অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা - অংশীদারি চুক্তিপত্র দলিল

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করব অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা- অংশীদারি চুক্তিপত্র দলিল সম্পর্কে। দুই বা ততোধিক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত ব্যবসায়ীকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। ব্যবসায়ের সার্বিক বিষয়বস্তু যে দলিলে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে অংশীদারদের চুক্তিপত্র বলা হয়। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা দেখব।অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা তে কি কি উল্লেখ থাকে সে সম্পর্কে জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন।

চুক্তি হলো অংশীদারি ব্যবসার মূল ভিত্তি।চুক্তিপত্র,অংশীদারের ব্যবসায়ের অংশীদারদের মধ্যকার সম্পর্ক নির্ধারণ করে। চুক্তিপত্রে ব্যবসায় পরিচালনার বিভিন্ন বিষয়বস্তু উল্লেখ করা থাকে। তাই অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা দেখতে চাইলে আজকের আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন।

ভূমিকা:অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা

আপনারা অনেকেই জানতে চান অংশীদারি ব্যবসায় কি কি বিষয়বস্তু উল্লেখ থাকে।সাধারণত অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র,লিখিত, নিবন্ধিত,অনিবন্ধিত ও মৌখিক হতে পারে। চুক্তি অনুযায়ী অংশীদারগণ ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ করে ব্যবসা পরিচালনা ও লাভ লোকসান বন্টন করে থাকে।


নিচে এ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা

ডিলারশিপ ব্যবসায় হচ্ছে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পণ্য, একটি নির্দিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি হিসাবে পাইকারি বা খুচরা বাজারে বিক্রয় করা। কোন কোম্পানির ডিলারশিপ নেওয়া মানে হল ঐ কোম্পানির পণ্য ঐ নির্দিষ্ট এলাকায় বন্টন বিপনণসহ যাবতীয় দায়িত্ব পালন করা। যিনি এই দায়িত্ব পালন করে তাকে ডিলার বলা হয়। ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা নিচে দেওয়া হল:
                                             পরম করুণাময় আল্লাহর নামে
                                                     ডিলার চুক্তিপত্র
অত্র চুক্তিনামা অদ্য ০৬/১০/২০২৩ তারিখে নিম্নলিখিত পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সম্পাদিত হলো।
প্রথম পক্ষ
নাম:মো: আক্কাস আলী। জন্ম তারিখ ০৫/০৯/১৯৯০ পিতা:মোঃ আব্দুল হক,মাতা: জামেনা বেগম।
স্থায়ী ঠিকানা:রাশিয়াডাঙ্গা,রাজশাহী কোর্ট,রাজশাহী। জাতীয়তা:বাংলাদেশী,ধর্ম:ইসলাম।
দ্বিতীয় পক্ষ
নাম:মো: মোমিন হোসেন। জন্মতারিখ: ০৯/০৭/১৯৯৭। পিতা:মো:জামাল হোসেন,মাতা:আখতারী বেগম। স্থায়ী ঠিকানা: রাজশাহী কোর্ট, রাজশাহী।
জনাব,
অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে মিরপুরি লিমিটেড ভালো কোয়ালিটির চা পাতা বাজারজাত করে আসছে। আমাদের সরবরাহককৃত চা দিন দিন অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যারা প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চার পছন্দ করেন তাদের কাছে এইটা খুবই পছন্দের
চুক্তির শর্তাবলী
  • কমপক্ষে ১ হাজার টি চায়ের প্যাকেট গ্রহণ করতে হবে
  • অর্ডারকৃত চা পাতার অগ্রিম পরিশোধ করতে হবে
  • বিক্রিত পণ্য ফেরত নেওয়া হয় না
  • বিক্রয় লক্ষ্যের ১৫ ভাগ পণ্য মজুদ থাকা অবস্থায় আবার নতুন করে অর্ডার করতে হবে।
  • উপরিক্ত কোন শর্ত ভঙ্গ করলে কোন নোটিশ ছাড়াই চুক্তি বাতিল করা হবে।
প্রথম পক্ষের স্বাক্ষর:

দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর:

সাক্ষীগণের স্বাক্ষর:

অংশীদারি চুক্তিপত্র দলিল

অংশীদারি ব্যবসায় কমপক্ষে দুইজন এবং সর্বোচ্চ বিশজন অংশীদার নিয়ে গঠিত হয়। অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি হচ্ছে চুক্তি। অংশীদারের ব্যবসায়িক চুক্তি পত্রে ব্যবসায়ের বিভিন্ন দিক উল্লেখ থাকে। 

চুক্তি অনুযায়ী অংশীদাররা মূলধন সরবরাহ করেন,উত্তোলন করে্ন,এবং ব্যবসায়ের সার্বিক দিক পরিচালনা করেন। অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তিপত্র দলিল এ এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করা থাকে। এবং এই চুক্তিপত্র দলিল অনুযায়ী ব্যবসায় পরিচালিত হয়।

অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা

নিচে অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা:
প্রথমে আপনাকে জানতে হবে অংশীদারি চুক্তিপত্র কত টাকার দলিল বা স্ট্যাম্পে করতে হবে। বাংলাদেশের বর্তমান আইন অনুযায়ী অংশীদারি চুক্তিপত্র ২০০০ টাকার স্ট্যাম্পে করতে হয় কিন্তু অনেক সময় অনেকেই ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পের চুক্তি নামা করে থাকেন যা বৈধ নয়। 


চুক্তিপত্র তৈরি করার পর সকল অংশীদারকে সেখানে স্বাক্ষর করতে হবে এবং অংশীদারি চুক্তিপত্র নিবন্ধন করার জন্য রেজিস্টার অফ জয়েন্ট স্টক কর্তৃক তা নিবন্ধন করতে হবে।
চুক্তিপত্র নিবন্ধন করার পর ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হবে এবং তারপর ব্যবসায় শুরু করতে হবে।
নিচে অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা দেওয়া হল:
প্রথম পক্ষ
নামঃ আকাশ চৌধুরী
পিতাঃ সিরাজুল ইসলাম
মাতাঃ আফিয়া বেগম
ঠিকানাঃ রাজশাহী কোট,রাজশাহী
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
পেশাঃ চাকরি
দ্বিতীয় পক্ষ
নামঃ সাগর হোসেন
পিতাঃ জামাত আলী
মাতাঃ ফিরোজা বেগম
ঠিকানাঃ কাঠালবাড়িয়া,রাজশাহী কোট,রাজশাহী
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
পেশাঃ ব্যবসা
তৃতীয় পক্ষ
নামঃ সাকিব হাসান
পিতাঃ দুলাল হোসেন
মাতাঃ নাজমা বেগম
ঠিকানাঃ কাশিয়ারাঙ্গা, রাজশাহী কোর্ট, রাজশাহী 
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
পেশাঃ শিক্ষকতা
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে অংশীদারি চুক্তিপত্র লিখতে শুরু করিলাম।
আমরা উপরে উল্লেখিত কক্ষপণ,আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছি যে 'গাজী স মিল এন্ড টিম্বার'নামে ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য নিম্নোক্ত শর্তাবলী পালন করার লক্ষে যৌথ ব্যবসায়িক চুক্তিনামা সম্পাদন করিলাম।
শর্ত সমূহ
  • উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য অফিস বা জায়গা আমাদের অংশীদারগণের মধ্যে আলা-আলোচনার মাধ্যমে পছন্দ করে নেওয়া হবে।
  • বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি মোহাম্মদপুর ঠিকানায় আরম্ভ হবে এবং পরবর্তীতে পরিবর্তন করা হতে পারে। ব্যবসায়ের ধরন হবে ফার্নিচার তৈরি করা।
  • ব্যবসায়ের সকল পক্ষ একে অন্যের প্রতি গভীর বিশ্বাস,আস্থা স্থাপন করবে। একে অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
  • ব্যবসায়ের বিনিয়োগ ও লাভ লোকসান ১:২:১ হারে বন্টন করা হবে।
  • ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যাংক একাউন্ট এবং সকল হিসাব তিনজনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
  • ব্যবসায় হতে উত্তোলনের ক্ষেত্রে যে কোন একজনের স্বাক্ষর থাকা বাধ্যতামূলক করা হলো।
  • ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠানের ভাড়া,বেতন ,ভাতা সহ অন্যান্য খরচ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে খরচ করা হবে
  • প্রতিষ্ঠানের লোকসান হইলে তা সকল পক্ষগণ সমান হারে বহন করবে।
  • এ ব্যবসায়ের সকল পক্ষই স্বত্বাধিকারী হিসাবে গণ্য হইবে।
আমরা এখানে উপস্থিত সকল অংশীদারগণ,এই যৌথ মালিকানা ব্যবসায়ের চুক্তি পত্রে লিখিত সকল বিষয়বস্তু পাঠ করিয়া এবং এ সকল বিষয়বস্তু সত্য ও সঠিক জানিয়া ইহাতে কোন প্রকার ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ হয় নাই এই মর্মে, দুইজন সাক্ষীব উপস্থিতিতে সজ্ঞানে ব্যবসায়ের চুক্তিপত্রে নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম।
১।
প্রথম অংশীদারের স্বাক্ষর
২।
দ্বিতীয় অংশীদারের স্বাক্ষর
৩।
তৃতীয় অংশীদারের স্বাক্ষর
অত্র অংশীদারি চুক্তিপত্র তিনজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে সম্পাদিত হয়েছে।

পার্টনারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা

পার্টনারশিপ ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। চুক্তিপত্র ছাড়া পার্টনারশিপ ব্যবসায়ী পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই সুষ্ঠুভাবে পার্টনারশিপ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য চুক্তিপত্র করা আবশ্যক। সেজন্য আপনাকে পার্টনারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্রের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে হবে।

অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের বিষয়বস্তু

অংশীদারি ব্যবসায়ীর চুক্তি পত্রে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর উল্লেখ থাকে।যেমন:
  • মূলধন
  • উত্তোলন
  • বেতন
  • মূলধনের সুদ
  • উত্তোলনের সুদ
  • লাভ লোকসান আবন্টন
  • নতুন অংশীদারের ভর্তি
  • ব্যবসায় পরিচালনার নিয়ম ইত্যাদি।

ফরমেট দেখে নিজে নিজেই তৈরি করে ফেলুন পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল।

                                                বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
                                                     অংশীদারি চুক্তিপত্র
প্রথম পক্ষ
নামঃ আকাশ চৌধুরী
পিতাঃ সিরাজুল ইসলাম
মাতাঃ আফিয়া বেগম
ঠিকানাঃ রাজশাহী কোট,রাজশাহী
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
পেশাঃ চাকরি
দ্বিতীয় পক্ষ
নামঃ সাগর হোসেন
পিতাঃ জামাত আলী
মাতাঃ ফিরোজা বেগম
ঠিকানাঃ কাঠালবাড়িয়া,রাজশাহী কোট,রাজশাহী
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
পেশাঃ ব্যবসা
তৃতীয় পক্ষ
নামঃ সাকিব হাসান
পিতাঃ দুলাল হোসেন
মাতাঃ নাজমা বেগম
ঠিকানাঃ কাশিয়ারাঙ্গা, রাজশাহী কোর্ট, রাজশাহী 
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
পেশাঃ শিক্ষকতা
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে অংশীদারি চুক্তিপত্র লিখতে শুরু করিলাম।
আমরা উপরে উল্লেখিত কক্ষপণ,আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছি যে 'গাজী স মিল এন্ড টিম্বার'নামে ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য নিম্নোক্ত শর্তাবলী পালন করার লক্ষে যৌথ ব্যবসায়িক চুক্তিনামা সম্পাদন করিলাম।

শেষ কথা

আজকের এ আর্টিকেলে আমরা অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা, ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা,পার্টনারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা,অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি পত্রের বিষয়বস্তু,অংশীদারি চুক্তিপত্র দলিল সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনাদের উপকারে আসবে।
পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url