হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক আপনি কি হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে  হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার এইসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই  হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার  কি  জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার


নিচে আপনাদের জন্য শরীর ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার, হাত পা শিরশির করার কারণ এবং হাত পা ঝিনঝিন করলে কি করণীয় ইত্যাদি বিষয়গুলো ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। সেখান থেকে আপনি হাত পা শিরশির করার কারণ ও প্রতিকার জেনে নিতে পারবেন।

ভূমিকাঃ হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার

হাত পা শিরশির করার কারণে কিংবা হাত পা অবশ হওয়ার কারণে নার্ভ ড্যামেজ হতে পারে। যদি আপনার নায়কের সমস্যা হয় কিংবা ক্ষতি হয় আপনার হাতে পায়ে ঘাড়ে তাহলে আপনার অসাড়তা কিংবা ঝিমঝিম হতে পারে। যখন আপনার এরকম লাগবে তখন আপনার দুর্বলতা, পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া ব্যথা করা এরকম হয়ে আপনার স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক সময় আর্থ্রাইটিসের কারণেও হাত পা ঝিমঝিম হওয়ার কারণ হয়ে থাকে বিশেষ করে এটা যখন অনেক তীব্র আকারের ব্যথা হয় তখন স্বাভাবিক চলাচলে হস্তক্ষেপ করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাতের ব্যথার কারণেও ফুলে যাওয়া এবং জয়েন্টে নড়াচাড়া করার সময় ব্যাথা এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য আপনাকে নিজের শরীরের প্রতি অনেক যত্নশীল হতে হবে। কাজকর্ম করার সময় সচেতনতার সাথে করতে হবে।

শরীর ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার

শরীর ঝিমঝিম কেন করে এজন্য আমাদের শরীর ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার সকলেরই জানা উচিত। অনেক সময় দেখা যায় শোয়ার কারণে রাতে এক দিকে একভাবে শুয়ে থাকলে ওই পাশের হাত পা ঝিন ঝিন বা অবশ অনুপিত হতে পারে। তখন যদি আপনি কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন তা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। কারণ রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হওয়ার কারণে এরকম সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় একভাবে হাতে যদি কোন জিনিস ধরে রাখা হয় তাহলেও হাত ঝিমঝিম করতে পারে।
  • কিছু রোগের কারণে যেমন কারপাল টানেল নিউরন ডিজিজ এসবের কারণে হয়ে থাকে।
  • ঘুমানো জায়গা যদি নরম থাকে।
  • আমাদের হাত পায়ের রক্ত চলাচল যদি স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে।
  • ভিটামিনের অভাব হলে।
  • অনেক সময় নিউরাল জিয়ার এই সমস্যার কারণে স্নায়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শরীরের হাত পা এবং শরীরের অন্য সব অংশে তীব্র জ্বালা ও ব্যথা হতে পারে।
  • মধ্যপন করার অনেক খারাপ দিক আছে তার মধ্যে হচ্ছে হাত পা ঝিরি করা অত্যাধিক পরিমাণের মদ্যপান করলে শরীরের কোষগুলো অসাড় হয়ে যেতে শুরু করে।
  • থাইরয়েড এর কারণেও শরীর ঝিমঝিম করার সমস্যা হতে পারে।
অনেকে এগুলোকে প্রথম অবস্থায় গুরুত্ব দিতে চাই না। যার ফলে এই রোগটি মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং তখন এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হতে পারে এজন্য এসব উপসর্গ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আশা করি শরীর ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার জানতে পেরেছেন।

হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ

আমাদের শরীরের সমস্যা থাকার কারণে আমাদেরকে হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ জানা উচিত।আপনি যদি অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করেন তাহলে আপনার কাছে মনে হতে পারে যে আপনি হঠাৎ করে হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। আপনার হাত-পা ভারী লাগছে এবং উঠে দাঁড়াতে যে ঝিঝি ধরেছে। কারণ আমাদের হাত-পায়ে পেশিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে স্নায়ু তার ওপর চাপ পড়লেই এরকম হাত-পা অসার হয়ে যায়। অনেকক্ষণ বসে থাকার কারণে হাত পায়ের অংশ রক্ত জমাট বেঁচে যেতে পারে। 
তখন এই ঝিঝির অনুভূতি হয়ে যায়। শারীরিক দুর্বলতার কোনরকম সংক্রমণ থাকলেও এমন হতে পারে যেমন ডায়াবেটিস, থাইরয়েড স্ট্রোকের মতো সমস্যা থাকলে এরকম হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে না হওয়ার কারণে আমাদের শিরা গুলোর উপরে প্রভাব পড়ে এবং অক্সিজেন ঠিকমতো পৌঁছায় না তখনই শরীরে রিমঝিম বা অবশ্যই হয়ে যায়।

হাত পা ঝিনঝিন করলে কি করনীয়

আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন না করার ফলে শিরা গুলোর উপরে প্রভাব ফেলে যার কারণে শরীর-অসার হয়ে পড়তে পারে। হাত-পা ঝিনঝিন করা খুবই একটা অস্বস্তিকর এর ফলে হাত পা অবশ হয়ে আসে এবং ব্যথা করে আর আস্তে আস্তে সমস্যাটা আরো জটিল হতে থাকে। এই সমস্যা বেশি হলে অনেক সময় রোগী পায়ের অনুভূতিও কমে যায় এবং রোগী স্যান্ডেল খোলার পরও তাদের পাইনা। পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি এর অন্যতম কারণ হলো ডাইবেটিস, থাইরয়েড, কিডনি সমস্যা ভিটামিনের অভাবে ইঞ্জিন এর সমস্যা দেখা দেয়।
এজন্য আমাদেরকে ভালো করে শরীর পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে হবে। এজন্য রোগীকে অবশ্যই প্রথমে কোন ওষুধ আছে কিনা দেখে নিতে হবে যার কারণে রোগীর কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা যদি রোগী সে ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দিতে হবে। যদি কোন রোগীর ডায়াবেটিস থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং সম্ভব হলে ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে। ভিটামিনের অভাবে যদি এরকম সমস্যা দেখা দেয় তাহলে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং ওষুধের মাধ্যমে এই অভাব পূরণ করতে হবে।

হাত ঝিনঝিন এর ব্যায়াম

শরীরের কোথাও যদি অনেকক্ষণ ভেবে বসার পর শরীর অবশ লাগে তাহলে ওই জায়গাতে খুব কষ্ট হয় বিজ্ঞানের ভাষায় একে পিন পিন কাটা বলে। আমাদের শরীরের শিরার কাজ অক্সিজেন বিহীন রক্তকে সংগ্রহ করে হৃদপিন্ডে পৌঁছানো। আমাদের অনেক বেশি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় পেশিগুলোকে ভালোভাবে কাজ করানোর জন্য এবং রক্তনালির নার্ ভ গুলোকে প্রসারিত করার জন্য যার ফলে রক্ত বেশি বেশি অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে। রক্তনালীতে থাকা নার্ভ কিংবা ওই অংশে থাকা নার্ভ গুলো সংবেদনশীল হয়ে রক্ত পৌঁছাতে বাধা পাই। দেখা যায় আপনি যদি অনেকক্ষণ কম্পিউটার কিবোর্ড এ কাজ করেন কিংবা অনেকক্ষণ ফোন নিয়ে টিপাটিপি করেন তাহলে কবজিতে ব্যথা হতে পারে কারণ অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারণে।
  • স্নায়ুকে চাপমুক্ত রাখুনঃ আপনি যদি আপনার স্নায়ুকে চাপ থেকে দূরে রাখুন তাহলে আপনার জিদি অনুভূতি চলে যাবে। এজন্য আপনাকে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকা অথবা বাহুতে ভর দিয়ে ঘুমানো এরকম করা যাবে না কারণ শারীরিক ভঙ্গের কারণে স্নায়ুতে চাপ পড়ে এরকম সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  • মাথাকে এপাশ ওপাশ ঘোরানঃ আপনার যখন হাতে ঝিঝি ধরবে তখন আপনি মাথায় এপাশ ওপাশ করে ঘোরাবেন এতে আপনার অস্বস্তিকার অনুভব চলে যাবে এবং আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে চাপ কমে যাবে।

হাত ঝিনঝিন করার ঔষধ

রোগীর ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে রোগী আগে থেকে কোন ওষুধ সেবন করছে কিনা যার কারণে রোগীর পেরি ফেরাল নিউরোপ্যাথি সমস্যা হতে পারে। যদি এ ধরনের কোনো ওষুধ রোগী খায় তাহলে সেটি বন্ধ করে দিতে হবে এবং ডায়াবেটিস থাকলে ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় ভিটামিনের কারণে রোগীর এরকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইজন্য প্রিগ্রাবালীন ও এমিট্রি পটাইলিন এই ওষুধ হাত-পা ঝিনঝিন করলে এইসব ওষুধ খেলে তা কমিয়ে দেয়। পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি রোগীর জন্য ডাক্তার সাধারণত এ ওষুধ গুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য খেতে দেয়। আশা করি হাত ঝিমঝিম করার ঔষধ কি জানতে পেরেছেন।

হাত পা ঝিনঝিন করার চিকিৎসা

হাতে পায়ে ঝিঝি ধরা নিয়ে আমরা কমবেশি সবাই এ বিষয়টার উপরে পরিচিত। যদি আমাদের হাত পায়ের উপরে লম্বা চাপ পড়ে তখন আমাদের এই ঝিনঝিন সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে। দেখা যায় দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকলে এবং হাত পায়ের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে তখন এই সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যাদের এই সমস্যা অনেক দিন ধরে হয় তাদের সাময়িক কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই অসড়তার ঘটনা বেশি ঘটতে পারে। এরকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আবার শরীরে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরে ঝিঝি ধরে থাকে। অতিরিক্ত মদ্যপান করার ফলে এবং পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার ফলেও এরকম সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য এরকম সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

হাত ঝিনঝিন করলে কি করতে হবে

হাতে ঝিনঝিন করলে তার অনেক লক্ষণ হতে পারে। যদি আপনার নার্ভ ড্যামেজ হয় তাহলেও এরকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার স্নায়ুর ক্ষতি হলে আপনার পা, বাহু এবং ঘাড় দিয়ে চলে তা অসাড় হয়ে যাবে এবং শারীরিক দুর্বলতা থাকলেও বেশি শক্ত কিংবা ব্যাথা অনুভব হতে পারে। আর্থ্রাইটিসের কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে এজন্য দেখা যায় শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শরীরের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। আবার দেখা যায় হাত পায়ের খিচুনির থেকেও স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে।
এজন্য আপনার হাত-পা ঝিমঝিম করার উপায় হিসেবে আপনাকে শরীরের যত্ন নিতে হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা খুব বেশি দেখা যায় এজন্য বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকা যাবে না। হাঁটা চলাফেরা করতে হবে। আপনি শরীরের ব্যায়ামও করতে পারেন। ব্যায়াম করার ফলে আপনার শরীরের অনেক উপকার হবে। আপনি যদি কম্পিউটারে কাজ করে থাকেন একটানা কখনোই কাজ করবেন না মাঝে মাঝে আপনি বিশ্রাম নিবেন এই বিশ্রাম নেওয়ার ফলে আপনার হাত ঝিমঝিম করলে তা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশে কমে যাবে। এভাবে আপনি হাত ঝিনঝিন করা থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

পায়ের আঙ্গুলের অসাড়তা নিয়ে কখন চিন্তিত হওয়া উচিত

হাত এবং পায়ের আঙ্গুল বিভিন্ন কারণে অসারতা দেখা দিতে পারে। দেখা যায় অনেক সময় বসে থাকার কারণে কিংবা ডায়াবেটিসের কারণে এরকম সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় অনেক মানুষ বেশি পরিশ্রমের ফলে কিংবা অনেক সময় ব্যায়াম করার ফলে এরকম সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যখন দেখবেন আপনার অনেকক্ষণ কাজ করার পরে এরকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিংবা অল্প কাজ করার পরও এরকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাহলে আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। যদি দেখেন যে কাজ করার পরেও এরকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিন্তু এটা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে কোনভাবেই কমছে না তবে আপনাকে এটি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

শেষ কথাঃ হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার

হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কিত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবহুল এতক্ষণে জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে পায়ের আঙ্গুলের অসারতা নিয়ে কখন চিন্তিত হওয়া উচিত, হাত ঝিনঝিন করলে কি করতে হবে, হাত পা ঝিনঝিন করার চিকিৎসা, হাত ঝিনঝিন করার ওষুধ জানতে পেরেছেন।

আশাকরি এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করেন তাহলে তারাও হাত পা ঝিমঝিম করার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে পারবে।


পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url