এ সময় নিষিদ্ধ করা রয়েছে।
নখ কাটার পর গোসল করতে হয় কিনা
ইসলামের চুল কাটার দিন
আপনি কোন দিন চুল কাটবেন বা কোন পদ্ধতিতে চুল কাটবেন এগুলো কোন হাদীস দ্বারা বলা হয় নাই। হাদীসের নাম করে সমাজে কিছু সংক্রান্ত বিষয় প্রচলিত রয়েছে। অর্থাৎ বলা যায় সেই বিষয়ে বিশ্বাস করা অথবা আমল করা এটা বৈধ হিসেবে ধরা যাবে না। অনেকে বলে যে বুধবার অথবা শনিবার কোনভাবেই চুল কাটা যাবে না কিন্তু এইগুলো কোন হাদীসেই নেই। এগুলো সব কিছু বানিয়ে বলা হয়েছে এবং কুসংস্কার হিসেবেও ধরা যায়।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার উপায়
শনিবার অথবা বুধবারে যদি আপনি চুল কাটেন তাহলে অনেকে বলতে পারে যে আপনার বিপদ আসতে পারে বা কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে কিন্তু এগুলো সব কিছুই সংস্কার হিসেবে পড়তে হবে কারণ কোন ধরনের হাদীস নেই এই সম্পর্কে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url