চিকিৎসা সেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩ - চিকিৎসা শাস্ত্রে বিজ্ঞান রচনা
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আজকের পোষ্টের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩ ও চিকিৎসা শাস্ত্রে বিজ্ঞান রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চিকিৎসা সেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩ সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই আজকের পোষ্টের মাধ্যমে তাদেরকে সম্পূর্ণ ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
জরুরি চিকিৎসা সেবা নাম্বার
যেকোনো পরিস্থিতিতে বর্তমানে সবচেয়ে জরুরি নাম্বার হলো ৯৯৯। এটি দেশের জাতীয় জরুরী সেবার নম্বর। যেকোনো দুর্ঘটনার সম্মুখ হলে জরুরি সেবা পেতে দেশের যেকোন স্থান থেকে যে কেউ এই নাম্বারে ফোন দিতে পারেন। পুলিশের অধীনে এই কল সেন্টার পরিচালিত হয়।
এই নম্বরে ফোন করে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স সেবা ইত্যাদি সকল সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। দিনরাত 24 ঘন্টা এই কল সেন্টার খোলা থাকে অথবা চালু থাকে। যে কোন ফোন থেকে বিনামূল্যে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা যায়। ফোন করে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃচোখের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
দুর্ঘটনা হলে ঘটনাস্থলের নাম, সড়ক নম্বর, বাড়ি নম্বর, উল্লেখ রাখতে হবে। অপরাধীকে দেখে থাকলে তার চেহারার বর্ণনা যতটা মনে থাকে ঠিক ততটাই দিতে হবে। ৯৯৯ এ কল দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক কথা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অযথা ৯৯৯ এ ফোন করে আপনার নাম্বার ব্লক করে দিবে।
ফ্রি ডাক্তার সেবা
স্বাস্থ্য সেবা কোন বিশেষ সুবিধা নয়, এটি মানুষের অধিকার। এখন বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবা হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। শারীরিক অসুস্থতা প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা বয়স্ক ও মাতৃকালীন স্বাস্থ্যসেবা বা নবজাতকের যত্ন এবং পরামর্শর জন্য কয়েক মিনিটের ভিডিও কল করে পেশাদার চিকিৎসকের সাথে খুবই সহজ ভাবে মুঠোফোন ব্যবহার করে কথা বলা যায়।
১৬২৬৩ এ নাম্বারে ডায়াল করে ফ্রিতে যে কোন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য খুব সহজেই নিতে পারি। ১৬২৬৩ এই নাম্বারে ডায়াল করে ডাক্তারের কোন এক্সট্রা ফিস দিতে হয় না।
এখানে শুধু ফোনের যে সাধারণ বিল আসে সেটা খরচ হবে। অতীতে এই ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যেত না বিদায় সাধারণ মানুষের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এসে মানুষের সেবাই সব সময় নিয়ে যেতে থাকে এবং বিনামূল্যে।
সরকারি স্বাস্থ্য সেবা
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবায় সরকারি হাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাত এবং বিভিন্ন এনজিও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি খাতে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা এবং ব্যষ্টিক এবং সামস্টিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে সেইসব প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবার উপর অনেক কাজ করেছে।
সরকার সকল জনগণের বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মৌলিক স্বাস্থ্য সুবিধাসমূহ চিহ্নিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়নে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।
চিকিৎসা সেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩ সরকারি ভাবে আরো অনেক সেবা দিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও প্রজনন স্বাস্থ্যসহ পরিবার পরিকল্পনার বর্তমান অবস্থা বিশেষ করে নারী, শিশু ও প্রবীণদের অর্থনৈতিক মুক্তি, এবং শারীরিক, সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক সুস্থতার ক্ষেত্রে টেকসই উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যার খাত সেক্টর গুলো মূল লক্ষ্য।
অনলাইন স্বাস্থ্য সেবা
বাংলাদেশের সেরা অনলাইন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে অথবা বিভিন্ন লিংক দিয়ে আমরা অনলাইনে সার্চ করে থাকি। বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশের মানুষ হাসপাতালে কিংবা ব্যক্তিগত চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারে না।
এছাড়াও সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় যা ইমারজেন্সি রোগের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুনঃকর্টান ওষুধের কাজ কি - কর্টান 10 এর কাজ কি
ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে সেবা গ্রহণ করতে পারে না এর অন্যতম দুটি কারণ হলো উচ্চমাত্রার চিকিৎসা ফি এবং এবং জায়গার দূরত্ব। এমন অনেক ডাক্তার রয়েছে যারা ১০ মিনিটের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে কিন্তু সেই ১০ মিনিটের চিকিৎসার বদলে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা ফি নিয়ে থাকেন।
ফ্রী অনলাইন ডাক্তার
স্বাস্থ্য বাতায়ন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত একটি সেবা ব্যবস্থা। এই স্বাস্থ্য বাতায়নের হেল্পলাইন ১৬২৬৩ এ কল করে আপনি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সকল বিষয়ে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারবেন। এই হেল্পলাইন দিনরাত ২৪ ঘন্টা আপনার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কথা শোনার জন্য নিয়োজিত।
এছাড়াও স্বাস্থ্য বাতায়নের থেকে আপনি সরকারি হাসপাতাল, ডাক্তারের তথ্য কিংবা স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক অন্যান্য যেকোনো সকল তথ্য এবং ফোন নাম্বার পেতে পারেন। স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ নিতে ১৬২৬৩ এ নাম্বারে এখনই কল করুন।
১৬২৬৩ ডায়াল করার পর আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ এর জন্য সরাসরি ডাক্তারের সাথে কথা বলতে শূন্য ক্লিক করুন। আপনি যদি আপনার নিকটস্থ কোন সরকারি হাসপাতাল ও ডাক্তারের স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন তথ্য নিতে চান তাহলে এক চাপুন এবং আপনি যদি সরকারি এবং বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স এর তথ্য জানতে চান তাহলে ২ চাপুন। স্বাস্থ্য বাতায়ন কোন বাণিজ্যিক সেবা নয় এবং এতে ফোন করতে ফোনের স্বাভাবিক বিলের অতিরিক্ত বিল নেওয়া হয় না।
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সহ মহাখালী, ঢাকা এর অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমূহের ব্যবহার অনুপোযোগী সকল ধরনের যানবাহনের কনডেমনেশনের ঘোষণা করার লক্ষ্যে যানবাহনের চিহ্নিত করার জন্য অত্র অধিদপ্তরের ২-৬-২০২২ ইং তারিখ হতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রশাসন ৫ বিদিত ২০১৯ থেকে ২৩৬৮ নং অফিস স্বাক্ষর মূলে গঠিত কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চারটি অভিদপ্তর যথাক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, নার্সিং সেবা পরিদপ্তর ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর নাগরিকের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। চিকিৎসা সেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩ এ সম্পর্কে উপরোক্তার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার
বিজ্ঞানের যে কয়টি শাখা দ্রুত উন্নত হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞান তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বের যেকোনো স্থান এ বসেই এখন চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণ এ ডাক্তাররা আর অনুমানের ওপর নির্ভর করে না।
একজন রোগী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে শরীরকে শরীরকে সূক্ষ্মভাবে পরীক্ষা করা এবং রোগ নির্ণয় করার জরুরী। আর এই কাজটি খুব সহজেই করা যায় প্রযুক্তির সাহায্যে। প্রাপ্ত তথ্যসমূহ ভবিষ্যতে প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ডাটাবেজে খুব সহজে সংরক্ষণ করা যায়।
যখন কোন ওষুধের প্রেসক্রিপশন করতে হয় সেটা তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে সঠিক করে করা যায়। চিকিৎসার প্রয়োজনীয় নতুন নতুন যন্ত্রপাতি ও তৈরি করা হচ্ছে। দেশের কোটি কোটি শিশুকে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি সম্ভব হয় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের নিখুঁত পরিকল্পনা আর কৃতকার্যের মাধ্যমে।
তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে অন্য মাত্রার গবেষণা ও সম্ভব হচ্ছে। পূর্বে শুধু রোগের উপসর্গ কামন হতো এখন সত্যিকারের রোগের কারণটি খুঁজে বের করে সেটিকে অপসারণ করা যায়।
শুধু এটাই নয় এখন যে রকম সব মানুষ একই ওষুধ খায় ভবিষ্যতে প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা করে তার শরীর উপযোগী ওষুধ তৈরি করা হবে। এমনকি ভবিষ্যতের হাজার মাইল দূর থেকেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সার্জনরা রোগের অপারেশন করতে পারবে। তাই বলা যায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অপব্যবহার
আসলে কথায় আছে না যে, নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা, বিষয়টা তেমনই হয়ে দাঁড়িয়েছে মানে কোন কিছু প্রয়োগ করতে গেলে যদি কোন ভুল হয় তাহলে সেই ভুলটা প্রয়োগ করি অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। বর্তমানে অপবিজ্ঞানকেও বিজ্ঞান বলে চালানো হচ্ছে। বিজ্ঞান চর্চার প্রসারের ফলে প্রাচীন অন্ধ সংস্কার ক্রমশ দূর হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু যার যাচ্ছে তার তার স্থানে নতুন জঞ্জাল কিছু কিছু জমে যাচ্ছে। ধর্মের বুলি নিয়ে যেমন নপধর্ম সৃষ্টি হয় ঠিক তেমনি বিজ্ঞানের বুলি নিয়ে অপবিজ্ঞান গড়ে উঠছে। সকল দেশের বিজ্ঞানের নামে অনেক নতুন প্রশান্তি সাধারণের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে।
মানুষের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মানসিক অত্যাচার করে থাকে। ওষুধের দাম বাড়ানো এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে সেই কথা বলে সাধারণ জনগণের থেকে অধিক মূল্য দাবি করে থাকে।
আগে যখন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ছিল না তখন এই ধরনের দাবিও তারা করতে পারত না কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির যখন আমাদের অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন আমাদেরকে সেটা ব্যবহার করতে হয়। সেজন্য আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে সব সময় সঠিকটা শেখা, সঠিক টা জানা এবং সাবধান থাকতে হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনা
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান বলে করা যাবে না। বর্তমানে আমরা যেই শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার পুরোটাই বিজ্ঞানের অবদান। পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত খাতা কলম থেকে শুরু করে বর্তমানে ডিজিটাল ক্লাসরুম পর্যন্ত সবটাই বিজ্ঞানের অবদান।
বর্তমানে যেকোনো বিষয় শেখার জন্য প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করতে হয় না। ঘরে বসে বসে খুব সহজেই যে কোন কিছু মুঠোফোন, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে শেখা যায়। বর্তমানে এমন বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি এসেছে যার মাধ্যমে খুব সহজে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
আরো পড়ুনঃবার বার জ্বর হলে করণীয়-জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে শিক্ষার আওতা ব্যাপক তর হচ্ছে। এখন এক দেশ থেকে অন্য দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা যাই। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লাস করা, পরীক্ষা দেওয়া ইত্যাদি সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা যায়।
তাছাড়াও বিদেশে উৎস শিক্ষার জন্য ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট যুগান্তকারী প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আনছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানে বিদেশী শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জন করছে বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষা এর ক্ষেত্রে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url